নিউজ ডেস্ক : ১১ দফা দাবি আদায়ে সারাদেশে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরুর পর মালিক পক্ষ নৌযান-শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বন্ধের হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন চট্টগ্রাম জেলা নৌশ্রমিক অধিকার সংরক্ষণ ঐক্য পরিষদের সহ-সভাপতি মো. নবী আলম।

তবে মালিকপক্ষের এ হুমকিকে আমলে নিচ্ছেন না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এ ধর্মঘটের জন্য যদি জেল-জুলুমও সহ্য করতে হয়, সেজন্য আমরা প্রস্তুত আছি। আর শ্রমিকরা জাহাজে থাকলে তাদের মজুরি চালাতে হবে। মালিকপক্ষ যদি নৌযান-শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বন্ধের চিন্তা করে, তাহলে তারা নিজেদের জাহাজ নিজেরাই পাহারা দিক। আমরা সকলে জাহাজ থেকে নেমে আসব।’

বুধবার (২১ অক্টোবর) সকালে মুঠোফোনে এসব কথা বলেন নৌশ্রমিক নেতা নবী আলম।

প্রসঙ্গত, বেতন-ভাতার সুযোগ-সুবিধাসহ ১১ দফা দাবি আদায়ে মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে সারাদেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য নৌযান-শ্রমিকদের ধর্মঘট শুরু হয়। বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের আওতাধীন আটটি সংগঠন এ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে বিদেশ থেকে গম, ভুট্টা, ডাল, সার, চিনি, সিমেন্ট ক্লিংকার, পাথর, কয়লা, ভোজ্যতেল ইত্যাদি খোলাপণ্য বড় কার্গো জাহাজে আমদানি করা হয়। কর্ণফুলী নদীর ড্রাফট কম থাকায় এসব বড় জাহাজ সরাসরি বন্দর জেটিতে ভিড়তে পারে না। তাই বহির্নোঙরে (সাগরে) অপেক্ষমাণ রেখে ছোট ছোট জাহাজে (লাইটার, ট্যাংকার) খালাস করে নদীপথে বিভিন্ন নদীবন্দর ও শিল্পকারখানার ঘাটে নিয়ে যাওয়া হয়। নৌযান শ্রমিকদের কর্মবিরতির কারণে পণ্যবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ায় বিভিন্ন শিল্পকারখানার কাঁচামাল এবং বাল্কে আনা ভোগ্যপণ্য পরিবহন কার্যত বন্ধ রয়েছে।

শ্রমিক ফেডারেশনের ১১ দফা দাবি হলো-


১. বাল্কহেডসহ সব নৌযান ও নৌপথে চাঁদাবাজি-ডাকাতি বন্ধ করা।

২. ২০১৬ সালে ঘোষিত গেজেট অনুযায়ী নৌযানের সর্বস্তরের শ্রমিকদের বেতন প্রদান।

৩. ভারতগামী শ্রমিকদের ল্যান্ডিং পাস এবং মালিক কর্তৃক খাদ্যভাতা প্রদান।

৪. সব নৌযান শ্রমিকের সমুদ্র ও রাত্রিকালীন ভাতা নির্ধারণ।

৫. এনডোর্স, ইনচার্জ, টেকনিক্যাল ভাতা পুনর্নির্ধারণ।

৬. কর্মস্থলে দুর্ঘটনায় নিহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ ১০ লাখ টাকা নির্ধারণ।

৭. প্রত্যেক নৌশ্রমিককে মালিক কর্তৃক নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র ও সার্ভিস বুক প্রদান।

৮. নদীর নাব্য রক্ষা ও প্রয়োজনীয় মার্কা, বয়া ও বাতি স্থাপন।

৯. মাস্টার/ড্রাইভার পরীক্ষা, সনদ বিতরণ ও নবায়ন, বেআইনি নৌচলাচল বন্ধ করা।

১০. নৌপরিবহন অধিদফতরে সব ধরনের অনিয়ম ও শ্রমিক হয়রানি বন্ধ এবং

১১. নৌযান শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

(ওএস/এসপি/অক্টোবর ২১, ২০২০)