লালমনিরহাট প্রতিনিধি : লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলায় ‘পরিমল জয়ধর’ চরিত্রধারী অভিযুক্ত কলেজ শিক্ষককে অবশেষে সাময়িক বহিষ্কার করেছে কলেজ প্রশাসন। এর আগে ওই শিক্ষক কোচিং সেন্টারের আঁড়ালে অসংখ্য ছাত্রীর সর্বনাশ করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) ভাইরাল হয়।

সোমবার রাতে হাতীবান্ধা আলিমুদ্দিন কলেজ অধ্যক্ষ অনার্স শাখার ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক মেহেদি হাসান সুমনকে সাময়িক বহিষ্কার করেন। হাতীবান্ধা আলিমুদ্দিন কলেজ অধ্যক্ষ সারওয়ার হায়াত খান সাময়িক বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এ বিষয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মশিউর রহমান মামুন বলেন, ওই শিক্ষককে আইনের আওতায় এনে তাকে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হোক। তা না হলে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।

এর আগে গত শনিবার রাতে হঠাৎ করেই ফেসবুকে ছাত্রীর সঙ্গে কিছু আপত্তিকর ছবি ভেসে উঠে। ওই আপত্তিকর ছবি আলিমুদ্দিন কলেজের শিক্ষক মেহেদি হাসান সুমনের বলে স্থানীয়দের অনেকেই অভিযোগ করেন।

এ ঘটনায় ওই শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়ে কলেজের অধ্যক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে উপজেলা ছাত্রলীগ ও কলেজ ছাত্রদল। পরে বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেয় কলেজ প্রশাসন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হাতীবান্ধা আলিমুদ্দিন কলেজের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক মেহেদি হাসান সুমন। কলেজের পাশে একটি রুম ভাড়া নিয়ে কোচিং সেন্টার দিয়ে প্রাইভেট টিউশনি করান। ওখানেই টিউশনির আড়ালে অসংখ্য ছাত্রীকে বিভিন্ন সময়ে ধর্ষণ করেন সুমন। তবে এ নিয়ে লোকলজ্জায় কোনো ছাত্রী এখনও অভিযোগ করেনি।

মূলত গত শনিবার হাতীবান্ধা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মশিউর রহমান মামুনের দেয়া একটি ফেসবুক স্ট্যাটাসে এলাকাজুড়ে সমালোচনার ঝড় শুরু হয়।

তিনি তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেন, ‘হাতীবান্ধার আলোচিত ‘পরিমল জয়ধর’ ওরফে সুমন মাস্টারের মুখোশ আর উম্মোচিত হচ্ছে না। কারণ ওই গুন্ডা মাস্টারের লালসার শিকার হওয়া কলেজছাত্রীরা আত্মসন্মানের ভয়ে এ ব্যাপারে মুখ খুলছে না। তবে ভুক্তভোগী কেউ যদি আমাদের (ছাত্রলীগ) কাছে সাহায্য চায়, তার পরিচয় গোপন রেখে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।’

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শিক্ষকের অপকর্ম ধরতে ওই কোচিং সেন্টারের কক্ষে গোপন ক্যামেরা লাগানো হয়। ওই ক্যামেরায় ভিডিও ধারণ করে পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপত্তিকর ছবি প্রকাশ করা হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একজন বলেন, ছাত্রীদের সঙ্গে ওই শিক্ষকের অশ্লীল ভিডিওচিত্র এক পক্ষের হাতে আছে। আর সেই পক্ষ মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বিষয়টি চেপে যাচ্ছেন।

(ওএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৭)