স্টাফ রিপোর্টার : গত সপ্তাহজুড়ে শেয়ারবাজারে দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখিয়েছে বীমা খাতের দুর্বল কোম্পানি এবং পঁচা কোম্পানি হিসেবে পরিচিত ‘জেড’ গ্রুপের কিছু প্রতিষ্ঠান। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দাম বাড়ার শীর্ষ পাঁচটি স্থানই বীমা ও জেড গ্রুপের কোম্পানির দখলে ছিল।

সপ্তাহজুড়ে বিনিয়োগকারীদের কাছে পছন্দের শীর্ষে ছিল পিপল ইন্স্যুরেন্স। ফলে সপ্তাহটিতে কোম্পানিটির শেয়ার দামে বড় উত্থান হয়েছে। এর মাধ্যমে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় শীর্ষ স্থানটি দখল করেছে কোম্পানিটি।

বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ কোম্পানিটির শেয়ারের প্রতি বেশ আগ্রহ দেখালেও এক শ্রেণির বিনিয়োগকারী তাদের কাছে থাকা প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন। ফলে সপ্তাহজুড়ে কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৪ কোটি ২০ লাখ ৮৬ হাজার টাকা। এতে প্রতি কার্যদিবসে গড়ে লেনদেন হয়েছে ছয় কোটি পাঁচ লাখ ২১ হাজার টাকা।

আর কিছু বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার কিনতে বেশ আগ্রহ দেখানোয় সপ্তাহজুড়েই দাম বেড়েছে। এতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে গত সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার দাম বেড়েছে ৩৯ দশমিক ৭১ শতাংশ। টাকার অঙ্কে প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়েছে আট টাকা ৩০ পয়সা।

সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম দাঁড়িয়েছে ২৯ টাকা ২০ পয়সা, যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কর্যাদিবসে ছিল ২০ টাকা ৯০ পয়সা।

হঠাৎ শেয়ারের এমন দাম বাড়লেও কোম্পানিটির সর্বশেষ ঘোষণা করা লভ্যাংশের চিত্র খুব একটা ভালো না। যে কারণে মধ্যম সারির দুর্বল কোম্পানি বা ‘বি’ গ্রুপে স্থান করে নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের ৬ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়। অবশ্য তার আগে ২০১৭ সালে ১০ শতাংশ ২০১৬ সালে ১২ শতাংশ এবং ২০১৫ সালে ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয় কোম্পানিটি।

ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, কোম্পানিটির মোট শেয়ারের ২০ দশমিক ৬৫ শতাংশ রয়েছে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের হাতে। বাকি শেয়ারের মধ্যে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে আছে ৫২ দশমিক ৩৪ শতাংশ। আর প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ২৭ দশমিকি শূন্য ১ শতাংশ শেয়ার আছে।

গত সপ্তাহে দাম বাড়ার শীর্ষ তালিকার দ্বিতীয় স্থানটি দখল করেছে শ্যামপুর সুগার মিল। বছরের পর বছর লোকসানে নিমজ্জিত কোম্পানিটি সর্বশেষ কবে বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দিয়েছে সে সংক্রান্ত কোনো তথ্য ডিএসইর ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়নি। লভ্যাংশ না দেয়ার কারণে কোম্পানিটির স্থান হয়েছে পঁচা কোম্পানি বা জেড গ্রুপে। অথচ এই কোম্পানিটির শেয়ার দাম গত সপ্তাহজুড়ে বেড়েছে ৩৫ দশমিক ৪৮ শতাংশ।

দাম বাড়ার শীর্ষ তালিকায় পরের স্থানটি দখল করেছে আর এক পঁচা কোম্পানি জিল বাংলা সুগার মিল। বছরের পর বছর ধরে লোকসানে নিমজ্জিত এ কেম্পানিটিও সর্বশেষ কবে শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ দিয়েছে তার কোনো তথ্য ডিএসইর ওয়েবসাইটে নেই। এমন কোম্পানির শেয়ার দাম গত সপ্তাহজুড়ে বেড়েছে ৩৩ দশমিক ৮২ শতাংশ।

দাম বাড়ার দিক থেকে চতুর্থ স্থানে রয়েছে নিট ইন্স্যুরেন্স। নিয়মিত শেয়ারহোল্ডারদের ভালো লভ্যাংশ দেয়া কোম্পানিটির শেয়ার দাম গত সপ্তাহজুড়ে বেড়েছে ৩০ দশমিক ৯১ শতাংশ। তবে পরের স্থানটিতে রয়েছে আর এক পঁচা কোম্পানি মেঘনা পেট। গত সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার দাম বেড়েছে ৩০ দশমিক ৬১ শতাংশ। বছরের পর বছর ধরে লোকসানে নিমজ্জিত এ কোম্পানিটিও সর্বশেষ কবে শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ দিয়েছে তার কোনো তথ্য ডিএসইর ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়নি।

এছাড়া দাম বাড়ার শীর্ষ দশে থাকা কোম্পানিগুলোর মধ্যে- ‘বি’ গ্রুপের অ্যাকটিভ ফাইনের ২৯ দশমিক ২৯ শতাংশ, ‘এ’ গ্রুপের সিলকো ফার্মাসিউটিক্যালের ২৬ দশমিক ৩৪ শতাংশ, ‘বি’ গ্রুপের ফ্যাস ফাইন্যান্সের ২৫ শতাংশ, ‘জেড’ গ্রুপের মেঘনা কনডেন্সড মিল্কের ২৪ দশমিক ৫৬ শতাংশ এবং সিএপিএম আইবিবিএল ইসলামী মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ২৩ দশমিক ১৯ শতাংশ দাম বেড়েছে।

(ওএস/এসপি/আগস্ট ০৭, ২০২০)