রংপুরে অবসরপ্রাপ্ত চাকুরিজীবী হত্যায় বাদীকেই সন্দেহ করছেন নিহতের কন্যা
রংপুর প্রতিনিধি : রংপুর মহানগরীর দক্ষিণ মুলাটোল ব্যাংক কলোনীর নিজ বাড়িতে খুন হওয়া অবসরপ্রাপ্ত সরকারী চাকুরীজীবী আরজুমান্দ বানু মিনুর হত্যাকান্ডে জড়িত বলে মামলার বাদীকেই সন্দেহ করছেন নিহতের একমাত্র কন্যা সন্তান তানিয়া মাহজাবিন সুমি।
নিহতের পরিবারের সঙ্গে সম্পর্কে কেউ না হয়েও বাদী এনায়েত হোসেন মোহন হত্যাকান্ডের পর পুলিশকে ঘটনাস্থলে ডেকে আনা, হত্যাকান্ডের প্রত্যক্ষদর্শী না হয়েও বর্ণনা দেয়া এবং অতি উৎসাহী হয়ে নিজে বাদী হওয়ায় মায়ের হত্যাকান্ডে মোহনেরই সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে দাবি করছেন সুমি। তিনি পুলিশের বিরুদ্ধেও তার কথামত এজাহার না লেখা এবং লাশ হস্তান্তরে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ আনেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা থেকে রংপুর রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক ভিডিও কনফারেন্সে এসব দাবি করেন তিনি। একই সঙ্গে তিনি তার মায়ের হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু তদন্ত এবং প্রকৃত অপরাধী,পরিকল্পনা ও হুকুমদাতাদের খুঁজে বের করে প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাসহ আদালতের কাছেও ন্যায় বিচার প্রার্থনা করেছেন।
সুমি জানান, গত ১৯ মে নিজ বাড়িতে নৃশংসভাবে খুন হন তার মা আরজুমান্দ বানু মিনু। তিনি রংপুর হিসাব রক্ষণ অফিসের চাকুরি থেকে অবসরে যাবার পর মুলাটোলের ওই বাড়িতে একাই থাকতেন। ঢাকায় বসে তিনি মায়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে করোনা, ঘুর্ণিঝড় আম্পান এবং ব্যক্তিগত নিরাপত্তার কারণে সে সময় ঢাকা থেকে রংপুরে আসতে পারেননি। কিন্তু তার মায়ের লাশ কে গ্রহণ করবে এবং দাফন প্রক্রিয়াসহ প্রয়োজনীয় কাজ কীভাবে হবে তা একমাত্র সন্তান হিসেবে মুঠোফোনে পুলিশকে অবগত করেন।
তিনি অভিযোগ করেন, আপত্তি সত্বেও পুলিশ তার মায়ের লাশ হস্তান্তরে তার প্রস্তাব রাখেননি। বরং পুলিশ তার তালাকপ্রাপ্ত স্বামী এনায়েত হোসেন মোহনকে বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করেন।
তিনি জানান, মোহন তাদের পরিবারের কেউ না হয়েও পুলিশের কাছে নিজেকে জামাই পরিচয় দিয়ে মামলার এজাহার দায়ের করেন। এ বিষয়টি তিনি জানার পর মোহনের নাম প্রত্যাহার করে পুলিশকে বাদী হবার অনুরোধ করা হলেও তাতে কর্ণপাত করেনি পুলিশ। তিনি আরও দাবি করেন, মোহনকে তালাক দেয়ার পর মোহন বিভিন্ন সময়ে তাকে ভয়ভীতি দেখানো ও হত্যার হুমকি দিত। একই এলাকায় বাড়ি ও ব্যক্তিগত প্রভাব দেখিয়ে হত্যার বিষয়টিকে ভিন্নখাতে নেয়ার উদ্দেশ্যেই পুলিশকে ভুল তথ্য দিয়ে বাদী হয়েছে মোহন।
সুমি আরও জানান, ঘটনার রাতে থানায় দায়েরকৃত এজাহারে মোহন জমি সংক্রান্ত জেরে মিনুকে খুন করা হয়েছে এবং তা প্রত্যক্ষদর্শীর মত বর্ণনা দেন। যা এ মামলায় গ্রেফতাকৃত আসামী আরমান আলীর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীর সঙ্গে মিলে যায়। এসব কারণেই সুমির দাবি, তার মায়ের জমির দলিল, চাকরি শেষে দীর্ঘদিনের সঞ্চয়কৃত অর্থ, স্বর্ণালংকার এ সবকিছু আত্মসাতের উদ্দেশ্যেই মোহন এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
(এমএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ১০, ২০২০)