চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : চেক ডিজঅনার মামলায় চট্টগ্রাম কর্ণফুলী উপজেলার খোয়াজনগর এলাকার তেল ব্যবসায়ী মো. মনির আহম্মদ প্রকাশ তেল মনিরকে ১০ মাসের সাজা দিয়েছেন আদালত। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় বেশ আলোচনা-সমালোচনা চলছে।

বিজ্ঞ আদালত, একই সঙ্গে তাকে পাওনাদারের ১০ লক্ষ টাকা ফেরতদানে অর্থদন্ডে দন্ডিত করেছেন। গত ৯ মার্চ (সোমবার) দুপুরে খুলনার যুগ্ম মহানগর দায়রা জজ আদালত-১ এর বিচারক এ রায় প্রদান করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদি পক্ষের আইনজীবি অ্যাডভোকেট নুরুল আমিন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালে খুলনা জেলার পিবি ক্রস রোডের ব্যবসায়ি আক্তার হোসেন বাবু বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি) থেকে নিলামে একটি ইঞ্জিন ছাড়া ট্রলার ক্রয় করেন। পরে, ২০১৬ সালে ইঞ্জিন ছাড়া ঐ ট্রলারটি ২৫ লক্ষ টাকা দরদামে তেল ব্যবসায়ি মনির আহম¥দের নিকট বিক্রি করেন। বাদি আক্তার হোসেন বাবু বলেন, ঐ সময়ে নগদে ১৫ লক্ষ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ও ১০ লক্ষ টাকার চেক প্রদান করেন ব্যবসায়ি মনির। কিন্তু সময় মতো ব্যাংকে চেকটি জমা প্রদান করলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ হিসাব নম্বরে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় চেকটি ফেরৎ দেন।

পরবর্তীতে চেকটি ব্যাংক থেকে ডিজঅনার হলে ট্রলার বিক্রি করার পাওনা টাকা ফেরত চেয়ে ২০১৮ সালে তিনি আদালতে মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ ২ বছর মামলা বিচারাধীন থাকার পর গত ৯ মার্চ দুপুরে আদালত মামলাটির রায় প্রদান করেন। রায়ে মো. মনির আহম্মদের ১০ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড এবং চেকের সম-পরিমাণ বাদীর অর্থ ফেরত দেয়ার নির্দেশে দন্ডিত করেন। বিচারের সময় আসামী বিবাদী আদালতে গর-হাজির ছিলেন।

বাদি আক্তার হোসেন বাবু জানান, ব্যবসায়ী মনির কে বিক্রি করা খালি ট্রলারটির নাম ছিলো ‘এফবি জুবেরি’। যা পরবর্তীতে ‘এফবি এস এস সী-স্টার-থ্রি’ নামকরণ করে মার্চেন্ট মেরিন ডিপার্টমেন্ট (এমএমডি) ও মেরিন ফিসারিজ ডিপার্টমেন্ট (এমএফডি) দপ্তরে সমুদ্র যাত্রার আবেদন করেন। এতেও বড় প্রতারণা ও আয়ানাবাজি করেন তিনি। দেখানো হয়, ২০১২ সালে হাইকোর্টে রিট করে পারমিশন আদায়কারী ইমরান ও একরাম নামীয় ব্যক্তির জাহাজের লাইসেন্স। এমন খবর পেয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দাখিল করি।

ফলে আবেদনের প্রেক্ষিতে এমএমডি ও এমএফডি জাহাজ দেখতে চাইলে মনির বিপাকে পড়ে। জাহাজ দেখাতে পারে না। একটি দেখালেও তা মাপে গড়মিল। পরে অস্থিত্বহীন আবেদন হিসেবে খারিজ করে তৎকালিন এমএমডির প্রিন্সিপ্যাল অফিসার (পিও) শফিকুল ইসলাম আর অনুমতি দেননি। পরবর্তীতে তারা হাইকোর্টে কনটেম্প পিটিশন করে।

তথ্যমতে, মনির আহম্মদ এর বাড়ি কর্ণফুলীর চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের খোয়াজনগর আজিমপাড়ায়। মেসার্স মনির ওয়েল এজেন্সির মালিক। এলাকায় তিনি তেল মনির হিসেবে পরিচিত।

(ওএস/এসপি/মার্চ ২৪, ২০২০)