রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি কর্তৃক অন্যায় ও ষড়যন্ত্র মূলকভাবে  একজনকে বাদ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে শ্যামনগর উপজেলার ব্রক্ষ্মশাসন গ্রামের বক্স মল্লিকের ছলে মোঃ ছুন্নত আলী মল্লিক এই অভিযোগ করেন। 

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। আমার মুক্তিযোদ্ধা সনদ নং-ম-১১৬৮২৩, গজেট নং-১৫৬৩, লাল বার্তা নং-০৪০৪০৪০১৩৬ এবং ভারতীয় পরিচয়পত্র নং-১২৪। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ভাষনে উদ্বুদ্ধ হয়ে জন্মভূমিকে রক্ষা করতে নিজের জীবন বাজি রেখে আমি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে ভারতের পিফা ক্যাম্পে ১৭ দিন ধরে থ্রী নট থ্রী রাইফেলের ট্রেনিং শেষ করি। সেখান থেকে ভারতের টাকিতে মেজর জলিল, ক্যাপ্টেন নূরুল হুদা এবং মাজৎহফুজ আলম বেগের সান্নিধ্য লাভ করি। ওই সময় সাতক্ষীরার সৈয়দ কামল বক্ত সাকি, ইস্যুমিয়া বচি সাহেব, শ্যামনগরের অধ্যক্ষ আব্দুল হক, চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ, সাবেক এমপি ফজুলল হক, সাতক্ষীরার কাশেমপুরের সাকাত আলী. খুলনার মোস্তফা, ক্যাম্প কমান্ডার এম,সি,এ,এম,এ বারী একই সাথে মুক্তিযোদ্ধা ট্রেনিং নিয়েছি। আমি ২০১০ সালের ১ মার্চ থেকে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পেয়ে আসছি।

ছুন্নত আলী মল্লিক আরো বলেন, আমি গত ৭ ফেব্র“য়ারি শ্যামনগর উপজেলা পরিষদের নতুন ভবনে যাচাই বাছাই কমিটির সামেন হাজির হই। কমিটরি সদস্য ছিলেন, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার দেবীরঞ্জন মণ্ডল, ভারপ্রাপ্ত ডেপুটি কমান্ডার গাজী আবুল হোসেন, এমপি’র প্রতিনিধি মুজিব বাহিনীর সদস্য মুজিবর রহমান, শ্যামনগর ইউএনও আ,ন,ম আবুজার গিফারী ও সমাজ সেবা কর্মকর্তা সহিদুর রহামন। যুদ্ধের সময় আমার সহপাঠি বীর মুক্তিযোদ্ধা নিজদেবপুর গ্রামের মোঃ আব্দুল মাজেদ সরদার একই গ্রামের মোঃ আবু বক্কার গাজী, আস্তাখালী গ্রামের গোলাম রহমান সরদার কমিটির সদস্যদের সামনে আমারে পক্ষে স্বাক্ষী দেয় যে, আমি একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। কিন্তু যাচাই বাছাই কমিটির সদস্যরা আমার মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক কাগজপত্র, প্রমাণ পত্র কিছুই না দেখে এবং স্বাক্ষীদের কথা না শুনে আমাকে মুক্তিযোদ্ধা তালিকা থেকে বাদ দিয়েছেন।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, শ্যামনগর থানার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার দেবীরঞ্জন মণ্ডল এর সাথে তার ব্যক্তিগত দ্বন্দ থাকায় পরিকল্পিতভাবে আমাকে তালিকা থেকে বাদ দিয়েছেন। ইতিপূর্বে টাকার বিনিময় অবৈধ পন্থায় সাতক্ষীরা-৪ আসনের জামায়াতের এমপি গাজী নজরুলসহ একাধিক ভূয়া ব্যক্তিকে মুক্তিযোদ্ধার তালিকা ভুক্ত করলে আমি মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী বরাবর ২০১৭ সালের ১৫ অক্টোবর দেবীরঞ্জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেই। সেই আক্রোশে থানার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার দেবীরঞ্জন মন্ডল যাচাই বাছাই কমিটির অন্যান্য সদস্যদের সাথে অবৈধ যোগসাজসে ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে তাকে মুক্তিযোদ্ধার তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে। তিনি এঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

তিনি সঠিকভাবে যাচাই বাছাই পূর্বক মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় তার নাম অর্ন্তভুক্তির জন্য মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী, প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

(আরকে/এসপি/ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২১)