শামীম রেজা ডাফরুল, গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা) : গাইবান্ধার  গোবিন্দগঞ্জের রংপুর চিনিকলে আখ মাড়াই বন্ধ রাখার সরকারি সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে বৃহস্পতিবার মহিমাগঞ্জে স্বত:স্ফূর্ত অর্ধদিবস হরতাল পালিত হয়েছে। সকাল থেকে এখানকার ব্যাংক-বীমা, দোকাটপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। গোবিন্দগঞ্জ-মহিমাগঞ্জ সড়কের বিভিন্ন এলাকায় হরতাল সমর্থকরা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করায় গোবিন্দগঞ্জ মহিমাগঞ্জ সড়কে কোন প্রকার যানবাহন চলাচল করেনি। সকাল ১০টায় রংপুর চিনিকল এলাকা থেকে একটি শ্রমিক-কর্মচারী ও আখচাষীদের একটি বিক্ষোভ মিছিল মহিমাগঞ্জ বন্দরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বিক্ষোভকারীরা মহিমাগঞ্জ রেলস্টেশনে রেল লাইনের উপর বসে বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু করে। 

সমাবেশ চলাকালে সান্তাহার থেকে ছেড়ে আসা বুড়িমারীগামী ৭১৪নং আপ করতোয়া এক্সপ্রেস ট্রেনটিকে মহিমাগঞ্জ স্টেশনের প্লাটফরমে ঢোকার আগেই বিক্ষোভকারীরা আটকে দেয়। একই কারণে পার্শ্ববর্তী বোনারপাড়া স্টেশনে সান্তাহারগামী দোলনচাঁপা এক্সপ্রেস ট্রেনটিও আটকা পড়ে।

গোবিন্দগঞ্জের সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাজির হোসেন, গোবিন্দগঞ্জ থানার ওসি একেএম মেহেদী হাসান অতিরিক্ত পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কাজ করেন। এছাড়া হরতালের সময় মহিমাগঞ্জ রেলস্টেশনে রেলওয়ে পুলিশ ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য সতর্ক অবস্থায় দায়িত্ব পালন করে।

শ্রমিক-কর্মচারী ও আখচাষীরা রেলপথ অবরোধ করে সমাবেশ বক্তব্য রাখেন, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা ওয়ার্কার্স পাটির সভাপতি এমএ মতিন মোল্লা, রংপুর চিনিকল আখচাষী সমিতির সভাপতি জিন্নাত আলী প্রধান, শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি আবু সুফিয়ান সুজা, সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান দুলাল, সহ-সাধারণ সম্পাদক ফারুক হোসেন ফটু প্রমূখ। সমাবেশ শেষ হলে দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে ট্রেনটি মহিমাগঞ্জ স্টেশন ত্যাগ করে।

এদিকে মহিমাগঞ্জ স্টেশনে রেলপথ অবরুদ্ধ থাকায় পার্শ্ববর্তী বোনারপাড়া স্টেশনে সান্তাহারগামী আন্ত:নগর দোলনচাঁপা এক্সপ্রেস ট্রেনটিও এক ঘন্টা আটকে থাকে। বেলা একটার পর হরতাল কর্মসূচি শেষ করা হয়।

প্রসঙ্গত, গত শনিবার আখচাষি, শ্রমিক-কর্মচারী, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সূধী সমাজের যৌথ সংবাদ সম্মেলন থেকে এ হরতাল কর্মসূচি ঘোষনা করা হয়েছিল। চলতি আখ মাড়াই মৌসুম শুরুর পূর্ব মূহুর্তে এ চিনিকলে আখ মাড়াই বন্ধের আকস্মিক ঘোষণায় এ মাসের প্রথম থেকেই ব্যাপক বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে আসছেন শ্রমিক-কর্মচারী ও আখচাষিরা।

(এসআরডি/এসপি/ডিসেম্বর ২৪, ২০২০)