বাগেরহাট প্রতিনিধি : করোনা পরিস্থিতির মধ্যে আসন্ন ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের বন্যপ্রাণীসহ প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষায় সকল কর্মকর্তা- বনরক্ষীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। জারি করা হয়েছে সবোর্চ্চ সর্তকতা। সুন্দরবনে সাস্প্রতিক সময়ে চোরা শিকারীদের দৌরত্ব বেড়ে যাওয়ায় প্রধান বন সংরক্ষক (সিসিএফ) মো. আমির হোসাইন চৌধুরীর নির্দেশের পর সংরক্ষিত এই বনে বুধবার থেকে সার্বক্ষনিক টহলেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। বনরক্ষীদের পাশাপাশি সুন্দরবন সুরক্ষায় কোস্টগার্ড, র‌্যাব ও পুলিশ মাঠে নেমেছে। সুন্দরবন বিভাগ এতথ্য নিশ্চিত করেছে। 

বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মোহাম্মাদ বেলায়েত হোসেন জানান, চলমান করোনা পরিস্থিতিতে সুন্দরবনে সকল ধরণের জনসাধারণ প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকা পরও চোরা শিকারীরা বিশ্ব ঐতিহ্য এই বনে প্রবেশ করে বিভিন্ন ধরণের অপারাধমুলক কর্মকান্ড করার চেষ্টা করছে। ঈদ উপলক্ষ্যে মৌসুমী হরিণ শিকারীরা সাস্প্রতিক সময়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এসব অপরাধী ও মৌসুমী শিকারীদের দমনে প্রধান বন সংরক্ষক (সিসিএফ) মো. আমির হোসাইন চৌধুরীর নির্দেশে সুন্দরবনে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারির পাশাপাশি নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। সুন্দরবনের সকল কর্মকর্তা- বনরক্ষীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।

বাংলাদেশের সমগ্র বনাঞ্চলের অর্ধেকের বেশী জায়গা বিস্তৃত হচ্ছে সুন্দরবন। সুন্দরবনের ৬ হাজার ১৭ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের জল ও স্থল ভাগে রয়েছে প্রাণ-প্রকৃতির বিশাল ভান্ডার। সুন্দরবনে দেশের জাতীয় পশু রয়েল বেঙ্গল টাইগার, চিত্রল ও মায়াবী হরিণ, কিং-কোবরা, কুমির, বানর, গুইসাপসহ ৩৭৫ প্রজাতির বন্যপ্রাণীর বসবাস। সুন্দরী, পশুর, গেওয়া, গরান, কাকড়া, গোলপাতাসহ ৩৩৪ প্রজাতির উদ্ভিদ রয়েছে এই ম্যানগ্রোভ বনে। সুন্দরবনের অভ্যন্তরে ৪৫০টি নদী ও খালে রয়েছে বিশ্বের বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির ইরাবতীসহ ৬ প্রজাতির ডলফিন, লবণ পানির প্রজাতির কুমির, রূপালী ইলিশ, চিংড়ী, রুপচাঁদা, কোরালসহ প্রায় ৩০০ প্রজাতির মাছ।

(এসএকে/এসপি/জুলাই ২৯, ২০২০)