আবীর আহাদ


"বিদ্যমান জামুকা আইন লঙ্ঘন করে যাদের মুক্তিযোদ্ধার গেজেট জারি করা হয়েছে তাদের তথ্য পুনরায় যাচাই-বাছাই করা হবে। ২০০২ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত কোনো রকম যাচাই-বাছাই ছাড়াই মুক্তিযোদ্ধার গেজেট করা হয়েছে। আমরা সেগুলো জেলা-উপজেলা ও মহানগর কমিটির মাধ্যমে পুনরায় যাচাই করব। যারা মুক্তিযোদ্ধার স্বপক্ষে তথ্য-উপাত্ত হাজির করতে পারবেন, তাদের গেজেট বহাল থাকবে। আর যারা প্রমাণ করতে পারবেন না, তাদের গেজেট ও সনদ বাতিল করা হবে।"

আকম মোজাম্মেল হক, মন্ত্রী, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় । সূত্র : দৈনিক মুক্ত আলো, ২৭ অক্টোবর ২০২০

"আপনার গঠিত ২০১৭ সালের জেলা, উপজেলা ও মহানগর মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি পুরোটাই বিশাল আর্থিক দুর্নীতি কেলেঙ্কারি অনিয়ম ও বিশৃঙ্খলা দোষে দুষ্ট । ২০০২ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত গেজেটভুক্ত ৫৫ হাজার বিতর্কিত মুক্তিযোদ্ধার তথ্য-উপাত্ত যাচাই বাছাইয়ের দায়িত্ব ভার আপনার তৈরিকৃত ঐ তথাকথিত কমিটির এখতিয়ারে দেয়ার অর্থ শেয়ালের কাছে মুরগি গচ্ছিত রাখার সামিল । অতীতে ঐসব কমিটির যে পরিচয় ও কর্মফল আমরা জেনেছি, তাতে করে একই বিশাল আর্থিক দুর্নীতি কেলেঙ্কারি অনিয়ম ও বিশৃঙ্খলা দুষ্টে ঐ ৫৫ হাজার বিতর্কিত মুক্তিযোদ্ধা 'সঠিক মুক্তিযোদ্ধা' বলে সার্টিফায়েড হয়ে আসবে । অতীতে সংগতকারণে যেমন তাদের সুপারিশ আপনি বাতিল করেননি, এবারও একই সংগতকারণে তা বাতিল করবেন না ! তারা সসম্মানে সাবেক তালিকায় বহাল হয়ে যাবে-----

আমার কথা পরিষ্কার । সত্যিকার অর্থে যদি আপনি এদের মুক্তিযোদ্ধা সঠিকতা যাচাই করতে চান, তাহলে বঙ্গবন্ধুর ৭২ সালের মুক্তিযোদ্ধা সংজ্ঞার আলোকে প্রত্যেক জেলা, উপজেলা ও মহানগরে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে সেখানে মুক্তিযুদ্ধকালীন সুপরিচিত ৩ জন কমাণ্ডার, বর্তমান সেনাবাহিনীর মেজর পদমর্যাদার ১ জন করে সেনা RAB ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের সম্পৃক্ত করতে পারেন ।

২০০২ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত যাচাই বাছাই সম্পন্ন করার পর ২০১৪ থেকে অদ্যাবধি পর্যন্ত যাদেরকে আপনার নেতৃত্বে জামুকা মুক্তিযোদ্ধা হিশেবে গেজেটভুক্ত করেছেন, তাদেরকে একই প্রক্রিয়ায় ঐ বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটির মাধ্যমে যাচাই করতে পারেন । পরবর্তীতে ঠিক একই প্রক্রিয়ায় যেখানে যেমন প্রযোজ্য, সে-নিরিখে লাল মুক্তিবার্তার মধ্যে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তাদেরসহ, বিভিন্ন বাহিনী গেজেট, নৌকমাণ্ডো, মুজিবনগর কর্মচারী, স্বাধীনবাংলা বেতার, ফুটবল ও অন্যান্য গেজেটধারীদের বিষয়েও বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটির মাধ্যমে যাচাই করতে পারেন ।

আমি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী মহোদয়ের কাছে বিনীতভাবে মিনতি করছি, আপনি যদি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী হোন, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মর্যাদা সমুন্নত রাখতে চান, মুক্তিযোদ্ধা তালিকা থেকে অমুক্তিযোদ্ধাদের উচ্ছেদ করতে চান এবং সর্বোপরি এসবের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকারর ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে চান, তাহলে আপনি অনতিবিলম্বে এতদসংক্রান্ত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করুন ।"

লেখক :চেয়ারম্যান, একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা সংসদ।