আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : আগৈলঝাড়ায় হাসপাতাল প্রধানের অবহেলায় অকালে ঝড়ে গেল এক স্বাস্থ্য কর্মীর প্রাণ। এ ঘটনায় জনমনে চরম ক্ষোভ, উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে ঘটনা তদন্ত পূর্বক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবার। জাতির পিতার নাতি আশিক আবদুল্লাহ’র বিচারের আশ্বাস।

উপজেলার বাকাল ইউনিয়নের কোদালধোয়া গ্রামের রাজবিহারী সরকারের ছেলে ও উপজেলা স্বাস্থ্য সহকারী রামানন্দ সরকার (৪০) ৮ জানুয়ারী রাতে হঠাৎ করে অসুস্থ হওয়ায় চিকিৎসার জন্য তাকে ওই দিন ভোর রাতে আগৈলঝাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে স্বজনেরা।

কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. আব্দুল্লাহ-আল-মামুন তাৎক্ষনিক রোগীকে চিকিৎসা ও ব্যবস্থাপত্র প্রদান করেন। পরদিন ৯ জানুয়ারি রামানন্দ’র অবস্থার অবনতিতে তার স্বজনেরা হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আলতাফ হোসেনকে একাধিকবার জানিয়ে রোগী দেখার অনুরোধ করলেও ডা. আলতাফ হোসেন ওই দিন একবারও রামানন্দর কাছে যাননি বলে অভিযোগ করেন রামানন্দর স্ত্রী সাবেক ইউপি সদস্য ও আওয়ামীলীগ নেত্রী বনিতা সরকার।

সারাদিন রামানন্দ চিকিৎসা বিহীন থেকে রাত ১১টায় ডা. তানভির আহম্মেদ ডিউটিতে এসে রোগির অবস্থা আশংকাজনক দেখে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরণ করেন।

বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালের চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে মৃতর স্বজনেরা জানান, চিকিৎসকেরা তাদের বলেছেন যে, রোগি ভর্তিতে অনেক দেরী হয়ে গেছে। চিকিৎসারত অবস্থায় বুধবার সকাল সাড়ে এগারটায় রামানন্দ মারা যায়। বিকেলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট নাতী ও বরিশাল জেলা আওয়ামীলীগ নেতা সেরনিয়াবাত আশিক আবদুল্লাহ রামানন্দের বাড়ি গিয়ে তার কফিনে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।

এসময় মৃতর পরিবারের স্বজন ও স্থানীযরা তার কাছে ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষ দায়ী চিকিৎসক ডা. আলতাফ হোসেনের বিচার দাবি করেন। আশিক আবদুল্লাহ তাদের বিচারের আশ্বাস প্রদান করেন।

মৃতর স্বজনেরা অভিযোগ করেন, ডা. আলতাফ হোসেন ও নার্সরা রোগির চিকিৎসা করলে বা আগেই বরিশাল প্রেরণ করলে অকালে রামানন্দ’র প্রাণ যেত না।

অভিযুক্ত ডা. আলতাফ হোসেন বলেন, রোগী ভর্তির পর মঙ্গলবার সকল স্বাস্থ্য সহকারীদের নিয়ে তিনি মিটিংএ করছিলেন।

সিভিল সার্জন ডা. মনোয়ার হোসেন জানান, স্বাস্থ্য সহকারি রামানন্দ বরিশাল মেডিকেলে ভর্তির পর তাকে ইউএইচএএফপিও ডা.আলতাফ হোসেন ঘটনা জানিয়েছে। তিনি যখন রামানন্দের খবর নিয়েছেন তখন রামানন্দ মারা গেছেন।

(টিবি/এসপি/জানুয়ারি ১১, ২০১৮)