শেখ আহসানুল করিম, বাগেরহাট : দেশব্যাপী করোনা পরিস্থিতির কারনে সাত মাস বন্ধ থাকার পর ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সাইড (বিশ্ব ঐতিহ্য এলাকা) সুন্দরবন, বঙ্গবন্ধু সাপারী পার্ক, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানসহ বন বিভাগের সব জাতীয় উদ্যান প্রতিকবেশ পর্যটন বা ইকো ট্যুরিজমের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার পর আগামীকাল রবিবার (১ নভেম্বর) খুলে দেয়া হচ্ছে এসব ট্যুরিষ্ট স্পর্ট। সুন্দরবনসহ এসব ট্যুরিষ্ট স্পর্টে দেশী-বিদেশী পর্যটকরা বন বিভাগের নির্ধারিত ফি দিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন। প্রধান বন সংরক্ষক (সিসিএফ) মো. আমির হোসাইন চৌধুরী এতথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

বন বিভাগ জানায়, দেশব্যাপী করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে গত ১৯ মার্চ বিশ্ব ঐতিহ্য এলাকা সুন্দরবন, বঙ্গবন্ধু সাপারী পার্ক, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানসহ বন বিভাগের সব জাতীয় উদ্যান প্রতিকবেশ পর্যটন বা ইকো ট্যুরিজমের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করে বন মন্ত্রণালয়। ওই নির্দেশে বলা হয় পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত গোটা সুন্দরবনসহ এসব ট্যুরিষ্ট স্পর্টে নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে।

বর্তমানে দেশে করোনা পরিস্থিতি স্বভাবিক হওয়ায় গত ২৭ আক্টোবর বন মন্ত্রণালয়ে বৈঠকে বিশ্ব ঐতিহ্য এলাকা সুন্দরবন, বঙ্গবন্ধু সাপারী পার্ক, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানসহ বন বিভাগের সব জাতীয় উদ্যান প্রতিকবেশ পর্যটন বা ইকো ট্যুরিজমের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা এসব ট্যুরিষ্ট স্পর্টে সব ধরনের পর্যটন বা ইকো ট্যুরিজমের উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়েছে। এই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে আগামী ১ নভেম্বর থেকেই করোনা স্বাস্থ্যবিধি মেনে এসব ট্যুরিষ্ট স্পর্টে দেশী-বিদেশী পর্যটকরা প্রবেশ করতে পারবেন।

তবে, সুন্দরবনে কোন ট্যুর অপারেটরা তাদের লঞ্চে একসাথে সর্বোচ্চ ৫০ জনের বেশি পর্যটক বহন করতে পারবেন না। এক সাথে সুন্দরবনে নামতে পারবেন ২৫ জন পর্যটক। সুন্দরবনে ভ্রমনের সময় কোন প্রকার আগ্নেয়াস্ত্র-গোলাবারুদ, হরিণ শিকারের ফাঁদসহ মাইক-সাউন্ডবক্সসহ কোন ধারনে শব্দযন্ত্র সঙ্গে নেয়া যাবেনা। পর্যটক ও ট্যুর অপারেটরদের বনের বন্যপ্রানী ও গাছপালার কোন ধরনের ক্ষতি না করাসহ মানতে হবে বন বিভাগের পূর্বের সব নির্দেশনা।

ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব সুন্দরবনের সভাপতি মো. মইনুল ইসলাম জমাদ্দার বন মন্ত্রণালয়ের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, গত ১৯ মার্চ পুরো সুন্দরবনে পর্যটকদের যাতায়াত ও নৌযান চলাচল বন্ধ ঘোষণার পর সুন্দরবন কেন্দ্রীক ৭০টি ট্যুর অপারেটর কোম্পানির অর্ধশত লঞ্চ ও জাহাজের কয়েক হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রায় সাত মাস ধরে বেকার জীবন-যাপন করেছে । মাত্র তিন থেকে চার মাস সুন্দরবনের পর্যটন মৌসুম। এরপর সারা বছর বসে বসে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সেই টাকায় চলতে হয়।

সুন্দরবনের ৯টি পর্যটন এলাকায় পর্যটন মৌসুমে (নভেম্বর থেকে মার্চে) হাজার হাজার মানুষ ঘুরতে আসেন। করোনার কারনে পর্যটন বন্ধ থাকলে সুন্দরবন কেন্দ্রিক পর্যটন শিল্পে ধস নামে। করোনা স্বাস্থ্যবিধিসহ বন বিভাগের সব নির্দেশনা মেনে আমরা আজ রবিবার ভোর থেকে সুন্দরবনে দেশী-বিদেশী পর্যটকদের নিয়ে ৭০টি ট্যুর অপারেটর কোম্পানির অর্ধশত লঞ্চ ও জাহাজ সুন্দরবনে যাচ্ছে ।

(এসএকে/এসপি/অক্টোবর ৩০, ২০২০)