স্পোর্টস ডেস্ক : জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম ও সিনিয়র ক্রিকেটার ইমরুল কায়েসসহ জাতীয় দলের পুলের ১০ জন ক্রিকেটার ব্যক্তিগত উদ্যোগে হোম অব ক্রিকেট শেরে বাংলাসহ দেশের ৪ স্টেডিয়ামে রানিং, জিম ও ব্যাটিং প্র্যাকটিস শুরু করেছেন। এই ফিজিক্যাল ফিটনেস ধরে রাখা ও ব্যাটিং-বোলিং ঝালিয়ে নেয়ার সেই উৎসাহী ও আগ্রহী ক্রিকেটারদের ভেতরে নেই দেশের তিন ফরম্যাটের অধিনায়ক মুমিনুল হক (টেস্ট), তামিম ইকবাল (ওয়ানডে) ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (টি-টোয়েন্টি)।

তবে তা নিয়ে আসলে কারও কিছু বলারও নেই। কারণ অনুশীলনটা একান্তই যার যার নিজের ইচ্ছেয়। জাতীয় দলের ক্যাম্প নয়। বিসিবি কিংবা ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির পক্ষ থেকে এ অনুশীলনে যোগ দেয়ায় নেই কোন বাধ্যবাধকতা। বরং বিসিবি নীতিগতভাবে এখন বিশেষ করে ঈদের ছুটির আগে এমন ব্যক্তিগত অনুশীলনটাকে নিরুৎসাহিতই করেছে। তাই সমালোচকদের মুখেও তেমন সাড়া শব্দ নেই।

তামিম ইকবাল নিজ শহর চট্টগ্রামের কাজীর দেউড়ির বাসায়, মাহমুদউল্লাহ ময়মনসিংহ শহরে আর মুমিনুল জন্মস্থান ও বেড়ে ওঠা কক্সবাজারে পিতা-মাতার সাথে অবস্থান করলে হয়তো একটি কথাও উঠত না। তা তো নয়, তিনজনই রাজধানী ঢাকায়। অথচ সেখান থেকে কেউই শেরে বাংলায় উঁকিও দেননি- সেটাই বা কী করে হয়? অথচ আরেক সাবেক অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম কিন্তু ঠিক প্র্যাকটিস করতে শেরে বাংলায় এসে হাজির। এ কৌতূহল মেটাতে গিয়ে বেড়িয়ে এসেছে ভিন্ন তথ্য।

এর মধ্যে টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হক প্রথমেই জানিয়ে দিয়েছেন তিনি আপাতত ঘরের বাইরে গিয়ে রানিং, জিম করবেন না। মুমিনুল নিজ মুখে তা জানিয়ে দিয়েছেন। তার কথা, আমি বাসায়ই যা করার করছি। আপাতত এই করোনার মধ্যে বাইরে বের হওয়াকে ঝুঁকি মানছেন মুমিনুল। তার মতে ঘরে থাকাই নিরাপদ। আর ব্যক্তিগত প্রস্তুতির জন্য ঝুঁকি নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে শেরে বাংলায় যেতেই হবে তা মনে করেন না মুমিনুল। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ তার কারণ ব্যাখ্যা করেননি।

ওয়ানডে ক্যাপ্টেন ও দেশের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল এখন পর্যন্ত এ নিয়ে কোন কথা না বললেও, জানা গেছে তামিমের ব্যক্তিগত অনুশীলন না করার কারণ ভিন্ন। তামিমের খুব কাছে সূত্র নিশ্চিত করেছে, তিনি আসলে পুরোপুরি সুস্থ্য নন। পেটের পীড়ায় ভুগছেন। সবসময় না থাকলেও কয়েকদিন ধরে তামিম পেটে হঠাৎ হঠাৎ ব্যথা অনুভব করছেন। মাঝে মধ্যে ওঠা সেই ব্যথার তীব্রতা প্রচন্ড। তাই তামিম সে ব্যথা কমানোর চিন্তায় বিভোর। একটা ভাল চিকিৎসা করানোর কথাও ভাবছেন।

জানা গেছে, প্রাথমিকভাবে দেশের শীর্ষ চিকিৎসকদের দেখাতে চেয়েও পারেননি তামিম। করোনার কারণে অনেক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা ঠিকমত রোগী দেখেন না। যাদের দেখিয়েছেন, তারা কেউই ঠিকভাবে তামিমের সমস্যা নির্ণয় করতে পারেনি। তাই দেশে ভাল চিকিৎসকদের কাউকে সেভাবে না দেখাতে পেরে তামিম এখন দেশের বাইরে চিকিৎসার জন্য যেতে চাচ্ছেন।

তার প্রাথমিক লক্ষ্য লন্ডন যাওয়ার। কিন্তু লন্ডনে গিয়ে এখন চিকিৎসা করাতে হলে আগে ১৪ দিন কোরেনটাইনে কাটাতে হবে। কিন্তু সেখানেও আছে বিপত্তি। বর্তমানে করোনার কারণে আগে থেকে এপয়েন্টমেন্ট না করে গেলে লন্ডন গিয়ে ডাক্তার দেখানো প্রায় অসম্ভব। কেননা এতে করে এপয়েন্টমেন্ট না হলে লন্ডনের ভিসাই পাবেন না তামিম।

তামিমের খুব কাছের একটি সূত্র জানিয়েছে, এ নিয়ে অনলাইনে প্রায় দিনই দেশের বাইরে চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলছেন তামিম। শেষ কথা হলো, ডাক্তারের এপয়েন্টমেন্ট নিশ্চিত না হলে তামিমের লন্ডন যাওয়া অনিশ্চিত। বিকল্প হিসেবে থাইল্যান্ড-সিঙ্গাপুরের কথাও বিবেচনায় আনছেন দেশের এক নম্বর ব্যাটসম্যান। শেষপর্যন্ত কোনটা করবেন, তাই দেখার।

(ওএস/এসপি/জুলাই ২১, ২০২০)