স্টাফ রিপোর্টার : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জো বাইডেনের মধ্যকার চূড়ান্ত বিতর্কে এবার মাইক্রোফোন বন্ধের সুযোগ রাখা হয়েছে। তাদের দু'জনের প্রথমবারের উত্তপ্ত বিতর্কের পরেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বিতর্কের দায়িত্ব থাকা প্রেসিডেন্সিয়াল ডিবেটস কমিশন এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে নিরবচ্ছিন্নভাবে কথা বলতে দেওয়ার জন্যই মাইক্রোফোন বন্ধ করে দেওয়ার নিয়ম চালু করা হয়েছে।

সোমবার আয়োজকরা জানান, প্রথম বিতর্কের মতো বিশৃঙ্খলা এড়াতে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী বৃহস্পতিবার টেনেসির ন্যাশভিলে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর মধ্যে চূড়ান্ত বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে। সর্বশেষ এই বিতর্কটি আগামী ৩ নভেম্বরের ভোটের আগে ভোটারদের কাছে পৌঁছানোর শেষ সম্ভাবনা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

প্রেসিডেন্সিয়াল ডিবেটস কমিশন জানিয়েছে, বৃহস্পতিবারের বিতর্কে প্রত্যেক প্রার্থী ১৫ মিনিট করে ছয়টি বিভাগে মোট ৯০ মিনিট বিতর্ক করবেন।

বিতর্কের শুরুতে দুই প্রার্থীই দুই মিনিট করে বলার সুযোগ পাবেন। একজন বক্তব্য দেওয়ার সময় অন্য প্রার্থীর মাইক্রোফোন বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণা দল ইতোমধ্যেই বিতর্কের নিয়ম পরিবর্তনের বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছে।

গত ২৯ সেপ্টেম্বর প্রথম বিতর্কে অংশ নিয়েছিলেন ট্রাম্প এবং বাইডেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, মার্কিন ইতিহাসে এত উত্তপ্ত বিতর্ক আর হয়নি। ওই বিতর্কে ট্রাম্প একাধিকবার বাইডেনকে থামিয়ে দিয়ে কথা বলার চেষ্টা করেছেন। অপরদিকে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে একের পর এক অপমানজনক শব্দ ব্যবহার করেছেন বাইডেন। মূলত ওই বিতর্কে দুই প্রার্থীর এমন আচরণকে কেন্দ্র করেই নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

এবারের বিতর্কে কেউ কাউকে থামানোর চেষ্টা করলেই মিউট সুইচ ব্যবহার করে তাকে চুপ করিয়ে দেওয়া হবে। এই বিতর্ককে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যেই উত্তাপ ছড়াতে শুরু করেছে। ট্রাম্প বলছেন, যে বিষয়গুলো বিতর্কের জন্য নির্বাচন করা হয়েছে, তা পক্ষপাতমূলক। অপরদিকে বাইডেনের মতে, করোনা নিয়ে কথা বলতে চাইছেন না ট্রাম্প। কারণ এসব নিয়ে বলতে গেলেই নিজের ব্যর্থতা প্রকাশ পেয়ে যাবে।

বিতর্কের বিষয় নির্বাচন করে দেয় বিতর্ক কমিটি। এ বছর আমেরিকার নাগরিকরা সবচেয়ে বেশি আলোচনা চাইছেন করোনা নিয়ে। সে কারণেই প্রতিটি বিতর্কেই করোনার প্রসঙ্গ রাখা হচ্ছে। গত বিতর্কে ট্রাম্প বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রে করোনার প্রকোপ কমতে শুরু করেছে। কিছুদিনের মধ্যেই সব স্বাভাবিক হয়ে যাবে। কিন্তু গত কয়েকদিনে দেশটিতে নতুন করে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। বলা হচ্ছে, ইউরোপের মতো যুক্তরাষ্ট্রেও করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে।

আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে ঘিরে তিনটি নির্বাচনী বিতর্ক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও স্বাস্থ্যঝুঁকি বিবেচনা করে দ্বিতীয় বিতর্ক অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়। আয়োজকরা জানিয়েছেন, করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর ট্রাম্প ভার্চুয়ালি বির্তকে অংশ নিতে রাজি না হওয়ায় ১৫ অক্টোবরের বিতর্কটি বাতিল করা হয়। ট্রাম্পের মতে, এমন বিতর্ক করে তিনি সময় নষ্ট করতে চান না। কম্পিউটারের সামনে বসে বিতর্ক করা তার কাছে হাস্যকর বলে মনে হয়।

(ওএস/এসপি/অক্টোবর ২০, ২০২০)