নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর মান্দা উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামের একটি অসহায় পরিবারকে উচ্ছেদ করতে স্থানীয় প্রভাবশালী এক ব্যক্তি ও তার লোকজন একের পর এক তান্ডব চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরিবারটির জমি জবরদখল করে বাড়ি নির্মাণের চেষ্টা, বাড়ি ঘরে হামলা ভাংচুর, পুকুরের মাছ লুট, গাছ-গাছালি কেটে নিয়ে যাওয়াসহ যৌন হয়রানির মতো নির্যাতন চালানো হয়। ধর্ষণেরও চেষ্টা চলানো হয় পরিবারটির এক গৃহবধূকে। এসব ঘটনায় উল্টো পরিবারটির বিরুদ্ধে থানা ও আদালতে ১০টি মামলা দায়ের করেছে ওই প্রভাবশালী।


অভিযোগে উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামের হাফিজুর রহমান জানান, গত দুই বছর ধরে তার পরিবারের ওপর একের পর এক তান্ডব চালিয়ে যাচ্ছে গ্রামের প্রভাবশালী মমতাজ হোসেন ও তার লোকজন। শনিবার রাতে তার পরিবারের সদস্যদের ওপর মমতাজ হোসেনের ছেলে বাবু ও তার লোকজন আবারো হামলা চালিয়ে মারপিট করে। প্রকাশ্যে রাস্তার ওপর তার বাড়ির এক গৃহবধূকে ধরে তার স্তন কামড়ে ক্ষত-বিক্ষত (!) করে। ঘটনার সময় গৃহবধূর শ্বাশুড়ি ছুটে এলে বাবু ও তার লোকজন তাকেও মারপিট করলে গুরুতর জখম হন তিনি। রাতেই আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে ওই সুযোগে মমতাজের লোকজন তাদের বসতবাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ অবস্থায় সোমবার রাতে তাদের পুকুরে বিষ দিয়ে আবারো লক্ষাধিক টাকার মাছ নিধন করা হয়েছে।
ঘটনার শিকার পরিবারটির অভিভাবক হাফিজুর রহমান দাবী করেন, তিনি মামলা দায়ের করতে গেলেও থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি তদন্ত) আব্দুর রাজ্জাক মামলা নিতে পারবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। ‘মমতাজ’ (কথিত প্রভাবশালী) পরিবারের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ থাকলে সরাসরি আদালতে যাবারও পরামর্শ দেন তিনি। হাফিজুর রহমান বলেন, প্রভাবশালী মমতাজ হোসেনের নিকট আত্মীয় (শ্যালক) এক পুলিশ সদস্য রাজশাহী ডিআইজি অফিসে কর্মরত রয়েছেন। তার অদৃশ্য হস্তক্ষেপে মান্দা থানা পুলিশ নিরব অসহায়ত্ব জানিয়ে যাচ্ছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, গত দুই বছর ধরে তাদের ওপর বর্বরোচিত নির্যাতন চালানো হলেও মান্দা থানা পুলিশ অদৃশ্য ক্ষমতার ভয়ে নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। এমনকি প্রভাবশালী মমতাজের ছেলে বাবু, শ্যালক মিঠুন, ভায়রার ছেলে সবুজসহ আফসার ও আজিজুল হক নামে তার দুই অনুসারির বিরুদ্ধে আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকলেও মান্দা থানা পুলিশ তা তামিল করছে না বলেও অভিযোগ করেন তিনি ।
থানার ওসি তদন্ত ইন্সপেক্টর আব্দুর রাজ্জাক হাফিজুর রহমানের মামলা না নেয়ার অভিযোগ স্বীকার করে বলেন, তাকে আদালতের আশ্রয়ে যাবার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। ওয়ারেন্টভূক্ত আসামি গ্রেফতার না করা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, উর্ধ্বতন মহলের নির্দেশে আসামিদের গ্রেফতার করা সম্ভব হচ্ছে না। মামলা না নেয়া প্রসঙ্গেও তিনি একই ইঙ্গিতে অসহায়ত্ব প্রকাশ করেন।
(বিএম/এএস/আগস্ট ১২, ২০১৪)