সঞ্জীব কুমার দাস, কাপাসিয়া (গাজীপুর) : গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার আড়াল বাজারে অধিকাংশ সরকারী জমি স্থানীয় সরকার দলীয় প্রভাবশালী মহলের নেতৃত্বে চলছে জমি দখলের মহোৎসব। এরই মধ্যে দখল হয়ে গেছে বাজারের  দুইশত বছরের পুরানো দশমীঘাট, সরকারি পাট গুদামের জায়গা, সরকারি পুকুর  ও বাজারে মহিলাদের ব্যবহারের জন্য দুটি টয়লেট। এ যেন দেখার কেউ নেই। জমি দখলের মহাউৎসব দেখে বাজারের ব্যবযীরা প্রভাবশালীদের ভয়ে যেন মুখ খুলছে না। এ দৃশ্য দেখে বুঝা যায় না সরকার বলতে কিছু আছে দেশে। যে যেভাবে  পরছে সে ভাবেই দিনে বেলায় প্রকাশ্যে জমি দখলের প্রতিযোগিতায় নেমেছে সরকারী দলের প্রভাবশালী নেতারা। সরকারী দলের নেতাদের হাত থেকে বাজারের অলিগলি ডোবা নালাও রেহাই পাচ্ছে না। দখলবাজদের হাত থেকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের স্থানীয় ইউনিয়ন বীজাগারের জমি রক্ষা করার জন্য অসহায়ত্ব  প্রকাশ জমি উদ্ধারের  জন্য  উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে একটি লিখিত আবেদন জানিয়েছেন।

সরেজমিনে আড়াল বাজারে পরির্দন করে জানা যায়, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সনমানিয়া ইউনিয়নের বীজাগারে জন্য ৯ শতাংশ জায়গায় রয়েছে । ওই বীজাগারে দীর্ঘদিন যাবত কোন কার্যক্রম না থাকায় স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের নেতৃত্বে সম্প্রতি ওই মহল রাতের আঁধারে বীজাগারের সামনের খোলা জায়গার চতুর্দিকে বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ করে জায়গাটি দখল করে নেয়। পরে জমিতেটি স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মোটা অংকের অগ্রিম নিয়ে ভাড়া দেওয়া হয়েছে।

তাছাড়া আড়াল বাজারের প্রায় দুইশত বছরের ঐতিহ্যবাহী বিশাল দশমী ঘাটটিও প্রায় পাচ বছর ধরে প্রভাবশালীরা দখল করে নিয়েছেন। আড়াল বাজার কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে অবস্থিত সরকারি পাট গোদামের দরজা বন্ধ করে দিয়ে সামনের অংশের সরকারি জায়গাও দখলদাররা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিয়েছেন। শুকনা মৌসুমে বাজারে আসা ক্রেতা বিক্রেতাদের প্রয়োজনীয় পানির একমাত্র জলাধার বিশাল পুকুরটিও দখল করে নিয়েছেন । বাজারের একমাত্র মহিলা কর্নারের দুটি টয়লেট দখল করে নিয়েছে।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক ব্যবসায়ী জানান, ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ সহকারী ভূমি কর্মকর্তা ও উপজেলা ভূমি অফিসের কিছু অসাধু কর্মকর্তা মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে স্থানীয় প্রভাবশালীদেরকে সরকারি জমির দখল বুঝিয়ে দিচ্ছেন। স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ দশমী ঘাটটি দখলমুক্ত করতে বিভিন্ন মহলে ধর্না দিয়েও কোন প্রতিকার পাচ্ছে না।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমন কুমার বসাক জানান, কৃষি সম্পসারণ অধিদফতরের সরকারি জায়গাটিও দখল করে নেয়ার মতো দুঃসাহস দখলবাজরা কোথায় পেল তা তার বোধগম্য হচ্ছে না। তাই তিনি এ জায়গা দখলমুক্ত করতে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ সংশ্লিষ্ট সকল মহলে লিখিত আবেদন জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোসা. ইসমত আরা জানান, আড়াল বাজারে বেশকিছু সরকারি জমি দখলের চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ পেয়েছি। দখলদারদের হাত থেকে সরকারি জমি উদ্ধারের জন্য অচিরেই প্রশাসনিকভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে তিনিি জানান।

(এসকেডি/এসপি/সেপ্টেম্বর ০৪, ২০২০)