লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টার সময় গণপিটুনির শিকার সুমন (৩৫) নামের এক লম্পট অটোরিক্সা চালককে ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান ও জেলা ছাত্রলীগ নেতা ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। রবিবার দিবাগত রাতে উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের বাসাবাড়ী এলাকায় এঘটনা ঘটে। সোমবার দুপুরে এঘটনায় ওই গৃহবধু থানায় মামলার প্রস্তুতি নিয়েছেন।

এলাকাবাসী জানান, ওই এলাকার প্রবাসী স্বামীর অনুপুস্তিতে গৃহবধু রাতে তার ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। রাত ১২ টার দিকে একই এলাকার পল্লী চিকিৎসক মো. বাচ্চুর লম্পট ছেলে সুমন (৩৫) কৌশলে গৃহবধুর ঘরে ঢুকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এসময় গৃহবধুর চিৎকারে বাড়ির লোকজন এসে সুমনকে গণপিটুনি দিয়ে গাছের সাথে বেঁধে রেখে পুলিশে খবর দেয়। কিন্তু পুলিশ আসার আগেই খবর পেয়ে সোনাপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আব্দুলাহ আল মামুন, ইউপি সদস্য জসিম ও বাসাবাড়ী বাজার সমিতির সভাপতি মো. মোবারকসহ তাদের লোকজন নিয়ে লম্পট সুমনকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পরে রাতেই প্যানেল চেয়ারম্যানসহ তারা অজ্ঞাতস্থানে বৈঠক করে নিজেদেরকে ৬০ হাজার টাকা দেওয়ার লিখিত মোছলেকা নিয়ে জরিমানা ধায্য করে লম্পটকে ছেড়ে দেয়। এছাড়াও গত ৮দিন আগে একই ঘটনায় ওই এলাকার আরেক প্রবাসীর স্ত্রীর সাথে অনৈতিক কাজে আটকের পর দুলাল মিয়া নামের এক কাঠমিস্ত্রীকে ৩০ হাজার টাকার বিনিময় ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুল আল মামুনের বিরুদ্ধে। এদিকে গত মাসে ওই এলাকার হুমায়ুন কবির নামে এক ব্যবসায়ীকে ফাঁদে ফেলে ২ লাখ টাকার দাবিতে নন জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে ছেড়ে দেয। এঘটনায় ওই ব্যবসায়ী বাদী হয়ে প্যানেল চেয়ারম্যান মামুনসহ ৭জনকে আসামী করে আদালতে মামলা দায়ের করে। মামলাটি তদন্ত করে সত্যতা পেয়েছেন বলে জানান রায়পুর থানার এএসআই মো. মোহসিন। এঘটনায় উপজেলার চেয়রম্যান ও প্রশাসনকে জানালেও ব্যবস্থা না নেওয়ায় এলাকাবাসীর মাঝে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছেন।
এসবঘটনায় সোনাপুর ইউপি প্যানেল চেয়ারম্যান ও জেলা ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি আব্দুলাহ আল মামুন বলেন, রোববার রাতে গৃহবধুকে ধর্ষণের ঘটনায় এলকাবাসীর হাত থেকে বাচার জন্য সুমনকে নিয়ে আসি। এঘটনার জন্য সুমনকে ৬০ হাজার টাকা দিতে বলা হয়েছে। পরে বৈঠক করে মীমাংসা করা হবে। অন্য ঘটনাগুলো মিথ্যা। কিন্তু ওই ব্যবসায়ি হয়রানি করার জন্য আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
রায়পুর থানার ওসি একেএম মনঞ্জুরুল হক আকন্দ বলেন, খবর পেয়ে ওই গৃহবধুর বাড়িতে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। গৃহবধু মামলা করলে তা আইনী সহযোগিতা দেওয়া হবে। প্যানেল চেয়ারম্যান মামুনসহ ৭জনের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ির দায়ের করা আদালতের মামলাটি তদন্ত চলছে।
(এমআরএস/এএস/জুলাই ২১, ২০১৪)