ছাদেকুল ইসলাম রুবেল, গাইবান্ধা : গাইবান্ধা সদর উপজেলার কামারজানী ইউনিয়নের কামারজানী বাজারের নদীর ঘাট থেকে অবৈধভাবে একটি ড্রেজিং মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। ফলে আসন্ন বর্ষা মৌসুমে আবারও কামারজানী বাজার ভাঙনের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা বিষয়টি জানলেও বালু উত্তোলন বন্ধে কেউ উদ্যোগ নেয়নি।গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, কামারজানী ইউনিয়নের গোঘাট গ্রাম রক্ষা করতে ৩ কোটি ২ লাখ ৮ হাজার ৮৭ টাকা ব্যয়ে ৪৩৬ মিটার এবং সুন্দরগঞ্জ উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ শ্রীপুর গ্রাম রক্ষা করতে ৩ কোটি ৮১ হাজার ৩২৬ টাকা ব্যয়ে ৪৩২ মিটার নদীর তীর সংরক্ষণ কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালের ১৪ ডিসেম্বর।কাজ শেষ হবে চলতি বছরের ২৫ জুন। এর মধ্যে গোঘাট এলাকায় এএলএইচ অ্যান্ড আরসি-জেভি ও দক্ষিণ শ্রীপুর গ্রামে ঠিকাদারি কাজ পেয়েছেন বগুড়ার শাহরিয়াল আহমেদ।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চার মাস থেকে কামারজানী বাজারের পূর্ব পাশে নদী থেকে ড্রেজিং মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এই বালু নদীর তীর সংরক্ষণ কাজের জিওব্যাগে ভর্তি করে ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে আসন্ন বর্ষা মৌসুমে নদীতে ভাঙন দেখা দিতে পারে। আর সেটি হলে কামারজানী বাজার ভাঙনের মুখে পড়বে।

বুধবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, কামারজানী ঘাটের সরাসরি পূর্ব পাশে একটি ড্রেজিং মেশিন দিয়ে নদী থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কাজের ঠিকাদার নদী থেকে বালু উত্তোলন করে জিওব্যাগে ভর্তি করে নদীর তীর সংরক্ষণ কাজ সম্পন্ন করছেন।

কামারজানী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম জাকির বলেন, পুরো কাজটিতে কিঞ্চিত পরিমাণে সমস্যা আছে। জিওব্যাগের ব্যবহার কম করতে ঠিকাদার প্রত্যেকটি জিওব্যাগ সম্পূর্ণ বালুভর্তি করছেন। অথচ নিয়মানুযায়ী সেটা করার কথা ছিল না।

এএলএইচ অ্যান্ড আর সি-জেভির ঠিকাদার আব্দুল লতিফ হক্কানী জাগো নিউজকে বলেন, নদী থেকে বালু তুলে কাজ করার কথা। শিডিউলে কি নদী থেকে বালু তুলে কাজ করার কথা বলা আছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যে বালুই হোক সেটা ১ মি.মি. বালু দিয়ে কাজ করা হয়েছে। আর তিন-চারদিন কাজ হবে।কামারজানী বাজারের পূর্বপাশেই ঘাট থেকে কেন বালু তোলা হচ্ছে জানতে চাইলে আব্দুল লতিফ হক্কানী বলেন, চার মাস ধরে নদী থেকে বালু তুলে কাজ করা হচ্ছে। এটা সবাই জানে।

এ বিষয়ে গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, বিষয়টি দেখার জন্য আমাদের একজন লোক সেখানে যাবে। এরপর আমাকে রিপোর্ট দেবে। এতে আমাদের প্রজেক্টের কাজের যদি কোনো ক্ষতি হয় তাহলে আমরা সেখান থেকে বালু তুলতে দেব না। বালু উত্তোলন কাজ বন্ধ করে দেব।

তিনি আরও বলেন, প্রতিটি বালুর বস্তা ২৫০ কেজি করে হতে হবে। ঢাকা থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের টাস্কফোর্সের সদস্যরা এসে কোয়ালিটি এনশিওর করে। এখানেও সেই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে।

(এসআইআর/এসপি/এপ্রিল ০৪, ২০১৮)