কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি : কুড়িগ্রামের রাজীবপুর উপজেলার সাজাই সরকার পাড়া গ্রামের এক দিনমজুরের স্কুল পড়ুয়া মেয়ে বখাটের ভয়ে স্কুল যাওয়া ছেড়ে দিয়েছে। মেয়েটি কোদালকাটি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ৭ম শ্রেণির ছাত্রী।

মেয়েটির বাবা কোদালকাটি ইউনিয়নের দিনমজুর সমশের আলী বখাটের বিরুদ্ধে গ্রামের মাতব্বর, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে বিচার দিয়ে কোন প্রতিকার পাননি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
বখাটের বাবা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও আওয়ামী লীগের নেতা হওয়ায় এলাকার কেউ তার বিরুদ্ধে বিচার করার সাহস পাচ্ছে না। দিনমজুর শমসের আলী থানা পুলিশের কাছে অভিযোগ করতে ভয় পাচ্ছেন। সরেজমিন খোঁজনিয়ে জানা যায়, যে স্থানীয় কোদালকাটি ইউপি ১নং ওয়ার্ডের সদস্য ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু তাহের পুত্র স্বপন (২২) ও তার দুই বন্ধ ফারুক হোসেন (২০) ও জুয়েল রানা (২২) প্রায় শমসের আলীর কন্যাকে প্রেম নিবেদন করত।

তার প্রেমে সাড়া না দেয়ায় তাকে বাড়ি থেকে তুলে আনতে গেলে এলাকাবাসীর বাঁধার মুখে পারিয়ে যায়। নির্যাতিত মেয়েটি এ প্রতিনিধিকে জানায় স্বপন ও তার দুই বন্ধু প্রতিদিন স্কুলে যাতায়াতের পথে প্রেমের প্রস্তাব দিত। পথ আগলে ধরে ওড়না টানাটানি করতো। আমি প্রতিবাদ করে তাদের গালিগালাজ করেছি। এর ফলে গত ১৫ জুন স্বপন তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে রাত ১১টার দিকে আমার বাড়িতে এসে আমাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এসময় বাড়ির লোকজনের চিৎকারে গ্রামবাসি এগিয়ে এলে তারা পালিয়ে যায়। তবে স্বপন তার পায়ের সেন্ডেল ও গায়ের শার্ট ফেলে যায় । ওই সময় মেয়েটির বাবা ঢাকায় কাজ করতে গিয়েছিল । খবর পেয়ে বাড়ীতে এসে কোদালকাটি ইউপি চেয়ারম্যানকে বিচার দিলে তিনি থানায় মামলা করার পরামর্শ দেন। কিন্তু সে থানায় যেতে সাহস পাচ্ছে না।

স্বপনের বাবা আবু তাহের বলেন, ‘আমার ছেলেকেই মেয়েটির ভাবি তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে গিয়ে চিৎকার করে নাটক সাজিয়ে আমার নিকট থেকে মোটা অংকের টাকা কামাতে চেয়েছিল । আমার ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ মিথ্যা। কোদালকাটি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আছমত আলী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘ঘটনার পর থেকে মেয়েটি স্কুলে আসা বন্ধ করে দিয়েছে। মেয়েটি ভাল ছাত্রী ছিল। কোদালকাটি ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বলেন, ‘অভিযুক্তরা সরকারি দলের লোক। দলের পাওয়ার দেখায়। আমি কয়েকবার বিচারের উদ্যোগ নিয়েছি কিন্তু তারা কোন সাড়া দেয়নি।
রাজীবপুর থানার ওসি হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘এ বিষয়ে থানায় কেউ অভিযোগ করেনি। তারপরও আমি খোঁজ নিয়ে দেখব।’

(আরএ/জেএ/জুলাই ২৫, ২০১৪)