লালমনিরহাট প্রতিনিধি : ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে লালমনিরহাটের তিস্তা নদীর পানি বেড়ে বিপদসীমার ১১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে। এতে জেলার পাঁচটি উপজেলা বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। সেই সঙ্গে বন্যায় প্রায় ৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তবে বন্যাকবলিতদের মাঝে খাবার সংকট দেখা দিলেও এখনও ত্রাণ পৌঁছেনি।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা দোয়ানী তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপদসীমার ১১ সেন্টিমিটর ওপর দিয়ে বইছে। তিস্তা ব্যারাজ দোয়ানী পয়েন্টে তিস্তা পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ দশমিক ৭১ সেন্টিমিটার। ব্যারাজ রক্ষার্থে ৪৪টি জলকপাট খুলে পানির প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।

তিস্তার পানি বৃদ্ধির ফলে জেলার পাঁচটি উপজেলার প্রায় ৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। গত তিনদিনে তাদের মাঝে বিশুদ্ধ পানি ও শুকনা খাবার সংকট দেখা দিলেও এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে কোনো ত্রাণ বিতরণ করা হয়নি বলে পানিবন্দি পরিবারগুলো জানায়।

এদিকে, লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক শফিউল আরিফ সদর উপজেলার কুলাঘাট ধরলা নদীর পানিবন্দি এলাকাগুলো পরিদর্শন করেছেন।

তিস্তা নদীতে বন্যা দেখা দেয়ায় লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলা তিস্তা চরবেষ্টিত গ্রামগুলোর বসতঘরে বন্যার পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। হাতীবান্ধা তিস্তা চরের চর গড্ডিমারী, চর ধুবনী, সিংগিমারী, সিন্দুর্না, হলদিবাড়ি, ডাউয়াবাড়ি, বড়খাতা, ফকিরপাড়া আশপাশের কয়েকটি গ্রামে পানি ওঠায় তিনদিন ধরে পানিবন্দি রয়েছে মানুষ।

এদিকে, বন্যার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙছে নদী। গত এক সপ্তাহে জেলায় শতাধিক বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধগুলো।

আদিতমারী উপজেলার কুটিরপাড় বালুর বাঁধের প্রায় দুইশ মিটার নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বাঁধটি রক্ষায় কাজ শুরু করেছে লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্তৃপক্ষ।

ডালিয়া তিস্তা ব্যারাজ সেচ প্রকল্পের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল আলম চৌধুরী বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উজানের ঢলে গত ১৪ ঘণ্টায় বিপদসীমার ১১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পানি।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক (ডিসি) শফিউল আরিফ বলেন, পানিবন্দি পরিবারগুলোর জন্য ত্রাণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধগুলোতে কাজ চলমান রয়েছে। আতঙ্কের কিছু নেই।

(ওএস/এসপি/জুলাই ০৫, ২০১৮)