E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

করোনার বিরুদ্ধে বেশি কার্যকর মিশ্র টিকা

২০২১ জুন ২৬ ১৫:৫২:৪৪
করোনার বিরুদ্ধে বেশি কার্যকর মিশ্র টিকা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : করোনার প্রকোপ ঠেকাতে মিশ্র টিকার ওপর জোর দিচ্ছে একাধিক দেশ। ভারতেও সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস (এইমস) প্রধান রণদীপ গুলেরিয়া। তিনি জানিয়েছেন, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে মিশ্র টিকা ব্যবহার করা যেতেই পারে। তবে এ নিয়ে আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা প্রয়োজন। সাম্প্রতিক সময়ে অনেক দেশেই মিশ্র টিকা ব্যবহার হচ্ছে। ভারতও একই পথে হাঁটতে চাইছে।

করোনার ডেল্টা এবং ডেল্টা প্লাস ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। সেই সঙ্গে করোনার তৃতীয় ঢেউ আঘাত হানতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন চিকিৎসকরা। এতেই মিশ্র টিকা ব্যবহারের বিষয়ে প্রশ্ন করছেন অনেকেই। গুলেরিয়া বলেন, প্রাথমিক পরীক্ষায় মিশ্র টিকা ব্যবহারে সুফলের কথা উঠে এসেছে। তবে এক্ষেত্রে আরও তথ্য জানা প্রয়োজন। কোন দু’টি মিশ্রণ কার্যকরী হতে পারে, তা নিয়ে গবেষণা হওয়া প্রয়োজন। তবে হ্যাঁ, মিশ্র টিকা কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা বেশ জোরালোই।

ভারতে করোনার ডেল্টা এবং ডেল্টা প্লাস প্রজাতি নিয়ে উদ্বেগের অন্যতম কারণ হিসেবে দুই টিকার মধ্যবর্তী বর্ধিত ব্যবধানও দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত মাসেই কেন্দ্রীয় সরকার দুই টিকার ব্যবধান বাড়িয়ে ১২ থেকে ১৬ সপ্তাহ করেছে, আগে যা ছয় থেকে আট সপ্তাহ ছিল। কোভিশিল্ড এবং কোভ্যাক্সিন, দুই টিকার ক্ষেত্রেই এই নিয়ম প্রযোজ্য বলে জানিয়েছে কেন্দ্র।

এইমস প্রধান গুলেরিয়াও এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। যারা একটি মাত্র টিকা নিয়েছেন, করোনার ডেল্টা প্রজাতির বিরুদ্ধে তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যথেষ্ট নাও হতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, একটি টিকা নিলে করোনার বিরুদ্ধে ৩৩ শতাংশ নিরাপত্তা পাওয়া যায়। দু’টি টিকার ক্ষেত্রে ৯০ শতাংশ নিরাপত্তা পাওয়া যায়। গুলেরিয়ার কথায়, এটা সত্যিই উদ্বেগের যে, ডেল্টা প্রজাতির বিরুদ্ধে প্রাথমিক টাকাকরণ হয়তো যথেষ্ট নয়। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যত দ্রুত বুস্টার ডোজ দেওয়া যায়, ততই ভালো।

মহামারি ঠেকাতে জার্মান সরকার ইতোমধ্যেই মিশ্র টিকার ব্যবহার শুরু করেছে। দেশটির চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মেরকেল নিজে প্রথমে অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি টিকা নিয়েছেন। পরবর্তীতে দ্বিতীয় টিকার ক্ষেত্রে তিনি মডার্নার তৈরি টিকা বেছে নিয়েছেন। অপরদিকে, যুক্তরাষ্ট্রে ২৮ দিনের ব্যবধানে ফাইজার এবং মডার্নার মিশ্র টিকা দেওয়া হচ্ছে। ব্রিটেনেও বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে মিশ্র টিকায় ছাড় দেওয়া হয়েছে।

এদিকে, চারদিন পর ভারতে দৈনিক সংক্রমণ আবারও ৫০ হাজারের নিচে নেমে এসেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ৪৮ হাজার ৬৯৮ জন। এ নিয়ে দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩ কোটি ১ লাখ ৮৩ হাজার ১৪৩। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ১৮৩ জনের। এখন পর্যন্ত দেশটিতে মোট প্রাণহানি ঘটেছে ৩ লাখ ৯৪ হাজার ৪৯৩ জনের।

একদিন আগেই ভারতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫১ হাজার ৬৬৭। একই সময়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ১ হাজার ৩২৯ জন।

শুক্রবার দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ১১ রাজ্যে ৪৮ জনের দেহে ডেলটা প্লাস ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশই মহারাষ্ট্রে। সেখানে ২০ জনের দেহে নতুন এই ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি পাওয়া গেছে।

তামিলনাড়ুতে ৯ জন, মধ্যপ্রদেশে ৭ জন, কেরালায় তিনজন, পাঞ্জাব ও গুজরাটে দু'জন করে এবং অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা, রাজস্থান, কর্নাটক এবং জম্মুতে একজন করে ডেলটা প্লাস ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হয়েছে।

(ওএস/এসপি/জুন ২৬, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

১৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test