রাণীশংকৈল প্রতিনিধি : মিলাররা চুক্তি অনুযায়ী চাল ও লটারীতে নাম উঠা কৃষকরা ধান না দেওয়ায় এবারে সরকারীভাবে ধান চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পুরণ হয়নি ঠাকুরগাঁও রাণীশংকৈল উপজেলায়।  এ উপজেলায় মোট ২৪৭ মিলের মধ্যে ২৪৩টি মিল মালিক চাল দেওয়ার চুক্তি করলেও সমুদয় চাল দিয়েছেন ৬১ জন মিল মালিক। আংশিক চাল দিয়েছেন ৯ জন। ১৭৩ জন মিলার চাল দেন নি। মিল মালিকরা বলছেন, সরকারের নির্ধারিত দামের চেয়ে খোলা বাজারেই চালের দাম বেশি হওয়ায় তারা সরকারকে চাল দেননি। তবে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক নিখিল চন্দ্র বর্ম্মন(অতিরিক্ত দায়িত্বে) জানান, যে মিল মালিকরা চুক্তি করেও চাল দেয়নি। বা যারা আংশিক দিয়েছেন তাদের তালিকা করে ঢাকা হেড অফিসে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে সরকার। এদিকে উপজেলার ২৬ হাজার ৮ শত ৯২ জন কৃষকের মধ্যে লটারী করে ১ হাজার ৭ শত ৩৫ জন কৃষকের ভাগ্য নির্ধারণ করা কৃষকরাও তেমন ধান দেয়নি।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সুত্রে জানা যায়, এবারে বোরো মৌসুমে ২৬ টাকা কেজি দরে এ উপজেলায় ১ হাজার ৭৩৭ মেট্রিক টন ধান ও ৩৬ টাকা কেজি দরে ৩ হাজার ৬ শত মেট্রিক টন সেদ্ব চাল সংগ্রহের জন্য নির্ধারণ করে সরকার। এ লক্ষ্যে উপজেলার ২টি (নেকমরদ-রাজবাড়ী) খাদ্য গুদামে ২৬ এপ্রিল ধান ও ১৫ মে চাল সংগ্রহ শুরু হয়। এর আগে চাল সংগ্রহের জন্য পূর্ব নির্ধারিত দরে ২৪৩টি মিল মালিকের সাথে চুক্তি করেন উপজেলা খাদ্য বিভাগ।

চলতি বছরে চাল ও ধান সংগ্রহের শেষ দিন ছিল ৩১ আগষ্ট । সেদিন পর্যন্ত উপজেলার ২টি খাদ্য গুদামে চাল সংগ্রহ হয় ১ হাজার ৪শত ২০মেট্রিক টন ৯শত ৫০ কেজি। আর ধান সংগ্রহ হয় ২৭মেট্রিক টন ৪শত কেজি। চাহিদা অনুযায়ী ধান চাল সংগ্রহ না হওয়ায় ১৫ সেপ্টম্বর পর্যন্ত সময় বৃদ্ধি করেও লক্ষ্য মাত্রা পুরণ করতে পারেনি খাদ্য বিভাগ।

কয়েকজন মিল মালিক জানান, এবারের মৌসুমে ধানের দাম বেশি। খোলা বাজারে মোটা হাইব্রিড জাতের ধানের কেজি ২০ থেকে ২৪টাকা। তাও আবার চাহিদা অনুযায়ী ধান মিলেনি। তাই চাল দেওয়া সব মিলের পক্ষে সম্ভব হয়ে উঠেনি।

উপজেলা চালকল মিল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সরকার হাসকিং মিলের সাথে চাল নেওয়ার চুক্তি করলেও চাই অটো মিলের আদলে পালিশ করা চাল। এমনিতে বাজারে এবারে ধানের দাম বেশি অন্যদিকে হাসকিং মিলের চাল আবার পালিশ করে বস্তা করতে হয়। এতে একজন মিলারের বস্তা প্রতি দেড় থেকে দুইশত টাকা অতিরিক্ত খরচ হয়। সব মিলেই লোকসানের কথা ভেবে অনেক মিলার এবারে চাল দেয়নি।

(কেএস/এসপি/অক্টোবর ০২, ২০২০)