স্বপন কুমার কুন্ডু, ঈশ্বরদী (পাবনা) : ঈশ্বরদীর লক্ষিকুন্ডা ইউনিয়নের পদ্মার ধূ ধূ বালুচরে কাশবন কেটে বাংলার কৃষক শামীম আহমেদ সেখানে গড়ে তুলেছে কলার বাগান। পুরাতন ঈশ্বরদীর মৃত শহিদুল ইসলামের পুত্র শামীম আহমেদ (কলা শামীম) কৃষি ডিপ্লোমা পাশ দিয়ে চাকুরির পেছনে না ঘুরে কৃষি কাজে মনোনিবেশ করেন। পদ্মার ধূ-ধূ বালুচরে অন্যের ৬৮ বিঘা জমি বাৎসরিক খাজনা নিয়ে কাশবন কেটে সেখানে ফলিয়েছেন কলা গাছ। শামীমের কঠোর পরিশ্রমে বাগানের গাছগুলো দেখতে যেমন সুন্দর পাশাপাশি প্রতিটি গাছে শোভা পাচ্ছে কলার কাঁদ। এখন বালুচরে সবুজের সমারোহ। লক্ষিকুন্ডা ইউনিয়নের এই বালুচরের চারিদিকে তাকালেই এখন চোখ জুড়িয়ে যায়। 

শামীম ২০১২ সালে কৃষি ডিপ্লোমা পাশ করেন। বেশ কিছুদিন চারুরির পেছনে ঘুরে এক রকম ব্যর্থ হয়ে কৃষি কাজে মনোনিবেশ করেন। শামীমের বাবা অনেক আগে থেকেই কলার চাষ করতেন। বর্তমানে তার খামারে ২৫ জন শ্রমিক নিয়মিত ভাবে কাজ করেন। আত্মবিশ্বাস, ধৈর্য্য, মনোবল ও কঠোর পরিশ্রম দিয়ে কাশের বন কেটে কলার চাষ শুরু করেন। শামীমের বাবা একজন প্রান্তিক কৃষক। ১ ভাই ৩ বোন, মা ও বাবা নিয়ে তাদের এই সংসার।

শামীম আহমেদ বলেন, ৬৮ বিঘা জমি খাজনা নিয়ে কলাবাগান গড়ে তুলেছি। এই কাজে ঝুঁকি থাকলেও কঠোর মনোবল নিয়েই পদ্মার চরের কাশবন কেটে সেখানে সবুজের সমারোহ কলাবাগান গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছি। তিনি জানান, বর্তমানে আমার বাগানের প্রতিটি গাছেই রয়েছে কলার কাদি। প্রতি কাদি ৪’শ টাকা দরে পাইকারী বিক্রি হচ্ছে। এই খামার কিছুটা হলেও দেশের মানুষের পুষ্টির চাহিদা মিটানোর সাথে সাথে এলাকার বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

বাংলাদেশ কৃষক উন্নয়ন সোসাইটির সভাপতি ও বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পদক প্রাপ্ত সফল কৃষক ছিদ্দিকুর রহমান কূল ময়েজ বলেন, শামীমের মতো চ্যালেঞ্জ নিয়ে শিক্ষিত যুবকেরা কৃষি কাজে এগিয়ে আসায় ভাল ফল পেয়েছে।

ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুল লতিফ বলেন, শামীমের কলা বাগান পরিদর্শন করে গাছের অবস্থা বেশ ভালো দেখেছি। তাছাড়া কলার বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রতিটি গাছেই কলার কাঁদ ঝুলছে, কলাগাছ দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়। আমাদের কৃষি অফিসের পরামর্শ নিয়ে শামীমের মতো অনেক কৃষকই আজ স্বাবলম্বী ও সফল।

(এসকেকে/এসপি/মার্চ ১১, ২০১৮)