আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে বরিশালের আগৈলঝাড়ায় সরকারের বই উৎসবে স্কুলের ধার্যকৃত টাকা ছাড়া মিলছে না মাধ্যমিক স্তরের বিনা মূল্যের পাঠ্য পুস্তক। স্কুলে থেকে খালি হাতে ফিরতে হয়েছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের। এ ঘটনায় চরম ক্ষুব্ধ এলাকার দরিদ্র অভিভাবরা। 

উপজেলার পয়সা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ এর অষ্টম শ্রেণির ৩৩ রোল নং এর শিক্ষার্থী আঁখি আক্তারের মা সাফিয়া বেগম অভিযোগে জানান, স্কুলের ধার্যকৃত টাকা দিতে না পারায় তার মেয়ে স্কুলে গিয়ে বই না পেয়ে খালি হাতে বাড়ি ফিরে এসেছে।

একই অভিযোগ করেছেন অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ২৫ রোল ধারী চাঁদনী আক্তারের অভিভাবক রাবেয়া বেগম। এভাবে অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে টাকা না দেয়ায় বই না পাওয়া শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের।

ওই স্কুল এ্যান্ড স্কুল সূত্রে জানা গেছে, ষষ্ঠ শ্রেণিতে স্কুলের ধার্যকৃত ফি ধরা হয়েছে ৪৯০ টাকা, সপ্তম শ্রেণিতে ৫২০টাকা, অষ্টম শ্রেণিতে ৫৭০টাকা, নবম শ্রেণিতে ৬২০টাকা ও দশম শ্রেণিতে ৪৭০টাকা। সূত্র মতে, ফরম ক্রয়, ভর্তি ফি, পরীক্ষা ফি, ক্রিড়া, ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী, সরস্বতী পূঁজা, পাঠাগার ও প্রতি বিষয়ে ফেল বাবদ এসব টাকা স্কুল কর্তৃপক্ষ ধার্য করেছে।

তবে বই উৎসবের দিন স্কুলের ধার্যকৃত টাকা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় না করার জন্য সরকারী নির্দেশ থাকলেও তা মানছে না স্কুলগুলো।

উপজেলার শ্রীমতি মাতৃমঙ্গল বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার উপস্থিতিতেই স্কুলের ধার্যকৃত টাকা না দেয়ায় শিক্ষার্থীদের বই না পেয়ে খালি হাতে ফিরতে হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন অভিভাবকরা।

কুয়াতিরপাড় গ্রামের খোকন চন্দ্র সমদ্দার অভিযোগে বলেন, তার মেয়ে স্মৃতি সমদ্দার উপজেলা সদরের শ্রীমতি মাতৃমঙ্গল বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণিতে উন্নীত হয়েছে। রোল নং ১৬। চারশ টাকা স্কুলে না দেয়ায় তাকে বই দেয়া হয়নি। বই না পেয়ে খালি হাতে ফিরে তার মেয়ে কাঁদছে।

তিনি আরও জানান, তার মেয়ের মত ওই এলাকার আরও অনেক শিক্ষার্থী বই না পেয়ে খালি হাতে বাড়ি ফিরে কাঁদছে।

তিনি আরও বলেন, স্কুরে যদি টাকা ছাড়া বই না ধেয়, তাহলে তারা আগে জানিয়ে দিলে অবশ্যই টাকা দিয়ে মেয়েকে স্কুলে পাঠাতেন তিনি।

বই বিতরণ উদ্বোধনের পর হাতে গোনা কয়েকজন শিক্ষার্থীকে বই দিয়ে বাকী শিক্ষার্থীদের টাকা ছাড়া বই না দেয়ায় পরের দিন বই দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।

পয়সা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এরকম কোন বিষয় তার জানা নেই। এ প্রসঙ্গে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, বিষয়টি তার জানা নেই। তিনি জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশ্রাফ আহম্মেদ রাসেল বলেন, তিনি বই বিতরণের একটি অনুষ্ঠানে রয়েছেন। সেখান থেকে ফিরে খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।

(টিবি/এসপি/জানুয়ারি ০১, ২০১৮)