বাগেরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাটে তীব্র তাপদাহ ও পানি বাহিত রোগে ডায়রিয়া রোগের উপদ্রব দেখা দিয়েছে। গত চার দিনে ৬৬ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নেয়। এরমধ্যে ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশু সংখ্যা ২৮ জন। প্রচণ্ড গরম ও বিশুদ্ধ পানির অভাবে প্রতিনিদিই বাড়ছে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা। অপরদিকে, বাগেরহাট সদর হাসপাতালে শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পদটি শুন্য থাকায় শিশু রোগীদের ভোগান্তি চরমে।

বাগেরহাট সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ১’শ শয্যা বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগীর জন্য ৪টি বেড ও শিশু রোগীর জন্য ১২ বেড রয়েছে। বর্তমানে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ওই ওয়ার্ডে সংকুলান না হওয়ায় বাধ্য হয়ে মেঝেতে ও বারান্দায় চিকিৎসা দেয়া হয়। শনিবার সকালে আইডি ওয়ার্ডে দায়িত্বরত সিনিয়র ষ্টাফ নার্স কৃষ্ণা রায় জানান, গত ৪ দিনে ৬৬ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। এরমধ্যে বর্তমানে ৭ জন রোগী ছাড়া সকলেই চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি গেছেন। ওই ওয়ার্ডে ভর্তি শিশু সাদিয়ার মা জোসনা জানান, শুক্রবার বিকেলে তার বাচ্চাকে ভর্তি করা হলেও শনিবার বেলা ১১ টা পর্যন্ত কোন পরিবর্তন হয়নি। এমনকি কোন ডাক্তার আসেননি। তবে সেবিকারা জানান, শুক্রবার ছুটির দিন থাকায় ডাক্তারা আসেননি, তবে একটু পরেই স্যাররা রাউন্ডে আসবেন।
এদিকে শিশু ওয়ার্ডে রোগীর সংখ্যা বেশি না থকলেও চিকিৎসক না থাকায় অনেক শিশু রোগী বাধ্য হয়ে বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করান বলে অভিবাবকেরা জানান। জুনিয়র শিশু বিশেষজ্ঞ রোখসোনা পারভিন সম্প্রতি রামপাল উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে বদলী হয়ে যাওয়াতে শিশু রোগীরা যথাযথ চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন না বলে শিশু রোগীর অভিবাবকেরা জানান।
বাগেরহাট সদর হাসপাতালের প্যাথলজী বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক শেখর চন্দ্র দাস বলেন, ‘আমি বর্তমানে প্যাথলজী বিভাগের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসাবে শিশু রোগীদের চিকিৎসা দেই। বাগেরহাট সদর হাসপাতালের জন্য আমি একাই শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হিসাবে শিশু রোগীর চিকিৎসা সেবা দেয়ার জন্য যথেষ্ট’।
বাগেরহাট সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা: মঈন উদ্দিন মোল্লা জানান, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর জন্য নির্ধারিত ৪টি সিট থাকলেও যারা আক্রান্ত হয়ে আসেন তাদের চিকিৎসা সেবা দেয়ার জন্য ব্যবস্থা রয়েছে। রোগীর সংখ্যা বাড়লে জরুরীভাবে অন্য কক্ষ ব্যবহার করে তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়। তবে শিশু রোগীদের জন্য শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জরুরী হয়ে পড়েছে। এছাড়া অর্থোপেডিক, সার্জারী, এনেস্থেশিয়া ও ডেন্টাল চিকিৎসকের পদ দীর্ঘদিন ধরে শুন্য রয়েছে।
(একে/এএস/এপ্রিল ১৯, ২০১৪)