উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ ডেস্ক : শেখ মুজিবুর রহমান দলীয় অফিসে অনুষ্ঠিত সভায় গণ-বিরোধী চক্রান্তকারীদের যে কোন পদক্ষেপের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাসেবকদের সজাগ থাকার আহ্বান জানান। যে কোন উস্কানির মুখে সুশৃংখল থেকে বিগত নির্বাচনের সময়ের মত ঐতিহ্য বজায় রাখতে বলেন। তিনি তাদেরকে জনগণ বিরক্ত হয় এমন কাজ না করতে উপদেশ দেন। তিনি বলেন, জনগণ আওয়ামী লীগের কর্মসূচির প্রতি যে রায় দিয়েছে বিশ্ব ইতিহাসে তা বিরল।

অতএব দলীয় কর্মীদের সদা সতর্ক থাকতে হবে। আত্মরক্ষার্থে আপনারা লাঠি তৈরি রাখুন, তবে হাই কমান্ডের অনুমতি ছাড়া আপনারা লাঠির ব্যবহার করতে পারবেন না। সহ্যের সব সীমা অতিক্রম হলে সঠিক নির্দেশ দেওয়া হবে। সভায় দলের সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম ও সম্পাদক জনাব তাজউদ্দিন আহমদও বক্তৃতা করেন।

প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান রাওয়ালপিন্ডিতে বলেন, শীঘ্রই তিনি আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে এক বেঠকে মিলিত হবেন। ইসলামাবাদ বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, কানাডার প্রধানমন্ত্রী পিয়েরে ট্রুডো ও বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হীতের পাকিস্তান সফরের পরেই শেখ মুজিবের সাথে বেঠক অনুষ্ঠিত হবে। প্রেসিডেন্ট ইতিমধ্যেই পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান ভুট্টোর সাথে বৈঠকে মিলিত হয়েছেন।

কানাডার প্রধানমন্ত্রী পিয়েরে ট্রুডো চারদিনব্যাপী পাকিস্তান সফরের উদ্দেশে অপরাহ্নে রাওয়ালপিন্ডি এসে পৌঁছেন। বিমানবন্দরে প্রেসিডেন্ট জেনারেল আগা মোহাম্মদ ইয়াহিয়া খান তাঁকে সম্বর্ধনা জ্ঞাপন করেন। এরপর প্রেসিডেন্ট পাকিস্তান সেনাবাহিনীর চীফ অব জেনারেল স্টাফ আবদুল হামিদ খান, পাকিস্তান বিমান বাহিনী ও নৌবাহিনীর প্রতিনিধিদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন। বিমানবন্দরে এক বিবৃতিতে কানাডীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া ও পাকিস্তানী অফিসারদের সাথে দ্বি-স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বহু বিষয়ে মতামত বিনিময়ে তিনি আশা রাখেন। তিনি বলেন, পাকিস্তান ও কানাডার মধ্যে দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব সম্পর্ক রয়েছে। উভয় দেশই কলম্বো পরিকল্পনা ও কমনওয়েলথভুক্ত রয়েছে। আগামীকাল তিনি ইয়াহিয়ার সাথে আনুষ্ঠানিকভাবে বৈঠকে মিলিত হবেন।

পাকিস্তানস্থ হাঙ্গেরীয় দূতাবাসের বাণিজ্যিক উপদেষ্টা পি. ইগারভেরী বানিজ্য সম্প্রসারণের সম্ভাবনা পরীক্ষা করার উদ্দেশ্যে বর্তমানে ঢাকা সফর করছেন। রাতে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল-এ তাঁকে সম্বর্ধনা জানানো হয়। বেগম ও জনাব এ.সালাম আয়োজিত উক্ত অনুষ্ঠানে নেতৃস্থানীয় ব্যবসায়ী, কূটনৈতিক মিশনসমুহের সদস্যবর্গ, শিল্পপতি এবং শহরের বিশিষ্ট নাগরিকবৃন্দ যোগদান করেন।

পূর্ব পাকিস্তান রেলওয়ের প্রায় ১৮ হাজার শ্রমিক ও কর্মচারি তাদের ১৯ দফা দাবী আদায়ের জন্য ‘ইপরেল’ পাহাড়তলী শাখা ও ওপেন লাইন শাখার উদ্যোগে ভোর ছয়টা হতে ধর্মঘট শুরু করেছে। উল্লেখ্য, তাদের ১৯ দফার মধ্যে বন্যা-বাবদ দুই মাসের অগ্রিম বেতনের দাবীও রয়েছে।

তথ্যসূত্র: মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর

(ওএস/এএস/জানুয়ারি ০৬, ২০২১)