তপু ঘোষাল (সাবার উপজেলা) : রাজধানীর সন্নিকটে সাভারের আশুলিয়ায় বেড়াতে গিয়ে দুই বান্ধুবী কিশোর গ্যাংয়ের হাতে গণধর্ষণের শিকার হয়েছে। ঘটনার প্রায় ৩৫ দিন পর হয় ভিডিও ফাঁস। বিষয়টি নজরে আসলে অভিযান চালিয়ে কিশোর গ্যাংয়ের দলনেতা সারুফসহ ৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

বুধবার (৭ অক্টোবর) ভোর রাতে আশুলিয়ার ভাদাইল ও নয়ারহাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। বুধবার সকালে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন আশুলিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জিয়াউল ইসলাম।

আটককৃতরা হলো- সারুফ,জাকির, রাকিব ও ডায়মন্ড আলামিন। তারা ভাদাইল এলাকায় বসবাস করে। দলনেতা সারুফকে খুলনা থেকে আটক করা হয়।

খবর নিয়ে জানা যায়, গত ৩০ আগষ্ট আশুলিয়ার ভাদাইলের পবনার টেক এলাকায় প্রতিবেশি দুই তরুণকে নিয়ে দুই কিশোরী বান্ধবী বেড়াতে যায়। পরে কিশোর গ্যাং সারুফের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১২ জন কিশোরীদের সঙ্গে থাকা দুই তরুণকে বেধড়ক মারধর করে তাড়িয়ে দেয়। পরে দুই কিশোরীকে গণধর্ষণ করে ভিডিও ধারণ করে। পরে বিষয়টি সারুফের বাবা আকরাম হোসেন টাকার বিনিময়ে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে। এদিকে তাদের হুমকিতে ভয়ে এক কিশোরি নিজ গ্রামে চলে যায়।

এ বিষয়ে ঘটনার দিন হামলার শিকার আহত তরুণ জানান, তারা বেড়াতে গেলে কয়েকজন কিশোর এসে তাদের পরিচয় জানতে চায়। মেয়েদের সাথে তাদের কি সম্পর্ক জানতে চায়। তাদের আত্বীয় পরিচয় দিলেও তারা কোন কিছু শুনতে না চেয়ে তাদের বেদম মারধর করে তাড়িয়ে দেয়। ও কাউকে এই ঘটনা বললে মেরে ফেরার হুমকি দেয়। তবে কিশোরীদের আটকে রাখে।পরে কি হয়েছে তাদের জানতে পারেনি। তবে ভিডিও ফাঁস হওয়ার ঘটনার মধ্য দিয়ে বিষয়টি জানতে পারি।

এ বিষয়ে ধর্ষক জাকিরের বাবা আনসার আলী জানান, সারুফের বাবা আকরাম আলী মাধ্যমে জানতে পারি আমার ছেলে জাকিরসহ কয়েকজন ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে আমার থেকে সাড়ে ৮ হাজার টাকা দেই।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কিশোর গ্যাংয়ের নেতৃত্বে দেয় সারুফ। তার সহযোগিতা জাকির, রাবিক, আলামিন, ডায়মন্ড আলামিন, রেদওয়ান ও জিদানসহ আরও কয়েকজন এ ঘটনা জড়িত। মূলত কিশোর গ্যাং এর নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্বের জের ধরে তাদের ধারণ করা ভিডিও ফাঁস করে দেয়া হয়। সেই ঘটনার সূত্র ধরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৪ জনকে আটক করে।

এ বিষয়ে আশুলিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক জিয়াউল ইসলাম আরও জানান, ভুক্তভোগী এক কিশোরীকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে এবং সে ঐ হামলায় জড়িত দুই তরুণকে শনাক্ত করেছে। তবে এক কিশোরী না দুইজনই ধর্ষণের শিকার হয়েছে বিষয়টি তদন্ত স্বাপেক্ষে বলা যাবে। তাদের সঙ্গে ও তাদের পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে আইন ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া চলছে। এ ঘটনায় বাকীদের আটকের অভিযানও অব্যাহত রয়েছে।

(টিজি/এসপি/অক্টোবর ০৭, ২০২০)