নীলফামারী প্রতিনিধি : চরম দুর্ভোগে দিন কাটছে তিস্তায় বানভাসী মানুষের। বন্যার পানি নেমে গেলেও দুর্ভোগ কাটেনি এসব মানুষের। বানভাসী মানুষের তালিকা করে ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলার বন্যাকবলিত মানুষের জন্য ২০ মেট্রিক টন চাল ও ৪০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হলেও রবিবার পর্যন্ত ত্রাণ পৌঁছায়নি বন্যার্তদের কাছে।

রবিবার নীলফামারীর ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি কিছুটা কমে সকাল ছয়টা থেকে বিপদসীমার (৫২.৪০ মিটার) ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পানি আরো কমে বিকাল তিনটায় তা বিপদসীমা বরাবর প্রবাহিত হয়েছে।

এদিকে উজানের ঢলের সঙ্গে ভারী বর্ষণ যেন আরো অসহায় করেছে তিস্তাপাড়ের মানুষদের। গত চার দিন থেকে তিস্তাপাড়ের হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি থাকার পর পানি নেমে গেলেও তারা রয়েছেন চরম দুর্ভোগে।

এসব মানুষের খাদ্য সংকটের সঙ্গে দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানীয় জলের অভাব। অনাহার-অর্ধাহারে দিন যাপন করছে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার বানবাসী মানুষ। দুর্গতদের মাঝে বিশেষ করে শুকনা খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সরবরাহ করা জরুরি হয়ে পড়েছে।

এলাকার জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, এখনও তারা বন্যা কবলিতদের জন্য কোনো ত্রাণ সহায়তা হাতে পাননি।

নীলফামারী জেলা প্রশাসক জাকীর হোসেন জানান, বন্যা কবলিত ডিমলা উপজেলার জন্য ১৫ মেট্রিক চাল ও ৩০ হাজার টাকা এবং জলঢাকা উপজেলায় পাঁচ মেট্রিক টন চাল ও ১০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা নিজ নিজ এলাকায় এসব বিতরণ করবেন।

ডালিয়া ডিভিশনের পানি উন্নয়ন বোর্ড-পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার বিকাল তিনটায় তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার (৫২.৪০ মিটারের) পাঁচ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে এবং শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টায় বিপদসীমার ২৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।

সবশেষ শুক্রবার রাত ১২টায় পানি বিপদসীমার ৩৮ সেন্টিমিটার (৫২.৭৮ মিটার) ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। ব্যারেজ রক্ষার্থে ফ্লাড ফিউজের আশপাশে বসতবাড়ির লোকজনদের মাইকিং করে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলা হয়।

তবে শনিবার সকাল থেকে তিস্তার পানি আবার কমতে শুরু করে। রবিবার সকাল থেকে পানি বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও বিকাল তিনটায় তা আরো কমে বিপদসীমা বরাবর প্রবাহিত হয়েছে বলে জানান পাউবো কর্মকর্তা।

ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান জানান, তিস্তার ঢলে তার ইউনিয়নের ঝাড়সিংহেরশ্বর ও পূর্ব ছাতনাই গ্রামের সাত শতাধিক পরিবারের দুই সহস্রাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে।

এছাড়াও ডিমলা উপজেলার টেপাখড়িবাড়ি, খগাখড়িবাড়ি, গয়াবাড়ি, খালিশা চাপানী, ঝুনাগাছ চাপানী ও জলঢাকা উপজেলার ডাউয়াবাড়ি, শৌলমারী ও কৈমারী ইউনিয়নের প্রায় ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী এসব গ্রামের মানুষের মাঝে খাদ্য সংকট বিরাজ করছে।

(ওএস/এইচআর/আগস্ট ১৮, ২০১৪)