বান্দরবান প্রতিনিধি : বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্তে নতুন করে আরও সৈন্য বাড়িয়েছে মিয়ানমার। শনিবার সকাল থেকে ওই সীমান্তে নতুন করে সৈন্য বাড়ানো হয়।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, শুক্রবার বিকেলে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিপি) ও বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের (বিজিবি) এর মধ্যে ঘণ্টাব্যাপী পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার পরেও তারা শূন্য রেখায় আরও সৈন্য সংখ্যা বাড়িয়েছে। নতুন করে বাংকার তৈরি করছে। এছাড়াও শূন্য রেখায় মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ব্যবহৃত প্রচুর যানবাহনের আনাগোনা দেখা যাচ্ছে।

এদিকে শূন্য রেখায় অবস্থান করা ৬ হাজার রোহিঙ্গা এখনও সেখানেই অবস্থান করছেন। সীমান্তে মিয়ানমারের সৈন্য সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে বিজিবিও সৈন্য সংখ্যা বৃদ্ধি করেছে ।

সীমান্তের শূন্য রেখায় থাকা আব্দুর রহিম, শাহনেওয়াজ ও হাকিম বলেন, আতঙ্কের মধ্যে আছি। গত কয়েকদিন ধরে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছি । আমরা এপার কিংবা ওপারে যেতে পারছি না। সব সময় ভয় কাজ করছে।

ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম জানান, সীমান্ত পরিস্থিতি আগের মতই। মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী নতুন করে শূন্য রেখায় সৈন্য সংখ্যা বৃদ্ধি করেছে ।

তবে এ বিষয়ে বান্দরবানের জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক জানান, বিজিবি তাকে জানিয়েছে সীমান্তের পরিস্থিতি অনেকটাই শান্ত আছে।

বৃহস্পতিবার সকালে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্তে নিরাপত্তা বৃদ্ধি করে মিয়ানমার। বেশ কিছু সামরিক পিকআপ, ট্রাক ও ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বিপুল সংখ্যক বিজিপি সদস্য অবস্থান নেয় শূন্য রেখা থেকে দেড়শ গজ ভেতরে। ফলে রোহিঙ্গাদের মধ্যে তখন আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এছাড়াও মিয়ানমার সেনাবাহিনী শূন্য রেখায় থাকা রোহিঙ্গাদের সরে যাওয়ার জন্য গতকাল মাইকিং করেছিল।

এ পরিস্থিতিতে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত লুইন উ’কে তলব করে তাকে একটি আনুষ্ঠানিক পত্র দেয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

পরে শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টায় নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্তের শূন্য রেখায় মৈত্রী সেতুসংলগ্ন পয়েন্টে বাংলাদেশের ভেতরে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে পৌনে ৫টা পর্যন্ত প্রায় দেড় ঘণ্টার পাতাকা বৈঠকে বাংলাদেশের সাত সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন বিজিবি ৩৪ ব্যাটালিয়নের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মঞ্জুরুল হাসান খান।

আর মিয়ানমারের সাত সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন বিজিপির ১ নম্বর ব্যাটালিয়নের কমান্ডার সুচায়ে হু।

তবে গতকাল রাতেই সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবুল হোসেন বলেছেন, মিয়ানমার আন্তর্জাতিক আইন লংঘন করে সীমান্তের জিরো পয়েন্টে সেনা সমাবেশ করেছে।

(ওএস/এসপি/মার্চ ০৩, ২০১৮)