বরিশাল প্রতিনিধি : বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটগ্রহণে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএমের ব্যবহার আরও বাড়াচ্ছে নির্বাচন কমিশন। খুলনায় দুটি এবং গাজীপুরে ছয়টির পর দক্ষিণের এই নগরে ইভিএম ব্যবহার হচ্ছে ১০টি কেন্দ্র।

মঙ্গলবার সকালে বরিশালে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মত বিনিময়ে এ কথা জানান নির্বাচন কমিশনের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ। সভায় রিটার্নিং কর্মকর্তা মুজিবুর রহমান ছাড়াও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহায়ক কর্মকর্তারা অংশ নেন।

সচিব বলেন, ‘আমাদের চিন্তাভাবনা রয়েছে বরিশালে ১০টি কেন্দ্রে ইভিএম পদ্বতিতে ভোটগ্রহণ করার। পাশাপাশি ভোট কেন্দ্রে আলোচনা সাপেক্ষে সিসি ক্যামেরা বসানোর চিন্তা ভাবনাও রয়েছে। যে সব কেন্দ্রে আগে থেকে সিসি ক্যামেরা রয়েছে সেগুলো তো থাকবেই।’

বিএনপির আপত্তি থাকলেও নির্বাচন কমিশন ইভিএমে ভোটগ্রহণকে ‍সুবিধাজনক মনে করে। এখানে স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র মেশিনে পাঞ্চ করেই ভোটারের পরিচয় নিশ্চিত করা হয়। ফলে একজনের ভোট অন্য জনের দিয়ে দেয়ার সুযোগ নেই। কেন্দ্র দখলেরও কোনো প্রশ্ন আসে না।

এ কারণে কমিশন ভোটগ্রহণে ইভিএমকে জনপ্রিয় করতে চাইছে আর ধীরে ধীরে এর ব্যবহার বাড়িয়ে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি দূর করতে চাইছে।

আগামী ৩০ ‍জুলাই রাজশাহী ও সিলেটের পাশাপাশি ভোট হবে বরিশালেও। এরই মধ্যে প্রার্থিতা জমা হয়েছে। যাচাই বাছাইয়ে বৈধ প্রার্থীর নামও ঘোষণা করা হয়েছে। তবে এখনও মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সুযোগ আছে আর ৯ জুলাই এই সময়সীমা শেষ হলে বরাদ্দ দেয়া হবে প্রতীক। এরপর শুরু হবে আনুষ্ঠানিক প্রচার।

বরিশালে বৈধ ঘোষিত মেয়র প্রার্থীরা হলেন আওয়ামী লীগের সেরনিয়াবাদ সাদিক আবদুল্লাহ, বিএনপির মজিবর রহমান সরোয়ার, কমিউনিস্ট পার্টির এ কে আজাদ, বাসদের মনীষা চক্রবর্তী, ইসলামী আন্দোলনের ওবায়দুর রহমান মাহবুব এবং খেলাফত মজলিসের এ কে এম মাহবুব আলম।

তবে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় যে সাদিক ও সরোয়ার থাকবেন, এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। আর এরই মধ্যে নগরীতে শুরু হয়ে গেছে ভোটের হিসাব নিকাশ।

ভোটের প্রচার শুরুর ছয় দিন আগে মতবিনিময় সভায় নির্বাচন কমিশন সচিব নির্বাচনে প্রতিটি কেন্দ্রে দল নিরপেক্ষ ও দক্ষ ব্যক্তিদের প্রিজাইডিং ও পোলিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।

পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, প্রতীক বরাদ্দের আগে প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা বন্ধ করে লেভেল প্লেয়িং পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছে।

‘সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সকল ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। কোনো প্রকার অভিযোগ পেলে সেই বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

অন্য এক প্রশ্নে সচিব বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন সবসময় ভালো প্রস্তুতি রাখে, কোন ঘাটতি থাকে না। এবারের সিটি নির্বাচন সুষ্ঠু করার লক্ষে সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়েছে।’

বিএনপি সরকারে না থাকলে বরাবর ভোটে সেনা মোতায়েনের দাবি জানায়। তিন মহানগরে ভোটেও এই দাবি তারা তুলবে-এটা অনেকটা অনুমেয়। তবে নির্বাচন কমিশন স্থানীয় নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের পক্ষে না আর বরিশালেও এর ব্যতিক্রম হবে না বলেও জানান নির্বাচন কমিশন সচিব।

(টিবি/এসপি/জুলাই ০৩, ২০১৮)