সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : এক ইউপি সদস্যের বিকাশে পাঠানো টাকা অস্বীকার করার প্রতিবাদ করায় এক যুবদল নেতার নেতৃত্বে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের এক ব্যবসায়িকে পিটিয়ে জখম করা হয়েছে।

এ সময় লুট করা হয় তার কাছে থাকা ৩০ হাজার টাকা ও মালামাল। বৃহষ্পতিবার বিকেল তিনটার দিকে সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার খাজরা হাটে এ ঘটনা ঘটে। আহত ব্যবসায়িকে খুলনার কয়রা উপজেলার জায়গীর মহল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউপি সদস্য মিলন রাণী হরি জানান, রাউতাড়া বিলে পাঁচ বিঘা জমি চিংড়ি ঘের করার জন্য তিনি কয়েক বছর আগে খাজরা ইউনিয়ন যুবদলের সাধারন সম্পাদক ইলিয়াস হোসেনের কাছে ইজারা দেন। ইলিয়াস তাকে যথাসময়ে ইজারার টাকা পরিশোধ না করায় বুধবার সকাল ১১টায় মোবাইল ফোনে ইলিয়াসের কাছে টাকা চান। ইলিয়াস ১০ হাজার টাকা বিকাশে পাঠানোর জন্য তাকে (ইউপি সদস্য) বিকাশে ৫০০ টাকা পাঠাতে বলেন। তিনি তার পরিচিত রাউতাড়া গ্রামের মুদি ব্যবসায়ি সুকুমার ঘোষকে নিয়ে খাজরা বাজারের ব্যবসায়ি ( ফ্লাক্সি লোড ও বিকাশ) মাওলানা রুহুল আমিনের কাছ থেকে ইলিয়াসকে ৫০০ টাকা পাঠান। বিকেল চারটা গড়িয়ে যাওয়ায় টাকা না মেয়ে তিনি বাড়ি ফিরে আসেন।

জায়গীর মহল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আশাশুনি উপজেলার রাউতাড়া গ্রামের সুকুমার ঘোষ (৪০)জানান, মহিলা ইউপি সদস্য মিলন হরি রাণী টাকা না পাওয়া ও বিকাশে পাঠানো টাকাটাও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তার কাছে এসে হতাশা প্রকাশ করেন। তিনি ইলিয়াস হোসেনকে ১০ হাজার টাকা না দিয়ে ৫০০ টাকা নিয়ে অপরাধ করেছেন বলে জানান। এতে ইলিয়াস হোসেন তাকে(সুকুমার) দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। একপর্যায়ে বৃহষ্পতিবার বিকেল তিনটার দিকে তিনি খাজরা হাটে পান সুপারি বিক্রি ও মুদিখানার মাল কিনতে এলে ইলিয়াস হোসেন, ইউনিয়ন মৎস্যজীবী দলের সাধারন সম্পাদক কবীর হোসেন, ইউনিয়ন জাসাসের সভাপতি ইউনুস আলীসহ ১০/১২জন বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠণের নেতা কর্মীরা তাকে চৌকি পিড়ে , লাঠি, কিল ঘুষি মেরে এলাপাতাড়ি পিটিয়ে জখম করে। এ সময় তার কাছে থাকা নগদ ৩০ হাজার টাকা ও ১০ হাজার টাকা মূল্যের পান সুপারি লুট করে তারা।

ইউপি সদস্য বিপ্লব দাস, পান ব্যবসায়ি সমীর ঘোষ, ফল ব্যবসায়ি মনিরুল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম কাজল, খাজরা ব্যবসায়ি সমিতির সভাপতি ফজলুর রহমান ও সাধারন সম্পাদক সাফায়েত আলী জানান, হামলায় আহত সুকুমার ঘোষকে উদ্ধার করে বৃহষ্পতিবার সন্ধ্যায় খুলনার কয়রা উপজেলার জায়গীরমহল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
জায়গীর মহল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক সুজাত আলী জানান, সুকুমার ঘোষের ঘাড়ে ভারী জিনিস দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। এ ছাড়া তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখমের চিহ্ন রয়েছে।

খাজরা বাজারের ব্যবসায়ি মাওলানা রুহুল আমিন জানান, ইউপি সদস্য মিলন রানী হরি বিকাশের মাধ্যমে তার দোকান থেকে সুকুমার ঘোষের উপস্থিতিতে বুধবার ৫০০ টাকা যুবদল নেতা ইলিয়াস হোসেনকে পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এ ব্যাপারে খাজরা ইউনিয়ন যুবদলের সাধারন সম্পাদক ইলিয়াস হোসেন জানান, সুকুমার ঘোষ তার কাছে মোবাইলে চাঁদা চায়। এ নিয়ে তিনি ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ করেন। বসাবসির কথা ছিল বৃহষ্পতিবার সকালে। এ নিয়ে বিকেলে তাদের মধ্যে বচসা হয়েছে। মারপিট ও টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেন।

এ ব্যাপারে আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আহসান হাবিবের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।

(আরকে/এটিআর/জুলাই ০৪, ২০১৪)