নওগাঁয় মন্দিরের জায়গা দখল
নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর মহাদেবপুরে শিবকালি মূর্তি ভাংচুর করে মন্দিরের জায়গা জবরদখল করে নিয়েছে স্থানীয় কতিপয় প্রভাবশালী । সোমবার রাতে এ ঘটনায় ৮ জনকে আসামী করে মহাদেবপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার সফাপুর ইউনিয়নের শ্রীনগর গ্রামে।
মঙ্গলবার মহাদেবপুর ইউএনও এবং থানার ওসি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। মন্দিরের জায়গা জবর দখল করায় এলাকায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মাঝে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
জানা গেছে, ওই গ্রামের দেবোত্তর জঞ্জালী কালি মন্দিরের সেবায়েত ভগবান চন্দ্র দাস এ মামলায় অভিযোগ করেন, সিএস খতিয়ানভূক্ত মন্দিরের ২ একর ২৫ শতক সম্পত্তি স্থানীয় ৮ জন প্রভাবশালী ব্যক্তির নেতৃত্বে রবিবার ওই মন্দিরের কালি মূর্তি ভাংচুর করে মন্দিরের জায়গা দখল করে নিয়েছে।
তিনি আরো জানান, ওই মন্দিরের সম্পত্তির বিষয়ে ১৯৯৯ সালের ৩০ মে নওগাঁর সহকারী জজ আদালতে শ্রীনগর গ্রামের কফিল উদ্দিন কবিরাজ, ফয়েজ উদ্দিন সরদার, মতিজান বিবি, বাছের আলী মন্ডল, ফয়েজ উদ্দিন মন্ডল, ছায়েদ আলী, দেলোয়ারা বেওয়া, আবুল কাশেম কবিরাজ ও আকতারুজ্জামানের বিরুদ্ধে ৫৫/৯৯ অ: প্র: নং একটি মামলা দায়ের করা হয়। এ মামলায় বিগত ২০১০ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর আদালত ওই জমি মন্দিরের বলে রায় দেন। রায়ের পর প্রতিবছর মন্দিরের পক্ষে ওই জমিতে ধান লাগালেও প্রতিপক্ষরা রাতের আঁধারে সে ধান কেটে নিয়ে যায়।
এনিয়ে একাধিকবার থানায় বৈঠক হয়েছে। রবিবার সকালে ওই জমিতে মন্দিরের পক্ষে ৭শ’ টি বিভিন্ন প্রজাতির গাছ লাগানো হয়। কিন্তু ওই দিন সন্ধ্যায় প্রতিপক্ষরা গাছগুলি উপড়ে ফেলে দিয়ে সেখানে ধানের চারা রোপণ করে।
এদিকে অভিযোগ রয়েছে, ওই মন্দিরের জমিতে একটি কালি মূর্তি ছিল। প্রতিপক্ষরা ওই কালি মূর্তির সঙ্গে থাকা শিবের মাথা ভেঙ্গে ফেলে প্রতিমাটি সেখান থেকে অন্যত্র ফেলে রাখে। এ ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার সকালে ওই গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের নারী পুরুষরা কয়েকটি ভটভটি যোগে এলাকার এমপি ছলিম উদ্দিন তরফদার সেলিমের গ্রামের বাড়ি উপজেলার আলিপুর গ্রামে গিয়ে এ বিষয়ে তাঁকে অবহিত করেন।
এমপির নির্দেশে মহাদেবপুরের ইউএনও আমিনুর রহমান ও থানার অফিসার ইনচার্জ এ.এইচ এনায়েত উদ্দিন দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এব্যাপারে জবরদখলকারী কফিল উদ্দিন জানান, সিএস খতিয়ানভূক্ত মন্দিরের সেবাইত শ্রী গুণধর মন্ডল ও উদয় সিং নিঃসন্তান অবস্থায় মারা গেলে সে জমি এলাকার জমিদার সিধানন্দ ভট্টাচার্য খাস দখলে নিয়ে তাদের মৌরশের নিকট হস্তান্তর করেন। নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে তারা জেলা জজ আদালতে আপিল দায়ের করেছেন বলেও জানান।
(বিএম/জেএ/জুলাই ১৫, ২০১৪)