রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : বকেয়া দোকান ভাড়া না দেওয়ায় দু’ ভাই বোনের বিরুদ্ধে ইট ও হাতুড়ি দিয়ে সহোদরকে পিটিয়ে হত্যার অভিযেঙাগ উঠেছে। বাধা দেওয়ায় পিটিয়ে জখম করা হয় তার স্ত্রী জাহানারাপ বেগমকে (৩৫)। বুধবার বিকেলে সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থানাধীন যুগীপুকুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতের নাম, ইসহাক মোড়ল (৪০)। তিনি সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থানাধীন যুগিপুকুর গ্রামের সৈয়দ আলী মোড়লের ছেলে।

জাহানারা বেগম জানান, তার ননদ সোনাভান বিবিড়ির পাশে জমি কিনে সেখানে ঘরবাড়ি বানানোর পাশাপাশি একটি দোকান ঘর নির্মাণ করে। ওই দোকানঘর তার স্বামী প্রতি মাসে ৪০০ টাকার বিনিময়ে দোকানঘরটি ভাড়া নেয়। দু’ মাস আগে একটি প্রাইভেট কার কেনার কারণে প্রথম মাস ভাড়া দেওয়ার পর দ্বিতীয় মাসে দোকানের ভাড়া দিতে পারেনি ইসহাক। এ কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে দোকান ছেড়ে দিতে বলে ননদ সোনাভান বিবি ও ছোট দেবর ওয়াছিম মোড়ল।

এ নিয়ে বুধবার দুপুরে বড় ভাসুর সলেমান ও মেঝ ভাসুর সুরমান তার স্বামীকে ইছহাককে বুধবার দুপুর দু’ টোর দিকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে দোকান ঘর ছেড়ে দিতে বলে। মালামাল অন্যত্র সরিয়ে নিতে দু’দিন সময় লাগবে একথা বলে দোকানের সামনে দাঁড়ালে ছোট দেবর ওয়াছিম ও ননদ সোনাভান ইট ও হাতুড়ি দিয়ে ইছহাকতে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে জখম করে। মারাত্মক অসুস্থ অবস্থায় তাকে সাতক্ষীরা সদর হাপসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মাহাবুবর রহমান তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

জাহানারা অভিযোগ করে বলেন, তার স্বামীর হত্যার বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে তার শ্বাশুড়ি ও ভাসুরগণ মামলা না করার জন্য তাকে নানাভাবে হুমকি ধামকি দিচ্ছে। মামলা করলে তাকে বাড়ি ছাড়া করা হবে বলে হুমকি দিয়েছে তারা।

যুগিপুকুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র আলী হোসেন জানায়, তার বাবাকে চাচা ও ফুফু ইট ও হাতুড়ি দিয়ে বুকে ও পায়ে আঘাত করে হত্যা করেছে। একই কথা বলেন ইছহাকের ভাই সুরমান বলেন, তার ভাইকে পিটিয়ে মেরেছে সোনাভান ও ওয়াছিম।

প্রত্যক্ষদর্শী জ্যেতি খাতুন ও মাজিদা খাতুন বলেন, এভাবে ভাইকে ভাই বোন মিলে মেরে ফেলবে এটা দেখেও তাদের খারাপ লেগেছে।

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ মাহাবুবর রহমান বলেন, ইছহাকের মাথা, কপাল, ঠোঁট,গলা, ডান চোখ ও বাম পায়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

পাটকেলঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রিয়াজুল ইসলাম বলেন, মৃতের শরীরে একাধিকস্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ময়না তদন্ত প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত মৃত্যুর সঠিক কারণ বলা যাবে না। বৃহষ্পতিবার বিকেল চারটা পর্যন্ত এ নিয়ে থানায় কোন লিখিত অভিযোগ করা হয়নি।

(আরকে/এসপি/আগস্ট ০৮, ২০১৯)