আবীর আহাদ


একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা সংসদের চেয়ারম্যান লেখক গবেষক আবীর আহাদ দেশব্যাপী মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের ওপর মহলবিশেষের উপর্যুপরি নির্মম হামলা ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন । হামলার ধরন দেখে মনে হয়, সরকারের অভ্যন্তরে লুকিয়ে থাকা মুক্তিযুদ্ধবিরোধী একটি অদৃশ্য শক্তি দেশকে ধ্বংস করার লক্ষ্যে একটি গৃহযুদ্ধ বাধানোর উস্কানি দিচ্ছে ।

আজ এক বিবৃতিতে আবীর আহাদ বলেন, বেশ কিছুকাল যাবত সারা দেশে বেছে বেছে মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের ওপর হামলা হচ্ছে । এসব হামলায় বহু মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারবর্গ নিহত হয়েছেন । আহত হয়েছেন । তাদের ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ, লুটতরাজসহ জায়গা জমি দখলের ঘটনা ঘটে চলেছে । খোঁজ নিয়ে জানা গেছে যে, এসব হামলার সাথে রাজাকার ও তাদের উত্তরাধিকাররা জড়িত । আরো বিস্ময়কর ব্যাপার এই যে, হামলাকারীরা অধিকাংশই নব্য আওয়ামী লীগার । হামলার ধরণ দেখে সহজেই বুঝা যায় যে, এসব হামলার অন্তরালে লুকিয়ে আছে একাত্তরের প্রতিশোধ ।

মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার প্রয়োজনে মুক্তিযোদ্ধারা বহু রাজাকার আলবদর আলবদর আলশামসসহ স্বাধীনতাবিরোধীদের পাদানী মার দিয়েছিলো-----পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর পাশাপাশি তারাও মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে পরাজিত হয়ে আত্মসমর্পণ করেছিলো । সেই পাদানী মার, আত্মসমর্পণ ও পরাজয়ের গ্লানিতে তাড়িত হয়ে তারা সময়ের পরিক্রমায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতাদের বিপুল অর্থ উপঢৌকন দিয়ে দলে অনুপ্রবেশ করে মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর প্রতিশোধ নিচ্ছে । দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এমন সব ঘটনা ঘটার পরও আওয়ামী লীগের কোনোই প্রতিক্রিয়া নেই । মনে হয়, রাজাকাররদের অর্থের কাছে তারা পুরোপুরি বশ হয়ে গেছে । আওয়ামী লীগের এহেন নির্লিপ্ততার সূত্র ধরে প্রশাসনের মধ্যেও এসব প্রতিকারের বিষয়ে তেমন তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না ।

আবীর আহাদ দৃঢ়তার সাথে বলেন, এ অবস্থা আর চলতে দেয়া যায় না । হামলাকারীদের বিনা চ্যালেঞ্জেও ছেড়ে দেয়া যায় না । তাদেরকে বুঝিয়ে দিতে হবে যে, মুক্তিযোদ্ধারা দুর্বৃত্তদের প্রতিহত করার যাবতীয় কৌশল ও ক্ষমতা রাখে । এ ক্ষমতা কোনো ব্যক্তিবিশেষের ক্ষমতা নয় । সেটা হবে মুক্তিযোদ্ধাদের ঐক্যবদ্ধ ক্ষমতা । সব দ্বিধাদ্বন্দ্ব ও সংকীর্ণতাকে দুমড়ে মুচড়ে মুক্তিযোদ্ধাদের জাতীয় গরিমা সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে সব মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত যুবসমাজকে এককেন্দ্রিক ঐক্যের পতাকা তলে জড়ো হওয়ার মধ্যেই মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের মর্যাদা ও নিরাপত্তার চাবিকাঠি নিহিত ।

বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি আবীর আহাদ প্রত্যয় দৃপ্তকণ্ঠে বলেন, আমার আহ্বান, আপনারা আপনাদের সন্তান ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত প্রজন্মকে সাথে নিয়ে, হামলাকারী দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে কার্যকরি পদক্ষেপ গ্রহণ করার লক্ষ্যে প্রতিটি গ্রাম গঞ্জ শহর ও নগরে প্রতিরোধ কমিটি গড়ে তুলুন । আঘাত এলে দাঁতভাঙা প্রত্যাঘাত হেনে দুর্বৃত্তদের পর্যুদস্ত করুন । বুঝিয়ে দিন, বাংলার মাটি দুর্জয় ঘাঁটি বুঝে নিক দুর্বৃত্ত।

লেখক :চেয়ারম্যান, একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা সংসদ।