রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরে আমদানিকৃত ভারতীয় পাথর নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতি শুরু হয়েছে। ওজনে কম দেখিয়ে এর বিপরীতে কিছু সংখ্যক সিএ্যান্ডএফ এজেন্টের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে মোটা অংকের ঘুষ। এতে সরকার যেমন রাজস্ব হারাচ্ছেন তেমনি সাধু ব্যবসায়ীরা সমস্যায় পড়েছেন। 

জানা গেছে, ভোমরা বন্দর দিয়ে প্রতিদিন গড়পড়তা ২০০ ট্রাক ভর্তি ভারতীয় পাথর আমদানি হয়। প্রতি ট্রাকে থাকে গড়পড়তা ৫৫ থেকে ৬০ মেট্রিক টন পাথর। সিএ্যান্ডএফ এজেন্টদের অভিযোগ এর মধ্যে শতাধিক ট্রাকে এই দুর্নীতি চলছে। তারা বলেন প্রতি টনে ৪০০ টাকা হিসাবে প্রতি গাড়িতে ১৫ থেকে ২০ টন পাথরে এই ঘুষ আদায় করা হয়। এতে সংশ্লিষ্ট বন্দর ও কাস্টমস প্রতিনিধির হাতে গাড়ি প্রতি ৮ হাজার টাকা হিসাবে ১০০ গাড়িতে প্রতিদিন ৮ লক্ষ টাকা পৌছায়। বন্দরের ওজন মেশিনে প্রকৃত ওজন চাপা দিয়ে কম দেখিয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষের কম্পিউটারের মাধ্যমে এই শীট বের করা হয়। এ ঘটনা নিত্য নৈমিত্তিক ঘটছে বলে তারা জানিয়েছেন।

ভুক্তভোগী সিএ্যান্ডএফ সদস্যরা আরও জানান ভোমরা বন্দরের রাজ ট্রেডিং, গ্যানজেস, আজাদ ক্লিয়ারিং, মোশাররফ এন্টারপ্রাইজ, ওলি এন্ড ব্রাদার্স, শিউলি এন্টারপ্রাইজ সহ বেশ কয়েকটি সিএ্যান্ডএফ এজেন্ট এই দূর্নীতির সাথে জড়িত থেকে সুবিধা আদায় করে নিচ্ছে। এতে সরকার যেমন রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছেন তেমনি বন্দর ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষ আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে। গত ১০ সেপ্টেম্বর থেকে এই দুর্নীতি ব্যাপক মাত্রায় শুরু হয়েছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে রাজ ট্রেডিংয়ের স্বত্ত্বাধিকারী মো. মন্টু জানান ‘ওজন মেশিনে যে গাড়ি ওঠে তা অনলাইনের মাধ্যমে সরাসরি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড দেখতে পায়। সূতরাং সেখানে চোখের সামনে ওজনে কারচুপি করার কোনো সুযোগ থাকে না। তাছাড়া আমার প্রতিষ্ঠান এমন কোনো দুর্নীতির সাথে জড়িত নয়’। তবে ভোমরা সিঅ্যান্ড এফ অ্যাসোসিয়েশন এর সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান নাসিম জানান ‘ব্যাপক দুর্নীতি সম্পর্কে আমার জানা নেই। তবে বৃষ্টিতে ভিজে ওজনে কিছুটা তারতম্য ঘটে’।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে ভোমরা স্থলবন্দরের সহকারী কমিশনার আমির মোমেন জানান, তিনি এ ধরনের কোন অভিযোগ এখন পর্যন্ত পাননি। যদি এমন কোন অভিযোগ আসে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি বলেন, আমার যোগদানের পর থেকে এমন দুর্নীতি হবার কোন সুযোগ নেই।

পাথরের ওজনে কারচুপি সম্পর্কে জানতে চাইলে ভোমরা বন্দরের রাজস্ব অফিসার মোঃ মহসীন জানান আমরা এ বিষয়ে জিরো টলারেন্সে আছি। কোন ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতি করে কেউ ছাড় পাবে না।

(আরকে/এসপি/সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২০)