আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : আগৈলঝাড়ায় উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শারদীয় দূর্গা পুজার আইন শৃংখলা বিষয়ক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৬০টি মন্ডপে দূর্গা পুজার প্রস্তুুতি নিয়ে বরিশাল বিভাগের সবচেয়ে বেশি পূজা অনুষ্ঠিত হবে জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলায়।

বুধবার সকাল এগারোটায় উপজেলার শহীদ সুকান্ত আবদুল্লাহ হল রুমে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রওশন ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পুজার আইন শৃংখলা বিষয়ক সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যারম্যান মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রইচ সেরনিয়াবাত।

অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উপজেলা পুজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সুনীল কুমার বাড়ৈ, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আবু সালেহ মো. লিটন, থানা অফিসার ইন চার্জ মো. গোলাম সরোয়ার, ভাইস চেয়ারম্যান মলিনা রানী রায়, রফিকুল ইসলাম তালুকদার, উপজেলা পুজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও বাকাল ইউপি চেয়ারম্যান বিপুল দাস, রাজিহার ইউপি চেয়ারম্যান ইলিয়াস তালুকদার, পুজা উদযাপন পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক ও যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক অনিমেষ মন্ডলসহ বিভিন্ন মন্দিরের পুজারীবৃন্দ।

বক্তারা মন্ডপে মন্ডপে নিরাপত্তার জন্য নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী গঠন, দর্শনার্থী ও পুজারীদের বাধ্যতামুলক মাস্ক ব্যবহার ও উদ্বুদ্ধ করণ, মন্ডপ মালিকদের হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবস্থা নিশ্চিত করণসহ করোনা মোকাবেলার স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করে মন্ডপে অধিক লোক সমাগম ঘটানোর জন্য নিরুৎসাহিত করেন।

সভায় কেন্দ্রীয় পুজা উদযাপন পরিষদের ২৬দফা সম্বলিত লিফলেট বিতরণ করা হয়, ওই লিফলেটের নির্দেশনা মেনে পুজা করার আহ্বান জানানো হয়। ওই সভায় জাতির পিতার ভাগ্নে, মন্ত্রী আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ এমপি’র রোগ মুক্তি ও দ্রুত সুস্থতা কামনায় অষ্টমী পুজার অঞ্জলী প্রদান শেষে সকল মন্দিরে তার রোগ মুক্তির জন্য ভক্তদের বিশেষ প্রার্থণা সভার করার সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়।

সূত্র মতে, এ বছর রাজিহার ইউনিয়নে ৪৮টি, বাকাল ইউনিয়নে ৩৯টি, বাগধা ইউনিয়নে ২৪টি, গৈলা ইউনিয়নে ২৫টি ও রত্নপুর ইউনিয়নে ২৪টি পুজা মন্ডপসহ সর্বমোট ১৬০টি মন্ডপে পূজার জন্য প্রতীমা নির্মানের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। চলছে রং তুলির কাজ। গত বছর পুজা মন্ডপের সংখ্যা ছিল ১৫৫টি।

পুজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিপুল দাস বলেন, সরকারী নির্দেশনা ব্যতীত পুজা করার কোন সুযোগ নেই। তাই সরকারী নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য সর্বাত্মক কঠোরতা অবলম্বন করা হবে। কোথাও নির্দেশনার ব্যত্যয় ঘটলে তাৎক্ষনিক তার যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মোর্শারফ হোসেন জানান, প্রতি পুজা মন্ডপের অনুকূলে সরকারি সাহায্য হিসেবে ৫শ কেজি করে জিআর চাল বুধবার বরাদ্দ পাওয়া গেছে।

আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা রেদোয়ান হোসেন জানিয়েছেন, অন্যান্য বছরের মতো এ বছর সরকারীভাবে প্রতি মন্ডপে নিরাপত্তার জন্য আনসার দেয়ার কোন নির্দেশনা এখন পর্যন্ত তিনি পাননি। তবে ৫/৬জনের একটি গ্রুপ করে ১৫/১৬টি সশস্ত্র গ্রুপের আনসার সদস্যরা মোবাইল টিমের মাধ্যমে পুজার নিরাপত্তা প্রদান করবে।

থানা অফিসার ইন চার্জ মো. গোলাম সরোয়ার জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় পুজা উদযাপন পরিষদের ২৬দফা ও জেলা পুলিশের নির্দেশনা অনুযায়ি পুজায় লাইটিং, মাইক, সাউন্ড সিস্টেম, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ব্যতীত শুধু ধর্মীয় ভাব গাম্ভির্যের মাধ্যমে পুজা করার জন্য পুজারীদের আহ্বান জানানো হয়েছে। পুলিশের তালিকার গুরুত্বপূর্র্ণ ও উপজেলার চারদিকের বর্ডার এলাকার মন্ডপগুলো বিশেষ বিবেচনায় নিয়ে নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। ওই সকল গুরুত্বপূর্ণ মন্ডপসহ উপজেলার সকল পুজা মন্ডপগুলো নিরাপত্তার ব্যবস্থা জোরদার করা হবে। তিনি আরও বলেন, দূর্গা পুজায় যে কোনো ধরনের নাশকতা ও বিশৃংখলা এড়াতে আইন শৃংখলা বাহিনীর পক্ষ থেকে মোবাইল টিমের মাধ্যমে নিরাপত্তার নিশ্চিত করা হবে।

উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রইচ সেরনিয়াবাত জানান, নির্বিঘেœ পুজা ও পুজার ধর্মিয় আচার-অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে। তবে মন্ডপীদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বর্জনের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় পুজা উদযাপন পরিষদের ২৬দফা প্রতিপালনের জন্য উপজেলার সকল মন্ডপীদের বিশেষ ভাবে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ওই সকল নির্দেশনা প্রতিপালনের মাধ্যমে পুজা অনুষ্ঠিত হলে কোন অপ্রিতীকর ঘটনা ছাড়াই ধর্মীয় ভাব-গাম্ভির্যের মাধ্যমে পুজার অনুষ্ঠান সম্পন্ন করা যাবে বলেও মত প্রকাশ করেন তিনি।

(টিবি/এসপি/অক্টোবর ১৪, ২০২০)