রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি : নওগাঁর রাণীনগরে কাফনের কাপর পড়িয়ে প্রস্তুতি নিলেও শেষ পর্যন্ত দাফন করতে পারেনি জহুরুল ইসলাম (৫২) কে। জহুরুলের মৃত্যু নিয়ে নানা রকম গুঞ্জন উঠায় অবশেষে সোমবার রাতে রাণীনগর থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মঙ্গলবার সকালে মর্গে পাঠিয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে রাণীনগর উপজেলার কালীগ্রাম ইউনিয়নের শিবের মাধাইমুড়ি গ্রামে। মৃত জহুরুল ইসলাম ওই গ্রামের লোকমান আলীর ছেলে। এ ঘটনায় এলাকায় তোলপার সৃষ্টি হয়েছে। 

জানা গেছে, রবিবার রাতে জহুরুল স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে রাতের খাবার খেয়ে এক সাথে ঘুমিয়ে পরে। রাত অনুমান ১২টা নাগাদ হঠাৎ করেই বমি করতে করতে অসুস্থ্য হয়ে পরে জহুরুল। এ সময় তার স্ত্রী মরিয়ম পরিবারের লোকজনকে ডেকে তুলে রাতেই জহুরুলকে আদমদীঘি হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার তাকে মৃত্যু ঘোষণা করে। মারা যাবার পর থেকেই তার মৃত্যু নিয়ে নানা রকম গুঞ্জন চলতে থাকে।

এদিকে সোমবার বাদ যোহর নামাযে যানাজা শেষে দাফন করা হবে এমন সময় নির্ধারণ করা হয়। সকালে গোসল দিয়ে দাফনের জন্য কাফনের কাপর পড়ানো হয়। কিন্তু ততক্ষনে লাশ দাফনে বাধা হয়ে দ্বাড়ায় পরিবারের লোকজন। কখনো কথা ওঠে জহুরুলকে বিষ খাইয়ে হত্যা করা হয়েছে। আবার কখনো কথা ওঠে সে আতœহত্যা করেছে। এছাড়া জহুরুল হার্ড স্টোক করে মারা গেছে বলে সকাল থেকেই প্রচার চলে। অবশেষে টানা হেছরার এক পর্যায়ে সন্ধ্যার দিকে জহুরুলের ছেলে মিজানুর রহমান বাদি হয়ে সোমবার রাণীনগর থানায় ইউডি মামলা দায়ের করলে রাতেই পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

জহুরুলের স্ত্রী মরিয়ম বলেন, তার স্বামী দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ্য ছিলো। রাতে ঘুম থেকে ওঠে দেখে রক্ত বমি করছে। এসময় আদমদীঘি হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যায়। তবে তার স্বামী বিষক্রিয়ায় নাকি অসুস্থ্যতা জনিত কারনে মারা গেছেন তা বলতে পাররেননি তিনি। তিনি দাবি করে আরো বলেন, স্বামী মারা যাবার পর স্বামীর জায়গা-জমির যে অংশ আমি পাবো সেটা ছেলেরা দিবে না। তাই আমার প্রতি নানা রকম অভিযোগ তুলে লাশ ময়না তদন্তে পাঠাচ্ছে।

জহুরুলের ছেলে নুরে আলমের স্ত্রী শারমিন আক্তার বলেন, শ্বশুর দীর্ঘ প্রায় ১০-১২ বছর ডুবাই ছিলেন। সে সময় যে পরিমান টাকা ইনকাম করেছেন সবগুলো টাকা শ্বাশুড়ী কোথায় কি করেছে তার কোন হিসেব দিতে পারেনি। এটা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে শ্বশুর-শ্বাশুড়ীর মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। আমার শ্বশুরের মৃত্যুকে আমার শ্বাশুড়ী স্বাভাবিক বলে প্রচার করলেও আমাদের কাছে অস্বাভাবিক বলে মনে হয়েছে। রাতেই শ্বশুরের মুখ থেকে বিষের গন্ধ পেয়েছি তাই লাশ ময়না তদন্তের জন্য সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে রাণীনগর থানার ওসি মো: জহুরুল হক বলেন, এ ঘটনায় একটি ইউডি মামলা দায়ের করা হযেছে। রাতেই লাশ উদ্ধার করে মঙ্গলবার ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ময়না তদন্তের রিপোট হাতে আসলেই বোঝা যাবে কিভাবে তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

(এসকেপি/এসপি/অক্টোবর ২৭, ২০২০)