আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : জেলার উজিরপুর উপজেলার শিকারপুর ক্যাম্পের কতিপয় পুলিশ সদস্যর বিরুদ্ধে এক সাংবাদিক ও তার কলেজ পড়ুয়া পুত্রকে আটক করে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উল্টো ঘটনাটি ধামাচাঁপা দেয়ার জন্য ক্যাম্প পুলিশ সদস্য মাহবুব শেখ বাদী হয়ে নির্যাতনের শিকার সাংবাদিকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

সরেজমিনে জানা গেছে, শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শিকারপুর বন্দর সংলগ্ন এলাকার গৌরাঙ্গ চক্রবর্তীর বাড়ির পাশে বসে তুচ্ছ ঘটনার জেরধরে স্থানীয় সাংবাদিক শাকিল মাহমুদ বাচ্চুর পুত্র সপ্তম শ্রেণির ছাত্র রাতুলকে (১১) মারধর করে একই এলাকার মিজান বিশ্বাসের পুত্র হৃদয় (১৫)। এ সময় মারামারি থামাতে গিয়ে স্থানীয় মঞ্জু বেগম নামের এক গৃহবধূ আহত হয়। স্কুল ছাত্র রাতুলকে মারধরের খবর শুনে তার বড় ভাই বরিশাল বিএম কলেজের ছাত্র জয় মাহমুদ রাজু ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়।

এরইমধ্যে শিকারপুর ক্যাম্প পুলিশের সদস্য মোঃ ফয়সাল, সুমন হাওলাদার, কাওছার হোসেন ও রাসেল হোসেন ঘটনাস্থলে এসে স্কুল ছাত্র রাতুল তার বড় ভাই রাজু ও হৃদয়কে আটক করে ক্যাম্পে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে কলেজ ছাত্র রাজুর বাবা শিকারপুর বন্দর ব্যবসায়ী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও উজিরপুর রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক শাকিল মাহমুদ বাচ্চু পুলিশ ক্যাম্পে গিয়ে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের কাছে বিষয়টি জানতে চায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ক্যাম্পের দরজা আটকে পুলিশ সদস্য ফয়সাল (কং/১৩১৪), সুমন হাওলাদার (কং/১০৬৯), কাওছার হোসেন (কং/১৩৬৮) ও রাসেল হোসেন (কং/১৪৯১) সাংবাদিক বাচ্চু ও তার কলেজ পড়ুয়া ছেলেকে মারধর করে। মুহুর্তের মধ্যে বিষয়টি ছড়িয়ে পরলে শিকারপুর বাজারের শতাধিক ব্যবসায়ী ও সংবাদকর্মীরা ক্যাম্পের সামনে অবস্থান নিলে পুলিশ সাংবাদিক বাচ্চু ও তার দুই ছেলেকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়।

এ ঘটনায় ব্যবসায়ীরা রবিবার সকালে ক্যাম্প পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনের ঘোষণা করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রকৃত ঘটনা ধামাচাপা দিতে শনিবার রাতে পুলিশ ক্যাম্পের সদস্য মোঃ মাহাবুব শেখ (কং/১৪১৭) বাদী হয়ে উল্টো পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগ এনে সাংবাদিক শাকিল মাহমুদ বাচ্চুর বিরুদ্ধে উজিরপুর মডেল থানায় একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন।

ক্যাম্পের সামনের টেইলার্স ব্যবসায়ী সোহেল আকন জানান, পুলিশের কাছে রাজু ও রাতুলকে আটক করার বিষয়টি জানতে চাওয়ায় ক্যাম্প পুলিশের সদস্যরা বাচ্চু ও তার ছেলেদের মারধর করেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে রবিবার বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনের ঘোষণা করায় পুলিশ রাতেই উল্টো মামলা দায়ের করেছে। ক্যাম্প পুলিশ কর্তৃক এমন ঘটনায় শিকারপুর বন্দরের ব্যবসায়ী, এলাকাবাসী ও সংবাদকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ এবং উত্তেজনা বিরাজ করছে।

(টিবি/এসপি/ফেব্রয়ারি ১১, ২০১৮)