রণেশ মৈত্র


বিগত ১৫ সেপ্টেম্বরে প্রাচীন দৈনিক ‘সংবাদ’এর প্রথম পৃষ্ঠায় দুই কলামব্যাপী “রংপুরের মিঠাপুকুরে হিন্দু সম্প্রদায়ের বসতভিটা থেকে উচ্ছেদ চেষ্টা ঃ আওয়ামী লীগ নেতার নেতৃত্ব হামলা ঃ নারী সহ আহত ১০ঃ থানায় মামলা : পুলিশ নিষ্ক্রিয়” শিরোনামে প্রকাশিত খবরটি পড়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন বোধ করছি এবং নির্য্যাতীত ঐ পরিবারগুলির পক্ষ থেকে এই নির্মম নির্যাতন প্রচেষ্টার সাথে সংহতি জানিয়ে নিবন্ধটি লিখতে বসেছি।

প্রথমেই খবরটি প্রিয় পাঠক-পাঠিকাদের জন্যে উদ্বৃত করছি :

রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার জায়গীরহাট ইদুলপুর এলাকায় প্রতি বছর ধরে বসবাস করা ১২ টি হিন্দু পরিবারকে উচ্ছেদ করে পূরো জায়গা দখল করার অপচেষ্টায় বাধা দেওয়ায় আওয়ামী লীগ নেতার নেতৃত্বে তার দলবলের হামলায় নারী সহ ১০ জন আহত হয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতা এ ঘটনায় কলেজ ছাত্রীর গলা টিপে ধরে হত্যার চেষ্ট করে। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হলেও পুলিশ আসামীদের গ্রেফতার করছে না বরং উল্টো আসামীরা সংখ্যালঘু হিন্দু পরিবারগুলোর বাড়ীঘর জ্বালিয়ে দিয়ে তাদেরকে হত্যা করার হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

মিঠাপুকুর থানার ওসি আমিরুজ্জামান এ ঘটনায় মামলা দায়ের করার কথা স্বীকার করলেও আর কোন মন্তব্য করতে রাজী হন নি। এলাকাবাসী ও পুলিশ এবং নির্য্যাতীতারা অভিযোগ করেছে-শত বছর ধরে ১২ টি পরিবার মিঠাপুকুর উপজেলার লতিফপুর ইউনিয়নের জায়গীরহাট উদুলপুর গ্রামে সরকারের ১৮ শতক জমিতে পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করে আসছে। জায়গাটি জায়গীরহাট বাজার সংলগ্ন হওয়ায় লোলুপ দৃষ্টি পড়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি তোজাম্মেল হোসেনের। বেশ কিছুদিন যাবত ওই স্থানে বসবাসকারী ১২টি হিন্দু পরিবারকে সেখান থেকে অন্যত্র চলে যাবার জন্য নানাভাবে হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছিল তার লোকজন।

বিগত ১১ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগ নেতা তোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে ইউ.পি. মেম্বর সাজু, এনামুল হক, আবুল কালাম সহ অর্ধ-শতাধিক দলবল নিয়ে সেখানে একটি ক্লাব ঘর স্থাপন করার সাইনবোর্ড লাগাতে গেলে সেখানে বসবাসকারী অঞ্জলি মোহান্ত সহ অন্যরা বাধা প্রদান করলে সেখানে বসবাসকারী অঞ্জলি মোহান্তসহ অন্যরা বাধা প্রদান করলে আওয়ামী লীগ নেতার লেলিয়ে দেওয়া লোকজন তাকে বেদম মারধর করে। এ সময় তার কন্যা রংপুর কারমাইকেল কলেজের অনার্ন প্রথম বর্ষের ছাত্রী তার মাকে রক্ষা করার জন্য এগিয়ে এলে আওয়ামী লীগ নেতা তোজাম্মেল হোসেন নিজেই মেয়েটির গলা টিপে ধরে তাকে হত্যা করার চেষ্টা করে। শুধু তাই নয়, দফায় দফায়, তাকে মারধোর করে। (পূরো দৃশ্য ভিডিও করা আছে) এ সময় সেখানে অবস্থানরত হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকদের আওয়ামী লীগ নেতার নেতৃত্বে হামলা চালিয়ে তাদের মারধর করা হয়। তারা নারীদের শ্লীলতা হানি করে। পরে আশপাশের লোকজন এসে তাদের রক্ষা করে।

এ ঘটনায় অঞ্জলি মোহান্তের স্বামী রহত মোহন্ত বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে পুলিশ প্রথমে মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানায়, পরে বিষয়টি ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানান হলে বিকেলে মামলা রেকর্ড করে পুলিশ। মামলা নং ৩২ তারিখ ১২.০৯.২০। ধারা ১৪৬/৪৪৮০/৩২৩/৩০৭/৩৫৪ বাংলাদেশ দ-বিধি আইন। মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা তোজাম্মেল হোসেনকে প্রধান আসামী করে ১১ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করা হয় বলে বাদী রতন মোহান্ত জানান।

এদিকে মামলা দায়ের করা হলেও পুলিশ আসামীদের গ্রেফতার কোন পদক্ষেপ নেয় নি। অন্যদিকে মামলা দায়েল করার পর আওয়ামী লীগ নেতা তোজাম্মেল হোসেন প্রকাশ্যেই তাদের ঐ এলাকা থেকে উচ্ছেদ করার হুমকি প্রদান করছে। তার লোকজন ঐ এলাকা থেকে চলে না গেলে তাদের বাড়ীঘর জ্বালিয়ে দেবে ও হত্যা করার হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

‘সংবাদ’ এর রংপুর প্রতিনিধি লিয়াকত আলী বাদল ঘটনাস্থলে গেলে সেখানে বসবাসকারী হিন্দু পরিবারগুলো জানায়, তাদের বাপ-দাদার আমল থেকে এখানে তারা পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করছেন। অঞ্জলি রানী, সমাপ্তি মোহান্ত, বাবু, দুলালীসহ অন্যরা অভিযোগ করেন যে আওয়ামী লীগ নেতা তোজাম্মেল হোসেন সরকারি দলের প্রভাব খাটিয়ে তাদের শত বছর ধরে বসবাস করা স্থান থেকে উচ্ছেদ করার পাঁয়তারা করছে। আওয়ামী লীগ নেতা প্রকাশ্যেই কলেজ ছাত্রী সমাপ্তি মোহান্তকে মারধোর ও গলা টিপে ধরেছে-এ ভিডিও বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তারা দায়ীদের গ্রেফতার ও বিচার দাবী করেন।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা তোজাম্মেল হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি হামলা চালাতে নয়-তাদের সেভ করার জন্য সেখানে গিয়েছিলাম। তাদের ওপর শারীরিকভাবে নির্য্যাতন করেছি ঠিক-কিন্তু এটা নির্য্যাতন নয় শাসন। আসলে কোন রাজনৈতিক মহল তাকে হেয় প্রতিপন্ন করতে বিভিন্ন অপচেষ্টা করছে বলে দাবী করেন তিনি।

অন্যদিকে স্থানীয় লতিফপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইদ্রিস আলী ম-লের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, হিন্দু পরিবারগুলো তাঁকে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেছেন, লিখিত অভিযোগ করে নি। তারপরেও যেহেতু মামলা হয়েছে, সেই হেতু আইনেই সমাধান হবে তবে তাদের উপর যেন ন্যায় বিচার হয়, সেটা তিনি চান বলে জানান।

সার্বিক বিষয়ে জানতে মিঠাপুকুর থানার ওসি আমিরুজ্জামানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি মামলা দায়েরের কথা স্বীকার করে নিয়ে বলেন, আসামীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

রংপুরের সাংবাদিক লিয়াকত আলী বাদলকে চিনি না। ভবিষ্যতেও তাঁর সাথে পরিচয়ের সুযোগ ঘটেবে এমন সম্ভাবনাও দেখছি না। তবে তাঁকে ধ্যবাদ জানাই যথেষ্ট পরিশ্রম করে, ঘটনাস্থলে গিয়ে সরেজমিনে সব দেখে অনেক পরিশ্রম করে এই প্রতিবেদনটি সংবাদ এ পাঠানোর জন্যে। এটা যদিও সাংবাদিক হিসেবে তাঁর দায়িত্বের মধ্যে পড়ে-তবু তিনি তো এড়িয়ে যেতে পারতেন-তা করেন নি অন্য অনেকের মত ।

যা হোক খবরটি খুবই উদ্বেগজনক-বিশেষ করে যাঁরা মানুষকে ভালবাসেন তাঁদের কাছে। ১২ টি হিন্দু পরিবার মাত্র ১৮ শতক জমিতে বাস করেন। জমিটা সরকারি। আওয়ামী লীগ নেতা তোজাম্মেল হোসেনের না-তিনি এ জমির কেউ নন। সরকারি দল করলেই তিনি যা খুশী তাই করতে পারেন না।

শত বছরেরও বেশী যে গরীব পরিবারগুলি কষ্টে-সৃষ্টে ওখানে বাস করছেন-কার্য্যত: এবং আইনত: এ জমির মালিক তাঁরাই। সরকারের উচিত অবিলম্বে ঐ জমি ঐ পরিবারগুলির কাছে বিনামূল্যে স্থায়ী বন্দোবস্ত বা চবৎসধহবহঃ খবধংব দিয়ে দেওয়া-যাতে তাঁদের মালিকানা বৈধতা পায় এবং তাঁরা মালিক হিসেবে বংশ পরম্পরায় নিশ্চিন্তে নির্বিঘ্নে সেখানে বসবাস করতে পারেন। অবশ্য যদি সরকার তেমন কিছু ইতোমধ্যেই করে থাকেন তবে তো কথাই নেই।

নেতা হয়ে তোজাম্মেল হোসেন স্বয়ং দলবল নিয়ে গিয়ে সেখানে ঐ পরিবারগুলিকে উচ্ছেদ করার প্রক্রিয়া শুরু করতে এবং ঐ জমিটুকুর মালিকানা, অবৈধ হলেও, প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে অসৎ ও বে-আইনী জেনেও একটি ক্লাবের নাম লিখে একটি সাইনবোর্ড লাগাতে গিয়ে ছিলেন। প্রকৃত, সৎ ও দেশপ্রেমিক নেতা হলে ক্লাব প্রতিষ্ঠার জন্যে খানিকটা জমি অন্য কোথাও থেকে কিনে নিয়ে পছন্দমত ঘর নির্মান করে তাতে ক্লাবের সাইনবোর্ড লাগাতেন ইচ্ছে করলে একটি ভাল লাইব্রেরীও স্থাপন করে নতুন প্রজন্মের জ্ঞানবৃদ্ধির জন্য বই পড়ার ব্যবস্থাও করতে পারতেন। কিন্তু আসলে তো ক্লাব নেই-সাইনবোর্ড লিখিয়ে নিয়েছেন শুধুমাত্র ঐ জমিতে মালিকানা প্রতিষ্ঠার কৌশল হিসেবে।

নিবন্ধটি লিখছি আর ভাবছি-আওয়ামী লীগের আজ এ কী দশা? এমন খবর পড়তে হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবর্ষ বা মুজিব বর্ষেও। বিস্ময়কর, দুঃখজন। এই তোজাম্মেল হোসেন নিশ্চয়ই সর্বদা মুজিবকোর্ট পরেন। বঙ্গবন্ধুর ও শেখ হাসিনার নামে গলা ফাটান। জয় বাংলাও বলেন সদা-সর্বদা।

কোথায় থাকলো পুলিশের দায়িত্ববোধ এবং কর্তব্যজ্ঞান-যাঁদের রাষ্ট্রীয় দায়িত্বই হলো দুষ্টের দমন-শিষ্টের পালন। ঘটনার বিবরণ-যা সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে তা খুঁটিয়ে পড়লে বুঝতে আদৌ কষ্ট হয় না যে ঘটনা ঘটার পর পর তো দূরের কথা পরদিন মামলা দায়ের হওয়ার পরও তাঁরা যান নি ঘটনাস্থল পরিদর্শনে। ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাওয়া তো দূরের কথা-মামলাই নিতে অস্বীকার করেছিলেন ১২ সেপ্টেম্বর। বাধ্য হয়ে যখন বাদীপক্ষ জানালো পুলিশের ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষকে-তাঁদের হস্তক্ষেপে থানার ওসি. মামলাটি রেকর্ড করেন বিকেলে। মামলা রেকর্ড করার পরও থানার পুলিশ যান নি ঘটনাস্থল পরিদর্শনে-করেন নি আসামীদেরকে গ্রেফতার।

অসহ্য। কোন আইনে ওসি মামলা নিতে প্রথমে অস্বীকৃতি জানালেন? নাকি আসামীর তালিকায় আওয়ামী লীগ নেতার নাম আছে তাই? আইনে আছে না কি যে আওয়ামী লীগের লোক বে-আইনী কাজ করলে, কাউকে হত্যা করতে উদ্যত হলে, কারও বাড়ীঘর থেকে শতবর্ষব্যাপী বসবাসকারীদেরকে বলপূর্বক উচ্ছেদ করে বে-আইনী দখল নিতে দলে বলে বসবাসকারীদেরকে মারধর করলে, বে-আইনী জনতা গঠন করে সচেতনভাবে বিশৃংখলা সৃষ্টি করলেও তাদের বিরুদ্ধে কোন মামলা গ্রহণ করা যাবে না। মামলা গ্রহণ করা যাবে না বাদীরা হিন্দুর ঘরে জন্ম নিয়েছেন এবং দরিদ্র সে কারণেও?

সহজ সত্য কথা হলো, ঐ মামলা নিতে আপত্তি করে রংপুর জেলার মিঠাপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানাব মোহাম্মাদ আমীরুজ্জমান তাঁর সরকারি দায়িত্ব পালনে অবহেলা করেছেন এবং প্রকারান্তরে আসামীপক্ষকে সহায়তা করেছেন। এই কাজ দ্বারা তিনি তাঁর সরকারি দায়িত্ব পালনেই শুধু অবহেলা দেখান নি-সুস্পষ্টভাবেই তিনি আইনও লংঘন করেছন। এসবই বিভাগীয় তো বটেই, ফৌজদারী অপরাধও বটে।

তাই সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী, পুলিশের মহাপরিদর্শক ও রংপুর জেলার পুলিশ সুপারের কাছে দাবী জানাবো যেন অবিলম্বে ঐ ও.সি. কে ক্লেনজই শুধু নয়-সংশ্লিষ্ট আইনে তাঁর বিরুযদ্ধে যেন অবিলম্বে ফৌজদারী মামলা দায়েল করে কারাগারে পাঠানো হয়-দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আস্ত ব্যবস্থা করা হয়। তাঁদের কাছে আরও জানার মামলায় অভিযুক্ত সকলকে দ্রুত গ্রেফতার ও অভিযোগকারী গরীব ১২ টি হিন্দু পরিবারকে পরিপূর্ণ নিরাপত্তা দেওয়া হয়।

কোন পথে হাঁটছে আজকের আওয়ামী লীগ-অতীতে যে দলটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব, মওলানা ভাসানী, তাজউদ্দিন, শামসুল হক প্রমুখ গড়েছিলেন ১৯৪৯ সালে, যে দলটি সমগ্র পাকিস্তান আসমল জুড়ে বাঙালীর লাঞ্ছনা বঞ্জনাকারী এবং সাম্প্রদায়িকতার পৃষ্ঠপোষক মুসলিম লীগের বিরুদ্ধে গৌরবোজ্জ্বল সংগ্রামের অধিকারী, যে দলটি ১৯৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী সেই দলের নেতা-কর্মীরা আজ বেমালুম সাম্প্রদায়িক ক্রিয়াকলাপে নির্বিঘেœ লিপ্ত হয়ে পড়ছে, ক্যাসিনো কা-ের মত এবং বে-আইনী অস্ত্র রাখার ও কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার করছে, ব্যাংক লুঠ করছে, নারী ধর্ষণ করছে, হিন্দুদের জমি দখল করে মসজিদ নির্মাণ করলেও ( যেমনটি নারায়নগঞ্জের বহুল আলোচিত মসজিদ) দলটির পরিচালনাধীন সরকার নিশ্চুপ থেকে নীরব ভূমিকা পালন করে, হাজার হাজার হিন্দুকে প্রায়শ:ই ভয় দেখিয়ে তাদেরকে নানা রকম হুমকি দিয়ে জোত-জমা ও বাড়ীঘর দখল করে বাসিন্দাদেরকে দেশত্যাগে বাধ্য করে, প্রায় সারাটি বছর ধরে দেশের বিভিন্ন স্থানে অগনিত মন্দির, প্রতিমা ভাংচুর প্রভৃতি ঘটলেও সরকার, পুলিশ, এম.পি. সবাই নীরব-নিথর হয়ে থাকে-অপরাধীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের, গ্রেফতার ও বিচার করে উপযুক্ত শাস্তি বিধান এড়িয়ে চলে?

আদিবাসীদের উপর নির্মম অত্যাচার চললেও সরকার নিশ্চুপ থাকে?

যখন নিবন্ধটি লিখছি-ঠিক তখনই টেলিভিশনের পর্দায় দেখছি-আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক ও সেতুমন্ত্রী বলছেন, “দেশের রাজনীতি দুই ধারায় বিভক্ত। এক স্বাধীনোত্তর ধারা-মুক্তিযুদ্ধের ধারা এবং দুই. ১৯৪৭ এর পাকিস্তানী ধারা।” এই বক্তব্যের সাথে ঐকমত্য প্রকাশ করে তাঁকেই জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে হয়, ঘটনাবলীর প্রেক্ষিতে আজকের তাঁর দলকে কোন ভাগে ফেলা যাবে? ২০০২ সালে সংগঠিত সাম্প্রদায়িক সহিংসতাগুলি চিহ্নিত করেও একটি মামলাও দায়ের হলো না-এটা থেকে কি বলা যাবে?

বস্তুত: মুক্তি যুদ্ধের আদর্শ আজ সর্বাধিক বিপদগ্রস্ত। তাকে পুনরুজ্জীবিত করে পুনরায় বঙ্গবন্ধুর ও মুক্তি যুদ্ধের আদর্শে ফিরতে আবার নতুন করে একটা মুক্তিযুদ্ধের দরকার।

লেখক :সভাপতিদ ম-লীর সদস্য, ঐক্য ন্যাপ।