লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : মাতৃহত্যার বিচার চায় লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার কাজিরচরের ৩ অবুঝ শিশু। মাকে নির্মম নির্যাতনে হত্যাকারী বাবার ফাঁসি দেখতে চায় তারা। কঠোর শাস্তি চায় হত্যায় সহযোগিতাকারী তাদের দাদা-দাদীর।

বাবার রোশানল থেকে বাঁচতে মায়ের মৃত্যুর প্রত্যক্ষদর্শী এ তিন শিশু এখন আশ্রয় নিয়েছে নানার বাড়িতে। বুধবার স্থানীয় মিতালী বাজারে সাংবাদিকদের কাছে এ আঁকুতি প্রকাশ করেছে তারা।
নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১৩ বছর পূর্বে কাজিরচর গ্রামের মুছা মিয়ার কন্যা মরিয়ম বেগমের (৩০) সঙ্গে বিয়ে হয় একলাশপুর গ্রামের খাঁন বাড়ির সিরাজ মিয়ার পুত্র জাহাঙ্গীর আলম মিন্টুর সঙ্গে। জাহিদ (১০), শরীফ (৮) ও মায়া (৫) নামের তাদের ৩ সন্তান রয়েছে। যৌতুকসহ কারণে-অকারণে প্রায়ই স্বামী ও শশুর-শাশুরী নির্যাতন করতো মরিয়মের ওপর। ২৯ জুন রাতে কথাকাটাকাটির জের ধরে পিটিয়ে মরিয়মকে হত্যা করে স্বামী মিন্টু। সন্তানরা মাকে বাঁচাতে পিতাকে ইট দিয়ে আঘাতও করে। কিন্তু ততক্ষণে মরিয়ম মারা যায়। স্থানীয় প্রভাবশালী একটি চক্রকে ম্যানেজ করে হত্যাকে আত্মহত্যা বলে প্রচার করে মিন্টু ও তাদের লোকজন। মরিয়মের পরিবার থানায় হত্যা মামলা করতে চাইলেও পুলিশ প্রভাবিত হয়ে অপমৃত্যু মামলা নেয়। লুকিয়ে রাখে প্রত্যক্ষদর্শী ৩ সন্তানকে। এলাকাবাসী তাদেরকে উদ্ধার করে নানার বাড়িতে পৌঁছে দেয়।
মায়ের হত্যার প্রত্যক্ষদর্শী জাহিদ (১০) ও শরীফ (৮) কান্নজড়িত কন্ঠে বলেন, দাদা-দাদীর সহযোগিতায় আমার বাবা আমাদের সামনেই আমার মাকে পিটিয়ে ও গলা টিপে হত্যা করে। আমরা মাকে বাঁচাতে গেলে আমাদেরকেও মারধর করে। পরে এঘটনা আড়াল করতে আমাদের তিন ভাইকে ফুফুর বাড়িতে কয়েকদিন আটক করে রাখে। আমরা ঘাতক পিতার ফাঁসি চাই।
রায়পুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. ইউসুফ বলেন, বিয়ের পর থেকেই মেয়েটিকে স্বামী ও শশুর বাড়ির লোকজন অত্যাচার-নির্যাতন করে আসছে বলে তার পরিবারের লোকজন আমাকে জানিয়েছে। শুরু থেকেই মেয়েটি নির্যাতিত। এ নিয়ে কয়েকবার স্থানীয়ভাবে শালিস-দরবারও হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফরিদগঞ্জ থানার এসআই মো. ইব্রাহীম বলেন, ময়না তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী অপমৃত্যুর মামলাটির প্রতিবেদন দেয়া হচ্ছে।
(এমআরএস/এএস/আগস্ট ০৬, ২০১৪)