কক্সবাজার প্রতিনিধি : টেকনাফের লেদা অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা বস্তিতে রোহিঙ্গা যুবককে গুলি করে হত্যার তিনদিনের মাথায় এবার তিন রোহিঙ্গা যুবককে গলাকেটে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা।

কক্সবাজারের টেকনাফের হোয়াইক্যং চাকমারকুলের রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন পাহাড় থেকে সোমবার সকালে রক্তাক্ত অবস্থায় ওই তিন যুবককে উদ্ধার করেছে পুলিশ।

এ ঘটনায় আরো তিনজন নিখোঁজ রয়েছেন বলে দাবি করেছেন আহতরা। তাদের তথ্যের ভিত্তিতে নিখোঁজদের সন্ধানে অভিযান চলছে। তবে কী কারণে বা কারা তাদের হত্যার করতে চেয়েছে তা জানার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ থানার ওসি রনজিত বড়ুয়া।

উদ্ধার হওয়া রোহিঙ্গারা হলেন, বালুখালি ক্যাম্পের সাইদ হোসেনের ছেলে নুর আলম (৪৫), কুতুপালং ডি ব্লকের ৩ নম্বরের জামাল মোস্তাফার ছেলে মো. খালেক (২২) ও কুতুপালং ই-ব্লকের ৩ নম্বরের আবদুল গাফ্ফারের ছেলে মো. আনোয়ার (৩৩)।

এছাড়া আহত খালেকের বাবা জামাল মোস্তফাসহ আরো ৩ জন নিখোঁজ রয়েছে বলে জানিয়েছে তারা।

ওসি রনজিত জানান, চাকমারকুলের পারিয়াপাড়ার পাহাড়ের ভেতর কয়েকজন জখমপ্রাপ্ত যুবক পড়ে আছেন। কাঠুরিয়াদের মাধ্যমে এমন খবর পেয়ে হোয়াইক্যং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (এসআই) দীপংকর কর্মকারসহ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়।

স্থানীয়দের সহযোগিতায় সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পাহাড়ের ভেতর থেকে রোহিঙ্গা তিন যুবককে গলাকাটা অবস্থায় উদ্ধার করে দ্রুত উখিয়ার কুতুপালং এমএসএফ ও মালয়েশিয়া হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ওসি আরো জানান, এসব রোহিঙ্গাকে কে বা কারা হত্যার চেষ্টা করেছে তা এখনো জানা যায়নি। তারা ছাড়া আর কেউ পাহাড়ের ভেতর রয়েছে কিনা তা জানতে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। চিকিৎসার পর তারা আরো একটু স্বাভাবিক হলে মূল ঘটনা জানা যাবে বলে উল্লেখ করেন ওসি।

ওসি রনজিত বলেন, তবে বিশেষ সূত্রে খবর পেয়েছি উখিয়ার বালুখালি ক্যাম্প থেকে রোববার রাত আড়াইটার দিকে তাদের অপহরণ করে হোয়াইক্যং পাহাড়ে আনা হয়। তবে কী কারণে তাদের অপহরণ করা হয়েছিল সেটা জানা সম্ভব হয়নি।

উল্লেখ্য, কক্সবাজারের টেকনাফের লেদা অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা বস্তিতে স্থানীয় দুর্বৃত্তরা বুকে বন্দুক ঠেকিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ভোলান্টিয়ার মো. আবু ইয়াছেরকে (২২) হত্যা করে গত শুক্রবার। তিনি হ্নীলা অনিবন্ধিত লেদা রোহিঙ্গা বস্তির এফ ব্লকের ১৫৬ নম্বর রুমের বাসিন্দা মো. ইসলাম মিয়ার ছেলে ও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ঘটমান অপরাধ কর্মরোধে আন্তর্জাতিক সংস্থা আইওএম’র সহায়তায় গঠিত স্বেচ্ছাসেবী নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ছিলেন।

এ ঘটনার তিনদিনের মাথায় অপর তিনজনকে হত্যার চেষ্টা ও আরো কয়েকজনকে অপহরণের ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।

(ওএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ০৩, ২০১৮)