রংপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতির বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা : বাদীকে মামলা প্রত্যাহারে চাপ ও ভয়ভীতির অভিযোগ
স্টাফ রিপোর্টার, রংপুর : বিয়ে করে স্ত্রীর মর্যাদা না দেয়ায় রংপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান রণির বিরুদ্ধে মামলা করেছেন এক স্কুল শিক্ষিকা। বিবাহিত স্ত্রীর প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণসহ বিভিন্ন অভিযোগ ওই শিক্ষিকা রণিসহ আরও ৪ জনের বিরুদ্ধে গত শনিবার রংপুরের মেট্রোপলিটন কোতয়ালী থানায় মামলাটি করেছেন।
এদিকে মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে থানায় গিয়ে বিক্ষোভ এমনকি নিরাপত্তাজনিত কারণে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে থাকা বাদী ওই শিক্ষিকাকে নানাভাবে চাপ এবং ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন শিক্ষিকা। ছাত্রলীগ নেতার নামে মামলার এ বিষয়টি বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ স্থানীয় পত্রপত্রিকায় ভাইরাল হয়েছে। পরিণত হয়েছে টক অব দ্য জেলায়।
দায়ের করা এজাহারে শিক্ষিকা উল্লেখ করেছেন, রংপুরের একটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন তিনি। ২০১৭ সালে ছাত্রলীগ সভাপতি রণির সাথে পরিচয় হয় তার। পরে তাদের সাথে গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। এ সময় রণি তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করলে তিনি তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় এবং রণি ২০১৯ সালের ১৮ এপ্রিল তাকে নীলফামারীতে নিয়ে সেখানকার ছাত্রলীগ সভাপতি সজল কুমারের বাসায় কাজী এনে বিয়ে করেন। কিন্তু বিয়ে করলেও রণি তাকে তার ঘরে না তুলে বিভিন্ন সময়ে তার কাছ থেকে প্রায় ১৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। গত ৫ জুন রণি নগরীর কেরাণিপাড়ায় বাসায় যান এবং তার সাথে রাত যাপন করেন।
সে সময়ও তিনি তাকে স্ত্রীর মর্যাদা দিয়ে ঘরে তোলার জন্য চাপ দিলে রণি তাকে জানান, সামনে জেলা যুবলীগের সম্মেলন। তিনি সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হবেন এবং এজন্য তাকে আরও ২০ লাখ টাকা দিতে হবে। কিন্তু তিনি টাকা দিতে অসম্মত হলে রণি তার উপর ক্ষিপ্ত হন এবং তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করার হুমকি দেন।
পরে শিক্ষিকা বিয়ে হয়েছে এবং স্ত্রীর অধিকার দাবি করলে রণি তাকে জানান, ভুয়া কাবিননামা দিয়ে বিয়ে করা হয়েছে এবং কাবিননামা ও কাজীকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না। পরবর্তীতে গত ১২ জুলাই তিনি রণির ফুফুর নগরীর গনেশপুর ক্লাবমোড়ের বাসায় গেলে রণি তার অপর আসামীদের নিয়ে তাকে ওই বাসা থেকে সেনপাড়ার একটি মোটর সাইকেল শোরুমে নিয়ে যান। সেখানে জোরপূর্বক আপোষনামায় স্বাক্ষর নেন রণি। পরে তিনি বিষয়টি নিয়ে মীমাংসার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হলে থানায় এই মামলা দায়ের করেন বলে এজাহারে উল্লেখ করেন।
তিনি অভিযোগ করেন, রণির গ্রামের বাড়ি প্রধানমন্ত্রীর শ^শুরবাড়ি এলাকা পীরগঞ্জের ফতেপুরে হওয়ায় তিনি নানাভাবে বিভিন্নস্থানে প্রভাব খাটিয়ে চলেন এবং বর্তমানে তিনি প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ তাকে গ্রেফতার করছে না।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুর রশীদ মামলা রেকর্ডের সত্যতা স্বীকার করে জানান, বিষয়টির তদন্ত চলছে। কেউই আইনের বাইরে নন। অপরাধী যেই হোক তাকে গ্রেফতার করা হবে।
(ওএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ০৮, ২০২০)