স্টাফ রিপোর্টার : প্রায় ৯ মাস ইয়েমেনের সানায় হুথি বিদ্রোহীদের হাতে আটক থাকা পাঁচ বাংলাদেশি নাবিক মুক্তি পেয়েছেন। ওমানের একটি জাহাজ কোম্পানিতে কর্মরত অবস্থায় আটক হন তারা। তাদের সঙ্গে ভারতীয় নাগরিকও আটক ছিলেন। তাদের সবাইকে এডেনে নিয়ে আসা হচ্ছে।

বুধবার (২ ডিসেম্বর) দুপুরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেয়া এক পোস্টে এই তথ্য জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।

এডেন থেকে তারা আন্তর্জাতিক শরণার্থী সংস্থার (আইওএম) সহায়তায় ভারত হয়ে বাংলাদেশে আসবেন বলে জানান তিনি।

প্রতিমন্ত্রী তার পোস্টে লিখেছেন, ‘ইয়েমেনের সানায় দীর্ঘদিন থেকে হুতিদের হাতে আটক হয়েছিলেন ওমানের একটি জাহাজ কোম্পানিতে কাজ করা বাংলাদেশি পাঁচ নাবিক। সাথে ভারতীয় নাগরিকও আটক ছিলেন।

৯ মাস ধরে আটক থাকার এক পর্যায়ে জাহাজ কোম্পানির মালিকের কাছ থেকে আংশিক মুক্তিপণ পাওয়ার পর তাদের মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে দেওয়া হয়। আটকদের মধ্যে একজন আমার সাথে প্রথম যোগাযোগ করেন প্রায় দুই মাস আগে।

আমাদের ওমান ও কুয়েত দূতাবাস এবং জিবুতিতে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাসের গত দুই মাসের প্রচেষ্টায় আগামীকাল তারা এডেনে আসবেন বলে আসা করা যাচ্ছে। সেখান থেকে তারা আন্তর্জাতিক শরণার্থী সংস্থার (IOM) সহায়তায় ভারত হয়ে বাংলাদেশে পৌঁছবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।’

প্রসঙ্গত, ৯ মাস ধরে পাঁচ বাংলাদেশিসহ ২০ নাবিক ইয়েমেনে বন্দি জীবন কাটাচ্ছিলেন। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে তারা সেখানে বন্দি। এদের মধ্যে একজন ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুর্শিদাবাদের একটি জাহাজের সহযোগী ক্রু। তিনি সেখানে বন্দি হওয়ার তিন মাস পর তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে সক্ষম হন।

হিরন শেখ সিদ্দিকি নামে ওই ভারতীয় ক্রুর স্বজনরা ভারতের রাজস্থানের ভারতপুরের তালগ্রামে বাস করেন। তিনি তার পরিবারের লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরই ওই নাগরিকদের বন্দি থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।

গত বছরের ডিসেম্বরে ব্যাঙ্গালুরুভিত্তিক একটি জাহাজ কোম্পানিতে যোগ দেন হিরন। ইয়েমেনে আটকা পড়া অবস্থায় চলতি বছরের মে মাসে তিনি বাড়ি ফোন করেন।

হিরন শেখ জানান, তিনি ছাড়াও বন্দিদের মধ্যে আরও ১৩ জন ভারতীয় নাবিক রয়েছেন। এছাড়া বাংলাদেশের পাঁচজন এবং মিসরের একজন নাবিকও তাদের সঙ্গে বন্দি জীবন-যাপন করছেন।

তারা গত ৩ ফেব্রুয়ারি ওমান থেকে সৌদি আরবের উদ্দেশে রওনা করেছিলেন। যাত্রা করার কিছুদিন পর খারাপ আবহাওয়ার কারণে তারা ইয়েমেন বন্দরে নোঙর ফেলতে বাধ্য হন। তখন যুদ্ধবিধ্বস্ত ইয়েমেনের সামগ্রিক পরিস্থিতির কথা তাদের মাথায় ছিল না।

গত ১২ ফেব্রুয়ারি ইয়েমেনের উপকূলরক্ষী বাহিনীর পরিচয়ে বেশ কয়েকজন ওই নাবিকদের বন্দি করে নিয়ে যায়। তাদের সেখান থেকে সানায় নিয়ে যাওয়া হয় এবং তখন থেকেই একটি হোটেলে বন্দি করে রাখা হয়। তাদের কাছ থেকে তাদের পাসপোর্ট এবং জাহাজের সব কাগজপত্র নিয়ে যাওয়া হয়।

(ওএস/এসপি/ডিসেম্বর ০২, ২০২০)