আগমনী চক্রবর্তী

মহান স্রষ্টা দাতা, গ্রহীতা মোরা মানুষ ;
হাত পেতে নেই অবিরত, প্রতিদানে কঞ্জুস।
পদ্মপাতার টল -মল আয়ু অশনি- সংকেত পিছুটানে ,
কখন ঢলকে পড়বে চিরন্তন সত্য মৃত্যুর কোলে।
জীবনের রঙ্গ -মঞ্চে ভুলে যাই খেয়ালি চলার দিন ।
সব দিন সব ঘটনা রঙ্গিন মহাবিলাসের রঙ্গভূমে ;
রঙের ঝলকানি, এমনি ভাবনা মোদের।
বিলাসিতার অসমভোক্তাই সফলতার দাবিদার
দুগ্ধের সার ননীর প্রত্যাশী
প্রবাহমান জীবনের ভোগাতুর মানুষ।
নিরহংকার বেশ ভূষায় সজ্জিত প্রকৃতি নিশানা দেয়,
শিমুল, পলাশ, কৃষ্ণচূড়া... - কেউ রং পাল্টায় না,
লাল - সে তো লালিমায় লাল।
শ্রোতা কম, রব কর্কশ জেনেও কাক কখনো কুহু করেনা।
অপকর্মের মহানায়ক, স্বেচ্ছাচারী মানুষ সদর্পে
রং পাল্টায়, দিন পাল্টায়।
সেরা জীব নামধারী মানুষ দ্বিধাহীনভাবে
অন্যায় - অবিচারের পাষণ্ড মূর্তিতে পরিণত হয়;
নির্বিচারে করে স্বাধীনতার অপব্যবহার।
ক্ষমতা - অর্থ - সৌন্দর্যের বিলাসে
আগ্রাসী মানুষ হয়ে ওঠে " আরো চাই... " মনোভাবের।
খুন - হত্যা - রাহাজানি - নিরন্নের অন্নহরণ...
দুশ্চরিত্র মানুষের বাঁচার অবলম্বন।
বৈধকে ছেড়ে, অবৈধকে হীরে - জহরত ভেবে
মুকুটহীন সম্রাট বানায় নিজেকে।

মহামারী যখন দুয়ারে আঘাত হানে,
প্রাণপণ বাঁচার লড়াই আপামর মানুষের,
তখনো প্রতারণা করে
মানুষের খোলসে আবৃত নামধারী অমানুষ।
এ যেন শেয়াল - শকুনের একসাথে খাওয়ার
মন্বন্তরের লড়াই।
সোসাইটির মিথ্যা ট্র্যাডিশনে মোড়ানো মনুষ্য চামড়া।
জীবন সঞ্জীবনী ঔষধ, খাদ্যে ভেজাল, ধর্ষিতা নারী,
বস্তায় মুখবন্দি অবৈধ শিশুর লাশ,
প্রেমিকের বুকে প্রেমিকার ছুরি,
সুন্দর মুখে অ্যাসিডের বিকৃত রূপায়ণ,...
--- ছোট্ট জীবনে মানুষ এতটাই পারঙ্গম!
নিজ ধর্ম রক্ষায় বিষধর সর্প অমৃত ঢালে না।
শ্রেণি - পেশা ভুলে,
কালোবাজারি, মিথ্যা ছল - প্রপঞ্চনা সর্বাঙ্গে মেখে
মানুষ কিন্তু অমৃত - গরল, সবই দেয় ঢেলে।
মানুষ, একমাত্র তুমিই পারো।
হ্যাঁ, তোমাকেই বলছি।
তুমিই পারো " মান " আর " হুশ " টাকে উন্মুক্ত করতে।
লক্ষ যোজন সাধনার প্রাপ্তি -
মানবজীবন , প্রতিদানে স্বার্থক তুমি।
পাল্টাও জীবন, পাল্টাও মন।
ভেঙে দাও অপকর্মের সুবিশাল প্রাচীর।
গতিশীল আয়ু, সীমিত পথের হিসাব জেনেও
কেন চলছো ভ্রান্ত পথে?
কীর্তিমান, মহামানব - সকলই সাধনার ফল,
তিলে তিলে নিজেকে পরার্থে বিলিয়ে
ধরণীকে করেছে তারা মায়াময় - সুশীতল।
অবমুক্ত করো সুন্দর ধরণী,
তুমিই সেরা জীব।
এসব দেখেও হয় না তো হুশ;
রাঘব বোয়াল - সম পথভ্রষ্ট মানুষ।