শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর : ধানের জেলা দিনাজপুরে বাণিজ্যিকভাবে মালটা চাষ শুরু হয়েছে। এখানকার আবহাওয়া ও মাটি অনুকুলে থাকায় অনেকেই মালটা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। শখের বসে মালটা চাষ করে আশাতীত সাফল্য পাওয়ায় এখন অনেকে বাণিজ্যিকভাবে এগিয়ে আসছেন মালটা চাষে। পতিত-অনাবাদি জমিতে মাল্টা চাষ করে অনেকে পেয়েছেন আশাতীত সাফল্য।

সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে গাছে থোকায় থোকায় ঝুলছে সু-স্বাদু মিষ্টি মালটা।বাতাসে মালটার টক-মিষ্টির গন্ধ। উৎপাদিত এসব মালটা স্বাদে মিষ্টি এবং আকারেও বড়। পতিত-অনাবাদি জমি,বাসা-বাড়ি’র আঙ্গিনার পাশাপাশি ফসলী জমিতেও চাষ হচ্ছে মালটা। মালটা চাষ করে আশাতীত সাফল্য পাওয়ায় মালটা চাষ কৃষকদের মাঝে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে।

দিনাজপুর শহরের প্রবাসী আব্দুল হেল বাকি রফিক বিরল উপজেলার শহরগ্রামের তার তিন একর পতিত অনাবাদি জমিতে মাল্টা চাষ করে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন। বারি-১ জাতের মাল্টা চাষ করেছেন তিনি। শুধু প্রবাসী রফিক নয়, লাভজনক হওয়ায় বানিজ্যিক ভাবে মালটা চাষ শুরু হয়েছে, দিনাজপুরের বিরল, বোচাগঞ্জ, কাহারোল, বীরগঞ্জ ও বিরামপুর উপজেলায়। অধিকাংশ গাছেই ফল ধরছে। আবার অনেক গাছ রয়েছে, নিবিড় পরিচর্যায়। গাছগুলি বেশ পরিপূর্ণতা লাভ করেছে। মালটা চাষে সফলতা লাভ করবেন বলে আশাবাদী বিরামপুরের মাল্টা চাষী আকরামুজ্জান। তিনি তার দেড় বিঘা জমিতে মালটা চাষ করেছেন।

বিরলের শহরগ্রাম,পুরিয়াগ্রাম,রানীপুকুর,বটহাট ও রাঙ্গন গ্রামে এবং বীরগঞ্জের মরিচা গ্রাম,সুজালপুর, বড় শীতলাই মাস্টারপাড়া, সাতোর চৌপুকুরিয়া গ্রামে বাসা-বাড়ি’র আঙ্গিনার পাশাপাশি পতিত-অনাবাদি এবং ফসলী জমিতেও চাষ হচ্ছে মালটা। দূর-দূরান্ত থেকে মালটা বাগান ও গাছ দেখছে ছুঁটে আসছে মানুষ। এসব মালটা গাছ ও বাগান অনেককে অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে মালটা চাষে।

বিরল উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো, মাহবুবার রহমান জানালেন,তার বিরল উপজেলাতেই ১০ একর জমিতে বাণিজ্যিকভাবে মালটা চাষ শুরু হয়েছে। অধিকাংশ জনই বারি-১ জাতের মালটা চাষ করছেন। এর ফলনও ভালো। এই একটি মালটায় ৩টি কমলার গুনগত পুষ্টি রয়েছে।

দিনাজপুর জেলা কষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো.তৌহিদুল ইকবাল জানালেন,কৃষি হিমালয়ের পাদদেশে দিনাজপুরের অবস্থান হওয়ায় ভৌগলিক কারণে এ জেলায় পুষ্টিকর বিদেশী ফল মালটা চাষের উজ্জ্বল সম্ভবনা রয়েছে। দিনাজপুর জেলায় প্রায় ৩৬ একর জমিতে মালটা চাষ হচ্ছে। উপযুক্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা গেলে বাণিজ্যিকভাবে মালটা চাষে কৃষক সফলতা পাবে।

ব্যাপক ভাবে মালটা উৎপাদন করা গেলে আমদানি নির্ভরতা কমবে।পাশাপাশি মালটা রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন এবং দেশে উৎপাদিত মালটা দিয়ে পুষ্টির চাহিদা মেটানো হবে সম্ভব।

সরেজমিনে বিরলর শহরগ্রমে দেখা গেছে, প্রবাসী রফির পতিত-অনাবাদি জমিতে মালটা চাষ করে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন। তার এই সাফল্য এখন অনেকের অনুপ্রেরণা। সংশ্লিষ্ট বিভাগের সহযোগিতা অব্যাহত থাকলে এবং এই মালটার ভালো দাম পেলে এ অঞ্চলে মালটা চাষের পরিধি আরো বেড়ে যাবে এমনটাই মন্তব্য করেছেন সংশ্লিষ্টারা।

(এস/এসপি/আগস্ট ২৬, ২০২০)