ছাদেকুল ইসলাম রুবেল, গাইবান্ধা : পরিচয়হীন ভিক্ষুক আইয়ুব পাগলার জন্য ভালোবাসার অনন্য নজির স্থাপন করলেন গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার বাসিন্দারা। আইয়ুব পাগলা আজ বেঁচে নেই, কিন্তু রেখে গেছেন অসংখ্য ভালোবাসার মানুষ। তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে পোস্টার ছাপানো হয়েছে। তার জন্য দোয়া কামনায় হাজারো মানুষকে দাওয়াত করে খাওয়ানো হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে আইয়ুব পাগলা বলতেন ‘একটা ট্যাকা দে, মুই ভাত খামো।’ তার জন্ম কোথায়? তার পরিচয় কি? কেউ বলতে পারেন না। জীবন যুদ্ধে পরাজিত সেই আইয়ুব পাগলা চলতি বছরের ২০ সেপ্টোবর বিকেলে মারা যান।

তবে তিনি রেখে গেছেন অসংখ্য ভালোবাসার মানুষ। আইয়ুবের মৃত্যুর খবরে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার ভরতখালী ইউনিয়নের হাজারো মানুষ মর্মাহত হয়। আইয়ুবকে উত্তরউল্ল্যা কেন্দ্রীয় গোরস্থানে দাফন করা হয়। আইয়ুবের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে কেউ কাফনের কাপড়, কেউ বাঁশ, কেউ আগরবাতি নিয়ে দাফনের জন্য এগিয়ে আসেন। মৃত্যুর পর মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে শোকবার্তার ব্যানার-পোস্টার বিভিন্ন স্থানে লাগানোর পাশাপাশি মানুষের ফেসবুকেও জায়গা করে নিয়েছে এই আইয়ুব পাগলা। আইয়ুব পাগলার জানাজার পর তার আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া অনুষ্ঠানের জন্য মজলিস করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এলাকার দানশীল ব্যক্তিদের অর্থায়নে ৪০ দিন পরে (৩০ অক্টোবর) শুক্রবার সকালে সাঘাটার ঐতিহ্যবাহী ভরতখালী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ব্যাপক পরিসরে ‘আইয়ুব-এর মজলিস’ সম্পন্ন হয়। মুসলিমদের পাশাপাশি হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনও ওই মজলিসে অংশগ্রহণ করেন। সেখানে মুসলমাদের জন্য তিনটি গরু ও একটি খাসি এবং হিন্দুদের জন্য দুটি খাসি আলাদা রান্না করা হয়েছিল। এই মজলিসের উদ্ধোধন করেন জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়া।

(এস/এসপি/অক্টোবর ৩০, ২০২০)