স্টাফ রিপোর্টার : বেসরকারি হাসপাতালে রোগীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত বিল আদায় বন্ধে মনিটরিং সেল গঠনের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে। রিটে দেশের সব বৈধ ও লাইসেন্সপ্রাপ্ত হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও করোনা চিকিৎসার জন্য নির্ধারিত হাসপাতালের তালিকা প্রকাশের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।

এছাড়া রিজেন্ট হাসপাতালে ভুয়া করোনা পরীক্ষার শিকার ব্যক্তিদের তালিকা প্রকাশ, তাদের কাছ থেকে টেস্টের নামে নেয়া টাকা ফেরত এবং ভুক্তভোগীদের অন্তর্বর্তীকালীন ক্ষতিপূরণ হিসেবে ২৫ হাজার টাকা প্রদানের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে প্রতিটি থানায় স্বাস্থ্য মনিটরিং কমিটিও করতে বলা হয়েছে।

রবিবার (২৬ জুলাই) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসানের পক্ষে ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম এই রিট দাখিল করেন। হাইকোর্টের বিচারপতি তারিক উল হাকিমের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে রিট আবেদনটির ওপর চলতি সপ্তাহে শুনানি হতে পারে।

রিটে স্বাস্থ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) এবং রিজেন্ট হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে (এমডি) বিবাদী করা হয়েছে।

এর আগে ১৯ জুলাই এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসানের পক্ষে ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম এ বিষয়ে একটি নোটিশ পাঠান।

নোটিশে বলা হয়, লাইসেন্সবিহীন রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় চুক্তি ও বুথ বানিয়ে করোনা পরীক্ষার অনুমতি প্রদান করেছে, যা চরম দায়িত্বহীনতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের পরিচয়। ভুয়া করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট প্রদান করে রিজেন্ট হাসপাতাল জনগণের সঙ্গে চরমভাবে প্রতারণা করেছে। প্রতারিত পরিবারদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

মাশরুমের মতো গড়ে ওঠা লাইসেন্সবিহীন হাসপাতাল, করোনা পরীক্ষার ভুয়া রিপোর্ট নিয়ে বিদেশ ভ্রমণ, বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা, বিল নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কার্যত কোনো পদক্ষেপ নেই। যা জনগণের বেঁচে থাকার সাংবিধানিক অধিকারকে সুস্পষ্টভাবে লঙ্ঘন করেছে।

অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বহীনতা আমাদের ভীষণ আঘাত করেছে। আমাদের স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার মৌলিক অধিকারকে লঙ্ঘিত করেছে। চোখের সামনে বেসরকারি হাসপাতালগুলোর প্রতারণা দেখেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় চোখ বন্ধ করে আছে। জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষার দায়িত্বে থেকে দায়িত্ব পালনে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে।

আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম বলেন, রিজেন্ট হাসপাতালে ভুক্তভোগী ও প্রতারণার শিকার পরিবারগুলোকে ক্ষতিপূরণ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে দিতে হবে। পরে তারা চাইলে রিজেন্টের কাছ থেকেও নিতে পারবে।

তিনি বলেন, দেশের যে সকল হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টারে করোনা পরীক্ষার অনুমতি দেয়া হয়েছে তার তালিকা প্রকাশ করতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে তাদের কোভিড-১৯ চিকিৎসা সংক্রান্ত বিস্তারিত রিপোর্ট দাখিলের বিধান চালু করতে বলা হয়েছে এবং প্রতিটি থানায় স্বাস্থ্য মনিটরিং কমিটি করতে বলা হয়েছে।

এ আইনজীবী আরও বলেন, যেখানে-সেখানে গড়ে ওঠা লাইসেন্সবিহীন হাসপাতাল, করোনা টেস্টের ভুয়া রিপোর্ট নিয়ে বিদেশ ভ্রমণ, বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা বিল নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কার্যত কোনো পদক্ষেপ নেই। যা জনগণের বেঁচে থাকার সাংবিধানিক অধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন

(ওএস/এসপি/জুলাই ২৬, ২০২০)