স্টাফ রিপোর্টার : রূপপুর পারমাণকি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের প্রথম ইউনিটের মূল যন্ত্রপাতি নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল এবং একটি স্টিম জেনারেটর বাংলাদেশের মোংলা বন্দরে চলে এসেছে।

মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, সমুদ্রপথে রাশিয়ান ফেডারেশনের ভলগা থেকে প্রায় ১৪ হাজার কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে এসব যন্ত্রপাতি গতকাল (১৯ অক্টোবর) সকাল ১১টায় বাংলাদেশের মোংলা সমুদ্র বন্দরের বহির্নোঙ্গরে পৌঁছায়। আজ (মঙ্গলবার) বিকেল ৪টায় এসব যন্ত্রপাতি মোংলা বন্দরে পৌঁছে।

এসব যন্ত্রপাতি রাশিয়ান ফেডারেশনের সমুদ্রগামী জাহাজ থেকে বাংলাদেশের স্থানীয় বিশেষ বার্জে স্থানান্তর করা হবে। আশা করা হচ্ছে, আগামী ৫ নভেম্বর মোংলা বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করবে। নদীপথে চাঁদপুর হয়ে আনুমানিক ২১ নভেম্বর পদ্মাপাড়ে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প এলাকায় নবনির্মিত রূপপুর নৌ-বন্দরে পৌঁছাবে এসব যন্ত্রপাতি।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল এবং স্টিম জেনারেটরের মতো বড় ইক্যুপমেন্টের চালান দেশে পৌঁছানো প্রকল্পের একটি বড় অগ্রগতি।

২০১৩ সালের অক্টোবরে ঈশ্বরদীর রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১৮ সালের ৩০ নভেম্বর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের চুল্লির জন্য কংক্রিটের মূল স্থাপনা নির্মাণের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।

এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন প্রথম ইউনিট ২০২২ সালে এবং একই ক্ষমতার দ্বিতীয় ইউনিট ২০২৩ সালে চালু হবে। সরকার ২০২৩ সালে প্রথম এবং ২০২৪ সালে দ্বিতীয় ইউনিট নির্মাণপ্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে বুঝে নেবে।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে ২০১৫ সালের ২৫ ডিসেম্বর রাশিয়ার প্রতিষ্ঠান অ্যাটমস্ট্রয় এক্সপোর্টের সঙ্গে মূল চুক্তি সই করে বাংলাদেশের পরমাণু শক্তি কমিশন। চুক্তি অনুযায়ী, দুই হাজার ৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন এ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে ব্যয় হবে এক লাখ কোটি টাকার কিছু বেশি (এক হাজার ২৬৫ কোটি মার্কিন ডলার)।

রূপপুরের প্রকল্প এলাকায় এক হাজার ৬২ একর জমির ওপর চলছে বিপুল কর্মযজ্ঞ। প্রথম পর্যায়ের বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে।

বাংলাদেশের প্রথম পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মিত হচ্ছে রুশ সহায়তায়। এ প্রকল্পে মোট ব্যয়ের ৯০ শতাংশই ঋণ সহায়তা হিসেবে দিচ্ছে রাশিয়া। প্রকল্পে রুশ উদ্ভাবিত সর্বাধুনিক (থ্রি প্লাস জেনারেশন) ‘ভিভিইআর ১২০০’ প্রযুক্তির পারমাণবিক চুল্লি ব্যবহার করা হবে। একেকটি চুল্লি ১২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন।

পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটের মূল অবকাঠামোর নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৮ সালের ১৪ জুলাই। ওইদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম কংক্রিট ঢালাইয়ের (ফার্স্ট কংক্রিট পৌরিং ডে-এফসিডি) উদ্বোধন করেন।

(ওএস/এসপি/অক্টোবর ২০, ২০২০)