অমর চাঁদ গুপ্ত, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) : প্রাইভেট-কোচিং বন্ধের সরকারি নিদের্শনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে কৌশল পাল্টিয়ে স্কুল-কলেজ ব্যাগের বদলে শপিং ব্যাগে বই-খাতা নিয়ে দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে চলছে বিভিন্ন শ্রেণির প্রাইভেট ও কোচিং বাণিজ্য। এসব প্রাইভেট ও কোচিং সেন্টারে মানা হচ্ছে না, সামাজিক শারীরিক দূরত্বসহ স্বাস্থ্যবিধি।

উপজেলার কতিপয় সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কতিপয় শিক্ষকসহ কতিপয় বেকার শিক্ষিত যুবকেরা সরকারি বিধিনিষেধকে উপেক্ষা করে সকাল-দুপুর ও বিকেলে দেদারসে চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের প্রাইভেট ও কোচিং বাণিজ্য। পৌর শহরের বিভিন্ন স্থানে বাসাবাড়ী ভাড়া নিয়ে নামে-বেনামে চালানো হচ্ছে এসব প্রাইভেট ও কোচিং বাণিজ্য। প্রশাসনকে ফাঁকি দিতে কৌশল পাল্টিয়ে শিক্ষার্থীদের স্কুল-কলেজ ব্যাগের বদলের ব্যবহার করা হচ্ছে শপিং ব্যাগ।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ফুলবাড়ী পৌরশহরের সুজাপুর, চৌধুরী মোড় (টিটিরমোড়), প্রফেসরপাড়া, নিমতলা মোড়, জোলাপাড়া, মাদ্রাসা রোড, টেম্পো স্ট্যান্ড, বাংলা স্কুল মোড়সহ বিভিন্ন এলাকায় নিজ নিজ বাসাবাড়ী কিংবা ভাড়ায় নেওয়া বাসা-বাড়ীতে নামে-বেনামে চলছে প্রাইভেট ও কোচিং সেন্টার।

মুঠোফোন কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সাথে যোগাযোগ করে নির্ধারিত সময় সূচি অনুযায়ী চালানো হচ্ছে প্রাইভেট ও কোচিং সেন্টার। ১০ থেকে ২৫ জন শিক্ষার্থী নিয়ে গাদাগাদি চলছে এসব প্রাইভেট ও কোচিং সেন্টারের কার্যক্রম। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদেও প্রতি কড়া নির্দেশনা থাকছে স্কুল ব্যাগের বদলে শপিং ব্যাগে বই-খাতা আনাসহ কেউ জিজ্ঞাসা করলে বলতে হবে বাজার করে আসলাম। শিক্ষার্থীরাও সেই মিথ্যা তথ্যর ওপর ভর করেই কথিত শিক্ষকদের নির্দেশনা অনুযায়ী স্কুল ব্যাগের বদলে ব্যবহার করছে শপিং ব্যাগ।

না প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘করোনাভাইরাসের সংক্রামণে লেখাপড়া প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। বাসায় ঠিক মতো পড়ালেখা হচ্ছে না। স্যাররা বিভিন্ন কৌশলে প্রাইভেট পড়াচ্ছেন জেনে পড়া শুরু করেছি। প্রাইভেট-কোচিংয়ে না পড়লে পাশ করবো কিভাবে?।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন অভিভাবকরা বলেন, বর্তমানে ছেলে-মেয়েদের পড়ালেখা একেবারেই বন্ধ হয়ে গেছে। সারাদিন ফেসবুক আর টিভি নিয়ে ব্যস্ত থাকছে। প্রাইভেট ও কোচিংয়ে না পড়লে পাস করবে সমস্যা হবে বলেই প্রাইভেট ও কোচিংয়ে পাঠাতে হচ্ছে।

একাধিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জানান, সরকারি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে কতিপয় শিক্ষক গোপনে নিজ নিজ বাসা-বাড়িতে প্রাইভেট পড়াচ্ছেন। এতে শিক্ষার্থীরা ঝুঁকিতে পড়ছে। এটা দ্রুত বন্ধের পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শমশের আলী মন্ডল বলেন, আমার হাতে তো ম্যাজিস্ট্রেসী ক্ষমতা নেই, দেখি ইউএনও স্যারের সাথে কথা বলে বিষয়টি বন্ধের ব্যবস্থা নিব।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুস সালাম চৌধুরী বলেন, ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(এডিকে/এসপি/জুন ০৯, ২০২০)