স্টাফ রিপোর্টার : প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেছেন, দেশে অনেক যুবক ফ্রিল্যান্স বা আউটসোর্সিং করে অনেক বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছেন। কিন্তু কোনো রেজিস্ট্রেশন না থাকায় সমাজে তাদের মর্যাদা দেয়া হয় না। বিয়ের বাজার থেকে শুরু করে বাচ্চাকে স্কুলে ভর্তি করতে গিয়ে নানা বিপত্তিতে পড়েন তারা। তবে আশার কথা হচ্ছে, আমরা ফ্রিল্যান্সের রেজিস্ট্রেশন দেয়ার কাজ শেষের দিকে নিয়ে এনেছি। রেজিস্ট্রেশন হয়ে গেলে তাদের আর বিড়ম্বনায় পড়তে হবে না।

শনিবার (২৬ অক্টোবর) রাজধানীর ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) নিজস্ব কার্যালয়ে ‘দ্য রোল অব মিডিয়া ইন প্রমোটিং এসএমই ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি’ শীর্ষক কর্মশালার উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন। ইআরএফ, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন (বিসিক) এবং প্রিজম বাংলাদেশ এ কর্মশালার আয়োজন করে।

ইআরএফের সভাপতি সাইফুল ইসলাম দিলালের সভাপতিত্বে কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন শিল্পসচিব মো. আব্দুল হালিম। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন ইআরএফের সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশেদুল ইসলাম।

সালমান এফ রহমান বলেন, ‘একদিন এক যুবক আমাকে এসে বলল, আমি ফ্রিল্যান্সার। অস্ট্রেলিয়ার এক মহিলার প্রতিষ্ঠানের ওয়েবপেজ ডেভেলপ করে দেয়ার বিনিময়ে তিনি আমাকে ৫০০ ইউএস ডলার পেইড করেছেন। কিন্তু ব্যাংক আমাকে টাকা দিচ্ছে না। ব্যাংক জানতে চায়, ওই মহিলার সঙ্গে আমার সম্পর্ক কী, কেন টাকা পাঠাল-এই সব।’

তিনি আরও বলেন, ‘অন্য আরেক একদিন আমাকে বলল, আমি ফ্রিল্যান্স করে অনেক টাকা আয় করি। কিন্তু বিয়ের কথা বলতে গেলে, মেয়ের বাবা জানতে চায় আমি কী করি। বাসায় বসে অনলাইনে কাজ করি বললে মেয়ের বাবা বিষয়টা বুঝতে পারে না। তাই বিয়ে দিতে চায় না।’ ওই যুবক ফ্রিল্যান্সারদের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি চান।

‘অন্য একজন বলল, ফ্রিল্যান্স করে তিনি মাসে কয়েক লাখ টাকা আয় করেন। তারপরও নিয়মিত আয় নেই-এই অজুহাতে একটি ভালো স্কুল তার ছেলেকে ভর্তি নেয়নি।’

তিনি বলেন, ‘এ ধরনের অনেক অভিযোগ পাওয়ায় আমি আইসিটি প্রতিমন্ত্রীসহ বাংলাদেশ ব্যাংক ও অন্যান্য ব্যাংকের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করলাম। এরপর আমরা ফ্রিল্যান্সারদের একটি ডাটাবেজ করার উদ্যোগ গ্রহণ করি। এ ডাটাবেজের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এ কাজ শেষ হলেই প্রত্যেক ফ্রিল্যান্সারকে রেজিস্ট্রশনের আওতায় আনা হবে। এ রেজিস্ট্রেশন কার্ড থাকলেই তার টাকা উঠাতে ব্যাংক কোনো প্রশ্ন করবে না। এ সনদ দিয়েই তারা অন্যান্য কাজ সহজেই করতে পারবেন।’

‘ডাটাবেজ শুরুর আগে আমাদের ধারণা ছিল দেশে হয়তো দু-এক লাখ ফ্রিল্যান্সার রয়েছে। কিন্তু এ কাজ করতে গিয়ে দেখলাম ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যা ৬ লাখেরও বেশি। এবং এরা প্রতিবছর প্রচুর পরিমাণে রেমিট্যান্স আয় করছে’-যোগ করেন সালমান এফ রহমান।

(ওএস/এসপি/অক্টোবর ২৬, ২০১৯)