পাথরঘাটা (বরগুনা) প্রতিনিধি : বরগুনার পাথরঘাটায় সুমন সেন নামে এক হিন্দু ব্যবসায়ীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালামাল লুটের অভিযোগে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিচারক মামলাটির  তদন্তের জন্য পটুয়াখালী পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)কে  নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলায় হিন্দু নেতা ও ঘর মালিকসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে পাথরঘাটা সিনিয়র ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেন ব্যবসায়ী সুমন সেন।

পটুয়াখালী পিবিআই পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছেন।

অভিযুক্তরা হলেন, ঘর মালিক বাবুল শেখ (৫৭), পাথরঘাটা উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ও পাথরঘাটা উপজেলা বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অরুণ কর্মকার (৬০) এবং অরুণ কর্মকারের ঘনিষ্ঠ সহযোগী শিবলাল কর্মকার (৪৫)।

সুমন সেন পাথরঘাটা শহরের মেসার্স শ্রী গুরু ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের স্বত্বাধিকারী ও পাথরঘাটা পৌর এলাকার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের অরুণ সেনের ছেলে।

জানা গেছে, পাথরঘাটা কেন্দ্রীয় কালীবাড়ি মন্দির সংলগ্ন বাবুল শেখ এর দোকান ঘরটি ৩ বছর মেয়াদে লিখিত চুক্তিতে ভাড়া নেয় সুমন সেন। ২০১৮ সালের ১৪ এপ্রিল থেকে ওই ঘরে তিনি ব্যবসা শুরু করেন। সাড়ে সাত মাস পর সুমনের এক আত্মীয় ভারতে অসুস্থ হয়ে পড়ায় ওই বছরের ৩ ডিসেম্বর সে ভারতে চলে যায়। এ সুযোগে ২০১৮'র ২৫ ডিসেম্বর ওই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আগুনের ধোঁয়া বেরোচ্ছে এমন মিথ্যা তথ্য দিয়ে ওই দোকানের সকল মালামাল সরিয়ে নেয়া হয়। প্রথমে সুমনের বাবা অরুণ কুমারের নিকট থেকে চাবি এনে দোকান ঘর খুলে ওই মালামাল অন্যত্র সরিয়ে নেন প্রতিপক্ষরা। এ সময় ঘর মালিক বাবুল শেখের নেতৃত্বে ওই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালামাল লুট করেন পাথরঘাটা উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অরুন কর্মকার ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী শিবলাল কর্মকার। এ ঘটনায় গত ৯ সেপ্টেম্বর পাথরঘাটা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করা হয়।

সুমন সেন বলেন, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে নিত্যপ্রয়োজনীয় চাল ডাল তেল ও কসমেটিক্স সামগ্রীসহ প্রায় ১৩ লাখ ৬৮ হাজার ৬৪২ টাকার মালামাল লুট করে নেন প্রতিপক্ষরা। এতে ওই ব্যবসা প্রতিষ্ঠান অগ্রিম বাবদ ১ লাখ টাকাসহ ওই দোকান ঘর ডেকারেশন বাবদ ১ লাখ ৭২ হাজার ৩০০ টাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

সুমনের পার্শ্ববর্তী বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, আমরা ওই দোকানের মালামাল সামগ্রী ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ডেকোরেশন সামগ্রী প্রতিপক্ষদের বিক্রি করতে দেখেছি। এ ঘটনায় আমরা হতবাক হয়ে দেখা ছাড়া কিছু করার ছিল না।

অভিযোগ প্রসঙ্গে ঘর মালিক বাবুল শেখ বলেন, আমি ঘর ভাড়া বাবদ অগ্রিম দেয়া ওই ১ লাখ টাকা নিয়েছি। ওই দোকান ঘরটি আমি অরুণ বাবুর কাছে বিক্রি করেছি। ওই ঘর তাকে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে।

পাথরঘাটা উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অরুণ কুমার কর্মকার বলেন, এ ঘটনায় আমার কোন মন্তব্য নেই। যখন মামলা করা হয়েছে তখন আইনে যা হয় সেটাই হোক।

পটুয়াখালী পিবিআই পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, আদালতের নির্দেশে মামলার তদন্তভার পেয়ে আমরা তদন্ত শুরু করেছি। শতভাগ স্বচ্ছতার সঙ্গে তদন্ত শেষ করে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

(এটি/এসপি/অক্টোবর ২০, ২০২০)